ব্যাংক কেলেঙ্কারির বছর ২০১৭ সাল : সিপিডি

0
626

২০১৭ সাল দেশে ব্যাংক কেলেঙ্কারির বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, চলতি বছরও ব্যাংক খাতের ঘটনাগুলোর কোনো নিরসন হবে বলে মনে হচ্ছে না।

ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি দিয়ে বোঝা যায়, সংস্কারের বিষয়ে সরকারের মনোভাব কী রকম ছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন। সিপিডি বছরে দুই-তিনবার দেশের অর্থনীতি নিয়ে পর্যালোচনা করে। এবারের পর্যালোচনা আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়। আজকের পর্যালোচনা ছিল চলতি অর্থবছরের জন্য প্রথম। এতে ব্যাংক খাত, রোহিঙ্গা ও বন্যার বিষয়টি নিয়ে বিশেষ আলোচনা করা হয়। সিপিডির পক্ষে পর্যালোচনা তুলে ধরেন সংস্থাটির গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। উপস্থাপনা শেষে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেশ কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে। চাপের মুখে পড়েছে। এটা সামাল দিতে আমরা যে সংস্কারের কথা বলেছিলাম, তা সামনের দিকে এগোয়নি, বরং পেছনের দিকে গেছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদাহরণ ব্যাংকিং খাত।’ ২০১৭ সালে ব্যাংক খাতে কী কী হয়েছে, তা তুলে ধরেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ব্যাংকে অপরিশোধিত ঋণ বেড়েছে, সঞ্চিতির ঘাটতি বেড়েছে, অপরিশোধিত ঋণে গুটিকয়েকের প্রাধান্য তৈরি হয়েছে, জনগণের করের টাকায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে মূলধন ঘাটতি পূরণ করা হয়েছে, বিভিন্ন ব্যক্তি খাতের ব্যাংকে প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে মালিকানার বদল হয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া নতুন ব্যাংক কার্যকর হতে পারেনি এবং এখন দেখা যাচ্ছে ব্যক্তি খাতের ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচারের ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, এগুলোর ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষেধক ব্যবস্থা না নিয়ে সরকার উল্টো ব্যাংকিং আইন সংশোধন করে ব্যাংকে পরিবারের নিয়ন্ত্রণ বাড়াল। সামগ্রিক এই পরিস্থিতির জন্য দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকে দায়ী করেন দেবপ্রিয়। তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বমূলক ভূমিকার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঘাটতি ছিল। এ ঘাটতি তিন জায়গায়—সংস্কারের উদ্যমের অভাব, সমন্বয় করতে না পারা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতায় দুর্বলতা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যক্তির পরিবর্তনের কথা তিনি বলেননি। এটা সমাধানও নয়। ব্যবস্থাপনা ও নীতি উদ্যোগের মনোভঙ্গি এবং সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়া পরিবর্তন না হলে ব্যক্তির পরিবর্তন বড় বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × 2 =