বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা বিনিময় অযোগ্য নোটে বাধ্যতামূলক জরিমানা

1
945

যথাযথভাবে নোট বাছাই (সর্টিং) করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়ার নির্দেশনা মানছে না দেশের বেশির ভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংক। নতুন, পুরনো, ছেঁড়া, ফাটা সব নোটের ক্ষেত্রে তালগোল বা গোঁজামিল পাকিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।

এতে সময় ও শ্রমের অপচয় হওয়া ছাড়াও ব্যাহত হচ্ছে সরাসরি নোট ধ্বংসকরণের উদ্দেশ্যও। এ অবস্থায় সরাসরি নোট ধ্বংসকরণ কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রতি আরো কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমাকৃত নোট যাচাই-বাছাইকালে বিনিময় অযোগ্য প্রমাণিত হলেই ব্যাংকগুলোকে বাধ্যতামূলক নির্দিষ্ট অংকের জরিমানা গুনতে হবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হিসাব থেকে এ অর্থ কেটে (বিকলন) নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর এক সার্কুলারে ব্যাংকগুলোকে সংগৃহীত পুরনো নোট পুনঃপ্রচলনযোগ্য, অপ্রচলনযোগ্য ও মিউটিলেটেড নোট— এ তিনভাগে বিভক্ত করে আলাদাভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে এ তিন প্রকার নোটের একটির সঙ্গে যাতে আরেকটি মিশে না যায়, সেটিও নিশ্চিত করতে বলা হয়। এছাড়া এ নির্দেশনা অমান্যের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নেগেটিভ পয়েন্টের ওপর ভিত্তি করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে বলেও জানানো হয়। কিন্তু ওই নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালিত না হওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিনিময় অযোগ্য নোট সরাসরি ধ্বংস করার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।এ বিষয়ে নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি ভল্টে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জমা দেয়া মিউটিলেটেড ও অপ্রচলনযোগ্য নোট যাচাই-বাছাইকালে প্রায়ই বিনিময় অযোগ্য নোট যেমন— বহু খণ্ডে খণ্ডিত নোট, বিল্ট-আপ নোট, জাল নোট ও নোট কম পাওয়ার মতো অনিয়ম দেখা যায়। এ ধরনের অনিয়ম পাওয়া গেলে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে সেদিন আর কোনো নোট ধ্বংস করা সম্ভব হয় না। এতে শ্রম ও সময়ের অপচয় হওয়া ছাড়াও সরাসরি নোট ধ্বংস করার উদ্দেশ্যও ব্যাহত হয়। তাই এখন থেকে জমা দেয়া নোট যাচাইকালে বিনিময় অযোগ্য নোট পাওয়া গেলে তা সরাসরি ধ্বংসের জন্য নির্ধারিত সব নোটের ওপর সমানুপাতে বিনিময় অযোগ্য নোট এবং সংখ্যাগত ঘাটতি নোটের সংখ্যা হিসাব করে আদায়যোগ্য অর্থের পরিমাণ (জরিমানা) নির্ধারণ করা হবে।এতে আরো বলা হয়, আপাতত ৫, ১০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের নোট সরাসরি পদ্ধতিতে ধ্বংস করা হবে। এক্ষেত্রে  একদিনে যে পরিমাণ নোট সরাসরি ধ্বংস করা হবে, তার মধ্যে ৫ টাকা মূল্যমানের নোটের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ, ১০ টাকা নোটের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ ও ২০ টাকা নোটের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে পৃথক করে যথানিয়মে যাচাই ও পরীক্ষা করা হবে। দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে পৃথক করা নোটের মধ্যে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোটের পরিমাণ ১০ শতাংশ বা তার বেশি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের জমা দেয়া সব পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোটের মোট মূল্যমানের ওপর ১ শতাংশ হারে জরিমানা আরোপ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 4 =