আঃ লীগ ট্যাগ দিয়ে জামায়াত কর্মীকে গ্রেফতার করে ৭ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিলেন আশুলিয়া থানার ওসি

অপরাধ বিচিত্রা : ৫ ই আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রজনতা হত্যা মামলায় মোঃ ইমন বেপারী( জাহিদ) নামের এক জামায়াত কর্মীকে আওয়ামী লীগ নেতা ট্যাগ দিয়ে গ্রেফতার করে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা লকাপে রেখে জামায়াত নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের তোপের মুখে পরে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আশুলিয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মুহাম্মদ সোহরাব আল হোসাইনের বিরুদ্ধে।
জামায়াত কর্মী মোঃ ইমন বেপারী(জাহিদ) ঢাকা জেলা আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়নের বড় নগর তেলিপাড়া গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে।
২৫/০৪/২৫ ইং তারিখ শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হলে ইমন বেপারী (জাহিদ)কে গ্রেফতার করেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক
(এস আই) হারুন অর রসিদ এসময় পুলিশের সাথে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা উত্তর যুবদলের সাবেক নেতা জাহাঙ্গির আলম মন্ডল। প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান গ্রেফতারের সময় যুবদলের সাবেক নেতা জাহাঙ্গির আলম মন্ডল বার বার এস আই হারুনকে নির্দেশ দিচ্ছিলেন ইমন বেপারী কে গ্রেফতার করে হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তোলার জন্য।
কেনো জাহাঙ্গির মন্ডল ইমনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিলেন এমন প্রশ্নে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান যুবদল নেতা জাহাঙ্গির মণ্ডলের সাথে বিগত দিনে মসজিদের জায়গাজমি নিয়ে বিরোধ ছিল ইমন বেপারীর সাথে। তাই তিনি পুলিশকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা হত্যা মামলায় নাম ঢুকিয়ে ইমনকে গ্রেফতার করিয়েছেন। তা না হলে জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মীকে বিএনপি নেতার নির্দেশে জনসম্মুখে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ থানায় নিয়ে যেতে পারেন না।
জানা যায় জামায়াতকর্মী ইমন বেপারী (জাহিদ) কে গ্রেফতারের পর আশুলিয়া থানার লকাপে আটকে রাখেন আনুমানিক ৭ ঘণ্টা। আটকের খবর জানাজানি হলে দফায় দফায় থানায় হাজির হন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। জামায়াতকর্মীকে আটকের ঘটনার বিষয় জানতে সংবাদকর্মীরাও উপস্থিত হন থানায়। তাত ক্ষণিক আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সোহরাব আল হোসাইনের কাছে জামায়াতকর্মী ইমন বেপারীকে গ্রেফতারের বিষয়ে সংবাদকর্মীরা জানতে চাইলে তিনি ইমন বেপারীকে আওয়ামী লীগ নেতা বলে ইমনের ছবিযুক্ত আওয়ামী লীগের একটি শুভেচ্ছা পোস্টারের ছবি দেখান সংবাদকর্মীদের। যা কিনা একটি এন্ড্রয়েট মোবাইল ফোন দিয়ে মুহূর্তে কয়েকশত বানানো সম্ভব । এই পোস্টারের কতটুকু ভিত্তি আছে এবং এমন পোস্টার দেখেই কাউকে গ্রেফতার করা যায় কি না জানতে চাইলে এখন যাচাই-বাছাই করা হবে বলে জানান তিনি । তবে এর কিছুক্ষণ পরেই জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পরে ছেড়ে দেন ইমন বেপারীকে এমনটাই নেতাকর্মীরা।
ছাড়া পাওয়ার পরে ইমন বেপারীর সাথে কথা বললে অপরাধ বিচিত্রাকে জানান,তিনি বিগত দিনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন বিগত সৈরাশাসক সরকারের আমলে একাধিক মিটিং মিছিলে যোগ দিয়েছেন হয়েছেন হামলা মামলার শিকার। তবে এখন জামায়াতের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করছেন বলে জানান। যার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মুকুল হোসেন। বিগত দিনে তার বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন শিমুলিয়া ইউনিয়নের যুবদলের একজন নেতা মাসুদ পারভেজ।
যুবদলের সাবেক নেতার নির্দেশে জামায়াতকর্মীকে গ্রেফতারের বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) হারুন অর- রশীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইমন বেপারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। আর জাহাঙ্গির মন্ডল আমার পূর্বের পরিচিত তিনি সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন তাই আমাকে দেখে দাঁড়িয়েছিলেন। একজন লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য হাতকড়া পরিয়ে থানায় ৬ -৭ ঘণ্টা আটকে রাখা যায় কি না জানতে চাইলে এস হারুন বলেন আমি এতকিছুর উত্তর দিতে পারবো না আপনি ওসি স্যারকে জিজ্ঞাসা করেন। আমি যা করেছি ওসি স্যারের নির্দেশে করেছি।
এবিষয়ে আবারও আশুলিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ সোহরাব আল- হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন জামায়াত নেতা গ্রেফতার করিনি ইমন বেপারী নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তার নাম ঠিকানা ভুল থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইমন বেপারীর ছবি যুক্ত পোস্টারের কথা জিজ্ঞেস করা হলে সেটি এডিট করা ছিল বলে জানান তিনি।
ঘটনার বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাভার সার্কেল অবগত কি না জানতে তাহাদের অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলে কেহই কল রিসিভ করেননি।
জামায়াতকর্মী গ্রেফতারের ঘটনার সাথে সাবেক যুবদল নেতা জাহাঙ্গির আলম মণ্ডলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল করলে তিনিও কল রিসিভ করেননি।