আন্তর্জাতিকরাজনীতি

বাশার আল–আসাদের জবাবদিহি চান বাইডেন

সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদকে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাশারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়াকে দেশটির রাজনৈতিক উত্থান হিসেবে উল্লেখ করে বাইডেন একে দেশ পুনর্গঠনের জন্য সিরীয় নাগরিকদের ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

গতকাল রোববার বাইডেন এক বক্তব্যে এ কথা বলেন।

সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোট আসাদ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া।

তবে বাইডেন সতর্ক করে বলেন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর উত্থানের বিরুদ্ধে সজাগ থাকবে ওয়াশিংটন। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যদের বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনী নতুন করে হামলা চালিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

হোয়াইট হাউসে দেওয়া ওই বক্তব্যে বাইডেন বলেন, সরকার পতনের (সিরিয়ায়) ঘটনাটি ন্যায়বিচারের মৌলিক ফল। সিরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে থাকা জনগণের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক সুযোগের মুহূর্ত।

সাংবাদিকেরা বাইডেনের কাছে জানতে চান, মস্কোতে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের পরিণতি কী হওয়া উচিত?

জবাবে বাইডেন বলেন, ‘আসাদকে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।’

আগামী মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরপর রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন।

গতকাল বাইডেন বলেন, পুনর্গঠনের কাজে সিরীয় নাগরিকদের সহযোগিতা করবে ওয়াশিংটন।

বাইডেন আরও বলেন, ‘আসাদ সরকারকে দূরে ঠেলে স্বাধীনতার দিকে রূপান্তরের এ মুহূর্ত প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে সব সিরীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব।’

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট মনে করেন, বিজয়ী বিদ্রোহী জোটের মধ্যে থাকা কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণ, যে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, তাদের কয়েকটির নিজেদেরই সন্ত্রাসবাদ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ ইতিহাস আছে।

ইসলামপন্থী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গোষ্ঠী আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের বেশি সময়ের শাসনকে চ্যালেঞ্জ করার দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে বাশারের পালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাটি দেওয়া হয়। গতকাল বিদ্রোহীরা দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার এবং প্রেসিডেন্ট আসাদের পালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর দেশজুড়ে উদ্‌যাপন শুরু হয়। আসাদের বিলাসবহুল বাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

ক্রেমলিনের একটি সূত্র রুশ বার্তা সংস্থাগুলোকে বলেছে, আসাদ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা মস্কোতে আছেন।

সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর প্রায় ৯০০ সেনা ও ইরাকে ২ হাজার ৫০০ সেনা রয়েছেন। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে মোকাবিলার অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে এ দুই দেশে মার্কিন সেনারা মোতায়েন রয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button