দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে নেমে চীনে ২০০টিরও বেশি নতুন কারাগার তৈরি করেছেন জিনপিং
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণাকে সমর্থন করার জন্য সারা দেশে ২০০ টিরও বেশি বিশেষ কারাগার তৈরি করা হয়েছে। এই কারাগারগুলো ‘লিউঝি’ কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। চীন সরকারের নিদান অনুযায়ী, অন্তত ছ’মাস সেখানে তাদের বন্দি করে রাখা যাবে বিনা বাধায়। এই সময়ের মধ্যে তারা কোনও আইনি সাহায্য পাবেন না। এমনকি দেখা করতে পারবেন না পরিবারের সঙ্গেও। স্রেফ সন্দেহের বশেই আটক করা যাবে অভিযুক্তদের। ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রেসিডেন্ট শি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, কমিউনিস্ট পার্টি এবং সামরিক বাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছেন। এখন তার তৃতীয় মেয়াদে দুর্নীতি বিরোধী ক্রুসেড তার নেতৃত্বের একটি বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে, দলীয় লাইনের বাইরে পাবলিক প্রতিষ্ঠানেও তা প্রসারিত হয়েছে। চীনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এতদিন ‘শুয়াংগুই সিস্টেম’ চালু ছিল। দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের সেখানে বন্দি করা হতো। অত্যাচার এবং হেনস্থার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচিত হয়ে আসছে সেই ব্যবস্থা। ‘লিউঝি সেন্টার’-এর মাধ্যমে তাকেই আবার নতুন রূপে ফিরিয়েছেন জিনপিং।
দুর্নীতিদমন অভিযানে শাসকদলের কর্তাব্যক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কাউকেই রেয়াত করবেন না জিনপিং। এমনকি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলেও তাদের নিয়ে আসা হবে এই বিশেষ কারাগারে।
জিনপিংয়ের এই ‘লিউঝি সেন্টার’গুলোর নানা বিশেষত্ব রয়েছে। বন্দি অবস্থায় কেউ যাতে নিজেকে আঘাত করতে না পারেন, তার জন্য দেয়ালে লাগানো আছে নরম গদি। ছ’মাস পর ‘লিউঝি সেন্টার’ থেকে বেরিয়ে এক জন দাবি করেছিলেন, তাকে প্রতি দিন ১৮ ঘণ্টা সোজা হয়ে বসিয়ে রাখা হত, ঘুমোনোর অবকাশও দেওয়া হত না। এমনই নানা ধরনের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে জিনপিংয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ২০১৭ এবং নভেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে, ২১৮টিরও বেশি লিউঝি কেন্দ্র তৈরি বা সম্প্রসারিত করা হয়েছিল, যার নির্মাণ ত্বরান্বিত হয়েছিল মহামারী পরবর্তী সময়ে। যদিও সমালোচকরা সতর্ক করেছেন যে স্থানীয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলো তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে, ঘুষ নেয়ার জন্য মিথ্যা অভিযোগে ব্যবসায়ীদের আটক করতে পারে।
সূত্র : এনডিটিভি