অভিযুক্ত পুলিশ তদন্তে রেহাই পাচ্ছে বেড়েই চলছে পুলিশের অপরাধ প্রবণতা

0
1234

পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত পুলিশই করছে। এ তদন্তে কতটুকু স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা রয়েছে তা স্পষ্ট। এ পর্যন্ত যতগুলো অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে হয়েছে তার তদন্তে প্রমাণ মিললেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগীরা ভয়ে থানায় মামলা করছে না। কারন থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে থানা পুলিশ কেমন আচরন করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একে তো থানায় অভিযোগ গ্রহণ করে না। তারপর অভিযোগকারীকে অনেক ক্ষেত্রে মামলায় জড়িয়ে দিয়ে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখানো হয়। আদালতে মামলা করলেও ভুক্তভোগী একই হয়রানির শিকার হন। কারন আদালত থানাকে তদন্ত করতে বলেন। তদন্তের সময় পুলিশ ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে নিয়ে আপোষ করতে বাধ্য করে রেহাই পেয়ে যায়। ভুক্তভোগীরা বলেন অপরাধী পুলিশের বাড়ি যদি গোপালগঞ্জ হয় তবে তো আতংকের বিষয়। গত ৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে আটক করে মাদকসেবী সাজিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখায় পুলিশ। এমন ঘটনা সাজিয়ে টাকা আদায়ের জন্য তার ওপর নির্যাতন চালায় মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ শিকদার। বিভাগীয় তদন্তে মাসুদ শিকদারের বিরুদ্ধে রাব্বীকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাওয়ার প্রমাণ মেলে। মাসুদ শিকদার বর্তমানে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় কর্মরত আছেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি মিরপুর গুদারাঘাট এলাকায় এক চা বিক্রেতা বাবুলের কাছে টাকা চেয়ে টাকা না পেয়ে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনার পর বাবুল হাসপাতালে মারা গেলেও বাবুলের আতœীয় পুলিশের বিরুদ্ধে ভয়ে মামলা করতে পারেনি। গত ১৫ জানুয়ারি ভোরে ডিএসসিসির পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র মন্ডলকে গুরুতর আঘাত করে যত্রাবাড়ী থানার এসআই আরশাদ হোসেন আকাশ, এএসআই নূরে আলম, কনস্টেবল শহিদ ও লিয়াকত। এ ঘটনার পর বিকাশ ও তার পরিবার থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেনি ভয়ভীতির কারনে। গত ১১ মার্চ খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়ায় ডিশ বিল চাওয়ায় আল আমিনকে গুলি করে বংশাল থানার এএসআই শামীম রেজা। গত ১১ মার্চ রাতে বংশালে আলুবাজার এলাকায় ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে বনানী থানার এসআই আশরাফ ইসলাম ও সোর্স আবদুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরাধী এসব পুলিশদের বিরুদ্ধে তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মিললেও একে একে সবাই রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। কারন থানা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেয় না। আদালতে গেলেও পুলিশকেই তদন্তের ভার দেয়া হয়। তদন্তের ভার পেয়ে পুলিশ অভিযোগকারীকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে নিতে বা সমঝোতায় বাধ্য করে। ফলে বড় ধরনের অপরাধ করেও পুলিশ পার পেয়ে যাচ্ছে। পুলিশের ক্রমবর্ধমান অপরাধ প্রবণতায় বিঘিœত হচ্ছে জন নিরাপত্তা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × 3 =