পোশাক শিল্পের মেলায় বাণিজ্যমন্ত্রী বিএনপি বুঝতে পেরেছে ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে হত্যা ও অগ্নীসন্ত্রাস করা ভুল ছিল

0
1331

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপি বুঝতে পেরেছে ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে মানুষ হত্যা ও অগ্নীসন্ত্রাস করা ভুল ছিল। সে সময় পুলিশ, নির্বাচনে কর্মরত কর্মকর্তা হত্যা, ভোট কেন্দ্রে অগ্নী সংযোগ, সাধারণ মানুষ হত্যা করে নির্বাচন ঠেকানোর ছেষ্টা করে তারা ব্যার্থ হয়েছিল। গতকাল(১৪ নভেম্বর) বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের উপর আক্রমন করা হয়েছে, পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের এ কাজ কেউ প্রত্যাশা করেনি। দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন মন্ত্রণালয়ের শুধু রুটিন মাফিক কাজগুলো করছি। নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের মতো কোন কাজ করছি না। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর তারিখে পুনঃনির্ধারণ করেছে।

আর পিছানো ঠিক হবে না। দেশে একটি অবাধ নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের জন্য সবকিছুই সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (১৫ নভেম্বর) ঢাকার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় রেডকার্পেট৩৬৫ লিমিটেড আয়োজিত “ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক গার্মেন্ট এন্ড টেক্সটাইলস, প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং মেশিনারী, ডাইস, পিগমেন্টস ও কেমিক্যাল, ইয়ান ও ফেব্রিক এর উপর ৪টি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, দেশের তৈরী পোশাক শিল্প দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। একের পর এক এখন দেশে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন গ্রীণ ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে, ইতোমধ্যে ৭৫টি ফ্যাকটরিকে গ্রীণ ফ্যাকরির সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে, আরো ২৮০টি ফ্যাক্টরি গ্রাীণ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রীণ বিল্ডং কাউন্সিল বিশে^র মধ্যে ১০টি তৈরী পোশাক ফ্যাক্টরিকে গ্রীণ ফ্যাক্টরির সার্টিফিকেট প্রদান করেছে, এর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়সহ ৭টি বাংলাদেশের তৈরী পোশাক কারখানা। এ শিল্পে দেশের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন ভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সরকার গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ তৈরী পোশাক রপ্তানি করে ৩০.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। এ বছর ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এখন বেশি রপ্তানি হচ্ছে। আশা করা যায়, এবছর ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরী পোশাক রপ্তানি করা সম্ভব হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ১৯ ভাগ এবং নতুন বাজারে রপ্তানি বেড়েছে ৪০ ভাগ। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের শিল্প খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের সহায়তার কারনে দেশের কাগজ ও সিমেন্ট শিল্প দাঁড়িয়ে গেছে। ১৯৯৬ সালে সরকার কাগজ উৎপাদনের কাচাঁমাল মন্ড আমদানি শুল্কমুক্ত করে, ফিনিস কাগজ আমদানির উপর অধিকহারে শুল্ক আরোপের কারনে দেশ এখন কাগজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছে। দেশের চাহিদা পূরণ করে এখন কাগজ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। একই ভাবে দেশেল উন্নয়ন কাজে ব্যবহ্যত সিমেন্ট আমদানি নির্ভর ছিল। সরকার একই ভাবে সিমেন্ট উৎপাদনের কাচাঁমাল আমদানির উপর শুল্কশুন্য করে ফিনিস সিমেন্ট আমদানির উপর অধিক হারে শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশ এখন সিমেন্ট উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন। একসময় দেশে মাত্র ৯ লাখ মেট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদিত হতো, ৫ বছরের মধ্যে দেশে সিমেন্ট উৎপাদন ৭০ লাখ মেট্রেক টনে বৃদ্ধি পায়। এখন দেশে ৩ কোটি মেট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদিত হচ্ছে এবং উৎপাদন ক্ষমতা ৬ কোটি মেট্রিক টন। একসময় দেশ কৃষির উপর নির্ভরশীল ছিল। আজ জিডিপিতে কৃষির অবদান ১৫ ভাগ, শিল্পে ১৩ ভাগ এবং সেবা খাতে ৫৫ ভাগ অবদান রাখছে। ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়ন শীল দেশে উন্নীত হবে। প্রদর্শনীতে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার ১২টি দেশের প্রতিষ্ঠান তৈরী পোশাকের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও টেকনোরজি প্রদর্শন করছে। আগামী ১৮ তারিখ পর্যন্ত প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০.৩০ মিনিট হতে রাত ৭.৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে গ্রীসের অনারারী কনসুল জেনারেল এবং বিজিএমই-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, বিকেএমই-এর ফার্ষ্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মনসুর আহমেদ, বাংলাদেশ পেপার মিলস এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ইনডেন্টিং এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মুহা. আইয়ুব, ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ নূরুল ইসলাম বক্তৃতা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eight + three =