বরগুনায় বোরো ধানের বীজের কৃত্রিম সঙ্কট চলছে। কৃষকরা বাজারে ব্রিধান-৪৭ জাতের বীজ ধান পাচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী এ জাতের বীজ ধান না পাওয়ায় কৃষক দিশেহারা। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃপক্ষের সাথে ডিলাররা সিন্ডিকেট করে বীজের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছে। এতে কৃষকদের বাজার থেকে তিনগুণ মূল্যে
বীজ ধান কিনতে হচ্ছে। বীজ ধান না পেয়ে কৃষকরা খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। : জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাজারে বোরো ধানের বিনা-১৪, ব্রিধান-২৮, ব্রিধান-২৯, ব্রিধান-৫০, ব্রিধান-৪৭ (ভিত্তি) ও ব্রিধান-৪৭ (মান ঘোষিত) ছয় জাতের ধানের বীজ রয়েছে। এর মধ্যে ব্রিধান-৪৭ (ভিত্তি) জাতের ধানের চাহিদা বেশি। এ জাতের ধানের বীজে ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকদের এ বীজের প্রতি ঝোঁক বেশি। : এদিকে পটুয়াখালী বিএডিসি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমতলীতে বিভিন্ন জাতের ৪.২ মেট্রিক টন বোরো বীজ ধান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ব্রিধান-৪৭ ধান ১.৩ মেট্রিক টন। এ উপজেলায় বিএডিসির নিয়োগকৃত ১১ জন ডিলার রয়েছে। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিনা-১৪, ব্রিধান-৪৭ ও ব্রিধান-২৮ জাতের ধানের বীজের দাম ৫০ টাকা কেজি দরে ১০ কেজির এক বস্তা ধানের মূল্য ৫০০ টাকা। এ দামে কৃষকদের কাছে বীজ ধান বিক্রি করার কথা থাকলেও ডিলাররা ভ্যাট, পরিবহন ও লেবার খরচ দেখিয়ে ওই বীজ ধান বেশি টাকায় বিক্রি করছে। : কৃষকরা অভিযোগ করেন, ডিলার ও বিএডিসি কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট করে বাজারে বীজ ধানের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে তিনগুণ বেশি মূল্যে বিক্রি করছে। এদিকে বাজারে বিএডিসির একই মানের সোনালী সীড ফার্মা ও সাউথ এশিয়ান সীডস কোম্পানীর ব্রিধান-৪৭ জাতের ১১৫০ টাকার ধান ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। : আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল সড়কের মেসার্স হাওলাদার ট্রেডার্স, হাসপাতাল সড়কের মেসার্স ইউনুস এন্ড সন্স, গাজী বীজ ভান্ডার ও সোনালী বীজ ভান্ডার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রিধান-৪৭ (ভিত্তি) ও ব্রিধান-৪৭ (মান ঘোষিত) জাতের ১০ কেজির এক বস্তা ৫০০ টাকার বীজ ধান ১২৫০ টাকায় বিক্রি করছে। সোনালী বীজ ভান্ডারে সাউথ এশিয়ান সীডস কোম্পানীর মালিক মোঃ মামুন ব্রিধান-৪৭ জাতের ১১৫০ টাকার ১০ কেজির এক বস্তা ধান ১৫০০ টাকায় বিক্রি করছে। : পশ্চিম চিলা গ্রামের বঙ্কিম হাওলাদার, সুনীল হাওলাদার, দিলিপ বাইন, হাবিবুর রহমান, মন্নাফ জানান, বাজারে ব্রিধান-৪৭ পাওয়া যাচ্ছে না। : পশ্চিম চিলা গ্রামের আলাউদ্দিন, আবুল হোসেন ও ভুবন বাইন জানান, ১০ কেজির এক বস্তা ধান ১২০০ টাকায় ক্রয় করেছি। : সোনালী বীজ ভান্ডারের মালিক মোঃ মামুন বলেন, সাউথ এশিয়ান সীডস কোম্পানীর ব্রিধান-৪৭ জাতের ধানের বীজ বেশি দামে ক্রয় করায় ১৫০০ টাকায় বিক্রি করছি। : পটুয়াখালী বিএডিসি উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, আমতলীতে ৪.২ মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের বোরোর বীজ ধান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বীজ বিক্রির খবর পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বীজ ধান বিক্রি করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যবস্থা নেবেন। : আমতলী কৃষি অফিসার এসএম বদরুল আলম বলেন, বেশি মূল্যে বীজ ধান বিক্রি করার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছি। : এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সার-বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বীজ বিক্রির অভিযোগে পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।