Uncategorized

একই সাথে দুটি বিভাগের পরিচালক পদ দখলকরা অসংখ্য দুর্নীতির সুপার পাওয়ার খ্যাত বিআইডব্লিউটিএ’র আরিফ উদ্দিন দিনের দুর্নীতির হালচাল

বিশেষ প্রতিনিধি: আওয়ামী সরকারের প্রভাব খাটিয়ে বিআইডব্লিউটিএতে দীর্ঘদিন ধরে রাজত্ব করে চলেছেন বন্দর ও পরিবহন বিভাগের পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন। স্বৈরাচার সরকারের পতন হলেও খোলস পাল্টে নিজেকে বিএনপিপন্থী দাবি করা আরিফ উদ্দিন রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিগত সরকারের সময়ে সুবিধাভোগী ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যেখানে বিভিন্নভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হচ্ছে সেখানে আরিফ উদ্দিন প্রমোশন পেয়ে অতিরিক্ত পরিচালক থেকে হলেন পরিচালক তাও আবার জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয় জুনিয়র হয়ে ও তিনি পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়ে যান, যা আরিফের সুপার পাওয়ারের বহি:প্রকাশ। তিনি একই সাথে বন্দর ও পরিবহন বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এবং স্টেট ও আইন বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আরিফ উদ্দিন ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে হয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ এর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক। আরিফ উদ্দিনের দুর্নীতির হাত এতটাই প্রশস্থ যে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়েও সে সুকৌশলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে সমঝোতা করে ফেলার ক্ষমতা রাখেন যে কারণে একাধিক পত্রপত্রিকায় আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হওয়া সত্বেও তার বিরুদ্ধে শক্ত কোন আইনানুগ ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। আরিফুদ্দিনের দুর্নীতিতে প্রশ্নবিদ্ধ বিআইডব্লিউ টি এর বন্দর ও পরিবহন বিভাগের কার্যক্রম। আরিফের দুর্নীতির সবথেকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো জোরপূর্বক উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সকে নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জে শিপ ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া। তদন্তে জানা যায় উচ্ছেদকালীন সময়ে উক্ত স্থানে থাকা বেশিরভাগ ডক ইয়ার্ড মালিকদের ডিসি আর লাইসেন্স ছিল, যেখানে ডিসি অফিস থেকে তাদের বরাদ্দ পত্র ছিল। কিন্তু কোন কিছু তোয়াক্কা না করে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করেন আরিফ। খোদ বিআইডব্লিউটিএ এর ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সুপারিশকৃত ২৯১ শতাংশ ফোরসরের জায়গা ৬৬৭ শতাংশ বানিয়ে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সকে নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষা নদীর তীরবর্তী অংশে খানিকটা নদীর অংশ ভরাট করে শিপইয়ার্ড নির্মাণ করার সুযোগ তৈরি করে দেন আরিফ উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যে সকল মানুষের ডি সিআর ছিল তাদের ডিসি অফিস থেকে বরাদ্দকৃত সম্ভাব্য জায়গার পরিমাণ ছিল হুমায়ুন এবং এজাজুল জালালের ১২০ শতাংশ, জননী ডক ইয়ার্ডের বিল্লালের ৬০ শতাংশ, জহির মুন্সির ৪০ শতাংশ, মাহফুজুলের ১২২ শতাংশ, স্বপনের ৫০ শতাংশ আল আমিনের ৪৫ শতাংশ মুরাদ এর ৬০ শতাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী জানান তাদের একজনের বিআইডব্লিউটিএ’র ২০১৫ সাল পর্যন্ত বরাদ্দকৃত জায়গার লাইসেন্স ছিল। কিন্তু কয়েকবার আবেদন করেও ২০১৬ সালে লাইসেন্স রিনিউ করাতে পারেননি। ভুক্তভোগীদের প্রশ্ন কোনরকম বিনা নোটিশে কোনরকম কারোন দর্শানো ছাড়া তার লাইসেন্স বাতিল না করে কিভাবে আরেকজনকে বিআইডব্লিউটিএ বরাদ্দ দিতে পারে? যে বিষয়টি নিয়ে লাইসেন্সধারী ভুক্তভোগী একটি রিটও করেন। পরবর্তীতে এই আরিফ উদ্দিনের সহযোগিতায় ভুক্তভোগী ও কর্ণফুলী শিপবিল্ডারসের মধ্যে ৩৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সমঝোতা চুক্তি হয়। যেখানে সব থেকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন আরিফ উদ্দিন এবং ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন স্থানীয় কিছু ব্যক্তিবর্গ কে। উল্লেখ্য কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সকে উক্ত বরাদ্দ কার্যক্রমে আরিফ উদ্দিনের সাথে বিশেষ সহযোগী ছিলেন মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ও রেজাউল করিম। ডিসি অফিসের বরাদ্দ কে তোয়াক্কা না করে পরিচালনা করা উচ্ছেদ অভিযান কতটা বৈধতা পাওয়ার যোগ্য সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়ে যায় সকলের মনে। এ বিষয়ে আরিফ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান সবকিছু নিয়ম মেনে তিনি পরিচালনা করেছেন। এ বিষয়টি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে সরেজমিনে পরিদর্শন ও পরিমাপের মাধ্যমে তদন্ত করার জন্য এলাকার সাধারণ মানুষ ও ভুক্তভোগীদের সময়ের দাবি। আরো বিস্তারিত পরবর্তী সংখ্যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button