নারীদের হয়রানি করার প্রতিবাদে ভারতে বিক্ষোভ বাড়ছে। ভিন্ন ধর্মের ছেলে ও মেয়ের পরিচয় ও বন্ধুত্ব হতেই পারে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অন্যদের এ কথা জানালে সমস্যা কী? বাদ সেধেছে উগ্র মানসিকতা। অনেকেই খেপে গেল, হিন্দু মেয়ের সঙ্গে মুসলিম ছেলের সখ্য কেন? চলল
কানাঘুষা, তিরস্কার। এমনকি মেয়েটির বাড়ি বয়ে অপমান, হুঁশিয়ারি। মেয়েটিও জবাব দিল—যাহ্, এ জীবনটাই আর রাখব না! আত্মহননে উগ্রবাদী সমাজের চোখে ঘা দেওয়া এই মেয়ের বাড়ি ভারতের কর্ণাটকে। দক্ষিণের এই রাজ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা জেলা চিক্কামাগালুরুতে গত শনিবার এ ঘটনা ঘটে। বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ২০ বছর বয়সী ওই হিন্দু তরুণী মুসলিম এক তরুণরে সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়ার কথা হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর এক বন্ধুকে জানিয়েছিলেন। এই আলাপচারিতার স্ক্রিনশট যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে হেনস্তার শিকার হন তিনি। জেলাজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। শনিবার হিন্দু কট্টরপন্থী পাঁচজন লোক মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা-মাকে শাসিয়ে যান। ওই দিনই মেয়েটি আত্মহত্যা করেন। শুরুতে পুলিশ আত্মহত্যার মামলা করে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেয়েটিকে হেনস্তা করার বিষয়টি গত সোমবার সামনে আসার পর ব্যাপকভাবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চিক্কামাগালুরু জেলার জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা কে আন্নামালাই বিবিসিকে জানান, আত্মহত্যার আগে ওই তরুণী একটি চিরকুট রেখে গেছেন। এতে তিনি লিখেছেন, ওই তরুণের সঙ্গে তাঁর একটি ছবি ছিল। লোকজন এ নিয়ে নানা মন্তব্য করতে থাকে। তাঁর চরিত্র নিয়েও কটাক্ষ করে। চিরকুটে তরুণী আরও জানান, পাঁচজন লোক বাড়িতে এসে তাঁর মায়ের কাছে অভিযোগ করেছে যে তিনি এক মুসলিম তরুণকে ভালোবাসেন। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজা হচ্ছে। ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ যেখানে যারা মেয়েটির সমালোচনা করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই হয়রানির কারণে একটি তরুণ প্রাণ ঝরে গেল। এতে মেয়েটির কোনো দোষ ছিল না। তাই বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।’