রাজনীতি

নির্ধারিত সময়ে সংস্কার কমিশনের কাজ শেষ করে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবীতে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের গণ-সমাবেশ

গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের উদ্যোগে ৩০ অক্টোবর ২০২৪ বুধবার সকাল ১০:৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নির্ধারিত সময়ে সংস্কার কমিশনের কাজ শেষ করে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবীতে গণ—সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)’র মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)’র সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হারুন চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ডাঃ সামছুল আলম ও সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আমরুল প্রামাণিক প্রমুখ।

গণ—সমাবেশে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের পক্ষ থেকে ছাত্র—জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্রুত করনীয় ১১টি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো— (১) অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনির্দিষ্ট কালের জন্য নয়। সংস্কারের নামে অযৌক্তিক কালক্ষেপণ না করে সংস্কার কমিশনের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। (২) জন আকাঙ্ক্ষার সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজের বাস্তবতার বিস্তর ফারাক। সংস্কার কাজের পর্যালোচনা করে যোগ্যতার বিচারে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করে, কাজের গতি বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে নতুন যোগ্য উপদেষ্টা নিয়োগ দিতে হবে। (৩) স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে অংশীজন সকল রাজনৈতিক দল ছাত্র শিক্ষক পেশাজীবি কৃষক শ্রমিক সুশীল সমাজের প্রতিনিদিদের সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোন অবস্থায় যেন দুরত্ব তৈরী না হয় সেদিকে সকল পক্ষের সতর্ক থাকতে হবে। (৪) দেশে এখনো একটা বৈরী অস্থিতিশীল গুমোট পরিস্থিতি চলছে। যে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, সেই জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারলেই পতিত স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। পতিত স্বৈরাচারের নানামুখী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় করতে হবে। (৫) সংস্কার একটি প্রবাহমান ধারা। স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সহ ৬৩ রাজনৈতিক দল ও জোটের ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার  সংস্কার কাজ নির্বাচন পরবর্তী নির্বাচিত সরকার কে করতে হবে। (৬) মিথ্যাচারের জন্য রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। কোন ধরনের হটকারিতা করে নতুন সাংবিধানিক সংকট তৈরী না করে, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরী। (৭) স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার সহযোগী সবার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে আদালতে মামলা যেনো জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়। অপরাধীরা যেনো আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে। (৮) সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ততায় সুযোগ সন্ধানীরা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে। সাধারণ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। (৯) দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সিন্ডিকেট চাঁদাবাজি সাধারণ জনগণ আর শুনতে চায় না। নিত্যপণ্য ক্রয় ক্ষমতায় আনতে যা যা করনীয় করতে হবে। সারাদেশে ন্যায্যমূল্যে টিসিবি পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে। নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে। (১০) শ্রমিক অসন্তোষ চিহ্নিত করে শিল্পাঞ্চলে মালিক শ্রমিক সকলের কাজের স্থান নিরাপদ করতে হবে। কেউ যেন অন্যায়ের শিকার না হয়, কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না। (১১) বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক। তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি ঋণ মওকুফ করে নতুন করে কৃষি ঋণ দিতে হবে। সার বীজ কীটনাশক কৃষি যন্ত্রপাতি বিনা মূল্যে দিতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button