সাভারের সি.এন্ড.বি এলাকায় হরদম চাঁদাবাজি, নীরব প্রশাষণ !

1
1125

স্টাফ রিপোর্টার ঃ
সাভারের সি.এন্ড.বি মোড়ে সরকার দলের পরিচয়ে সি.এন.জি ও ব্যাটারীচালিত আটোরিক্সা হতে প্রতিদিন মোটা অংকের চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। সাভারের সি.এন্ড.বি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সি.এন্ড.বি মোড় হতে আশুলিয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩২০ টি সি.এন.জি ও ব্যাটারি চালিত আটোরিক্সা চলাচল করে। এর এ সকল সি.এন.জি ও আটোরিক্সা চালকদের নিকট থেকে দৈনিক ২০ থেকে ৩০ টাকা হারে একজন লাইন ম্যান নিয়োগ করে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। বাৎসরিক হিসাবে যে অংক গিয়ে দাড়ায় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকায়। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সরকারের কড়া হুশিয়ারি থকালেও তা তোয়াক্কা না করে, কি করে তারা এমন সরকার দলের পরিচয়ে প্রকাশ্য চাঁদাবাজি করে চলেছে তা কারোই বোধগোম্য নয়। তাছাড়া পুলিশের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও এহেন প্রকাশ্য চাঁদাবাজির ঘটনা, সাধারন মানুষের মনে প্রশ্নের জাল বুনে দেয়। কোননা সাভার মডেল থানার একজন উপ-পরিদর্শক ও তিনজন কনস্টেবল এর একটি দল এখানকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সি.এন্ড.বি মোড়ে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকে। খোদ পুলিশের সামনেই এহেন চাঁদাবাজির ঘটনায় অসহায় হয়ে পড়েছে গরীব, খেটে খাওয়া এসকল সাধারণ সি.এন.জি ও অটোরিক্সা চালকরা। এ ব্যাপারে কয়েকজন অটোরিক্সা চালকদের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলন,“পুলিশের সামনেই আমাদের কাছ থেকে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করছে তারা। যেখানে পুলিশই নিরব ভূমিকা পালন করে সেখানে আমরা কার কাছে অভিযোগ জানাবো, এদের বিরুদ্ধে কথা বললে ওরা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলবে। চাঁদা দিতে না চাইলে মারধর করে, আমাদের গাড়ি আটকে রাখে। আমাদের কাছ থেকে আদায় করা চাঁদার একটি অংশ চাঁদাবাজরা পুলিশকে প্রদান করে আর তাই তাদের চাঁদা আদায়ে পুলিশ কোন বাধা দেয়না। আমরা নিরুপায় হয়েই তাদের এই চাঁদা প্রদান করি। সি.এন.জি ও অটোরিক্সা চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের সময় কথিত লাইনম্যান কে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “সরকার দলিও স্থানিয় প্রভাবশালী নেতার নির্দেশেই টাকা আদায় করছি, আমার কাজ শুধু টাকা উত্তোলন করা এর বাহিরে আর কিছুই জানা নাই।” কে এই নেতা তাকে প্রশ্ন করা হলে সে নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করে বলে, “আপনাদের প্রয়োজন হলে আপনারা খুজে বের করেন কে এই নেতা”। এরপর  পুলিশ তাদের কেন বাধা দেয়না এই প্রশ্নের জবাবে লাইনম্যান বলেন, “থানা-পুলিশ ম্যানেজ করেই এই লাইন পরিচালনা করা হয়, সুতরাং পুলিশের বাধা প্রাদানের প্রশ্নই আসে না”। একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ঘাম ঝড়ানো কষ্টার্জিত উপার্জন কেড়ে নেওয়া অত্যান্ত নেক্কারজনক একটি ঘটনা, তার উপর যদি হয় তা খোদ পুলিশের সহযোগিতায় তাহলে এ সকল নীরিহ খেটে খাওয়া মানুষের অবস্থা কেমন হয় তা আর বলার অপেক্ষা রখেনা। এই প্রকাশ্য চাঁদাবাজির ঘটনায় পুলিশের নীরবতাই প্রমান করে গরীব এ সকল খেটে খাওয়া মানুষের অভিযোগের সত্যতা। পরবর্তীতে সহকারী পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মাহবুবুর রহমানের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ নেই, অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। “সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজরা কোন দলেন নয়” প্রধানমন্ত্রির এই ঘোষণার পরেও সরকার দলের পরিচয়ে এহেন চাঁদাবাজির ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নয়। অনিতিবিলম্বে সরকার ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এ সকল চাঁদাবাজদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহন না করলে দেশের জনগন সম্পূর্ণরুপে বর্তমান সরকার ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি তাদের বিশ^াস ও আস্থা হাড়িয়ে ফেলবে এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে সোনার বাংলা পরিনত হবে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের অভয়ারন্যে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 − one =