ফেরি করে খাবার বিক্রি হাসপাতালের ওয়ার্ডে

0
726

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কাটা নারকেল বিক্রি করতে এসেছেন এক ফেরিওয়ালা। ছবিটি সম্প্রতি তোলা l প্রথম আলোঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। আয়েশি ভঙ্গিতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়ায় কুকুরের দল। ওয়ার্ডের ভেতরে বিক্রি হয়

খোলা খাবার। প্রায় প্রতিদিনই খোয়া যায় রোগী ও স্বজনদের টাকা, মুঠোফোনসহ দামি জিনিসপত্র। হাসপাতালটিতে বছরের পর বছর এমন পরিবেশে চিকিৎসা চলছে। ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে সব সময় শয্যার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি রোগী ভর্তি থাকে। এ জন্য রোগীদের শয্যা-সংকট লেগেই থাকে। রোগীদের হাসপাতালের মেঝেতে ও বারান্দায় বিছানা পেতে থাকতে দেওয়া হয়। হাসপাতালে প্রায়ই দেখা যায়, বারান্দায় শুয়ে থাকা রোগীদের গা ঘেঁষে কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। দেখা যায়, যে ট্রলিতে করে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেই ট্রলির নিচ দিয়ে একটি কুকুরও হেঁটে যাচ্ছে। কেউ কুকুর নিয়ে মাথা ঘামায় না। ২৪ ডিসেম্বর সরেজমিনে শিশু ওয়ার্ড ও ওয়ার্ডের সামনে দেখা যায়, আশপাশে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের মল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। মলের পাশে ঘোরাফেরা করছে কুকুর। কুকুরগুলো মল মুখে নিয়ে ঢুকে পড়ছে ওয়ার্ডের ভেতর। সে সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগীর স্বজন বলেন, সারাটা দিন কুকুরের দল ওয়ার্ডের ভেতরে দৌড়াদৌড়ি করে। রাতের বেলায় কুকুরগুলো বিছানার নিচে আশ্রয় নেয়। তাঁর ভাইয়ের মেয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি। শিশু বিভাগের ডায়রিয়া ওয়ার্ড ও সার্জারি ওয়ার্ডের বিছানার নিচে কুকুরের অবাধ বিচরণের সত্যতা পাওয়া গেল। সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা হরিপুর উপজেলার জামুন গ্রামের রহমত আলীর স্বজন হাসিনুর রহমান বলেন, কুকুরগুলো বাইরের রক্ত-পুঁজভরা গজ ব্যান্ডেজ, অস্ত্রোপচার করে কেটে ফেলা অঙ্গ ও ডায়রিয়া রোগীর সংক্রমিত কাপড়চোপড় ফেলার জায়গা থেকে এসে বিভিন্ন ওয়ার্ডের অস্ত্রোপচার করা রোগীদের বিছানার পাশে ঘুরে বেড়ায়। এতে অন্য রোগীরাও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। ২৬ ডিসেম্বর শিশু বিভাগের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ভেতরে দেখা গেল এক ফেরিওয়ালা কাটা নারকেল বিক্রি করছেন। রোগীর স্বজনেরা বিছানায় বসে তা কিনে নিচ্ছেন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শামীম আরা নাজনীন বলেন, ‘ইচ্ছা থাকার পরও জনবল-সংকটের কারণে আমরা ভালোভাবে নজরদারি করতে পারছি না। জনবল পেলেই এসব সমস্যা দূর হয়ে যাবে।’ সিভিল সার্জন আবু মো. খয়রুল কবীর বলেন, হাসপাতালে এসব সমস্যা তাঁর নজরে আছে। হাসপাতালে সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve − nine =