পাখি এই ক্ষেত্রে উপযুক্ত ভূমিকা পালন করে, সংক্রমিত গরুর দ্বারা সংবেদনশীল গরুর প্রজনন বা নিষিক্তকরণের সময় । এই ভাইরাস আক্রান্ত পশু হতে বাতাসের মাধ্যমে শ্বাসতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে শরিরে প্রবেশ করে । প্রায়ই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পুর্বেই যেকোন নিঃসরণে এবং শ্বাস ত্যাগের মাধ্যমে বিপুল পরমাণ ভাইরাস বের হয়।
ক্ষুরারোগের লক্ষণঃ
গরু, মহিষের ক্ষেত্রে
১। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা জ্বর(১০৪-১০৬ ফারেনহাইট)
২। কাপুনি
৩। খুড়িয়ে চলা
৪। ফেনাযুক্ত আঠালো লালা ঝরা
৫। পায়ে , মুখে বা জিহ্বায় এবং ওলানের বাটে ফোস্কা ও ক্ষত
৬। বাছুরের ক্ষেত্রে লক্ষন দেখা দেয়ার আগেই বাছুর মারা যায় ।
৭। গর্ভবতী পশুর গর্ভপাত হয়ে যায়
৮। খাবারে অনিহা
চিকিৎসাঃ
ভাইরাস জনিত রোগ তাই এর বিশেষ কোন চিকিৎসা নেই। তবে ভালো ভাবে পরিচর্যা সহ কিছু ব্যবস্থা নিতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় ।
প্রথমে আক্রান্ত পশুকে আলাদা করে পরিস্কার ও শুষ্ক স্থানে রাখতে হবে ।
মুখে ঘা হলে ২ এলাম বা ১ পটাসিয়াম পার মাঙ্গানেট দিয়ে মুখ ধুয়ে দিতে হবে দিনে ২-৩ বার ।
মশা মাছির উপদ্রোব কমানোর জন্য ,এবং পায়ের ক্ষুরে ক্ষত হলে ০০১ পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট দ্বারা পরিস্কার রাখতে হবে দিনে ২-৩ বার । এক্ষত্রে এফ ওম ডি কিউর (ঋগউ ঈটজঊ) সহ অনান্য নামে তরল পদার্থ বেশ উপকারি ব্যবহারে। এতে ভাইরাস নিষ্ক্রিয়ও হয়ে থাকে।
প্রচুর লালা ঝরলে পশু দুর্বল হয়ে যায় সেক্ষেত্রে ৫ ডেক্সটোজ স্যালাইন (০৯) শিরায় পুশ করতে হবে। ১০০০ সিসি/৫০-১০০ কেজি ওজনের পশুকে ২-৩ দিন
টিকা প্রয়োগ টেবিলঃ- চামড়ার নিচে
এক্টিনোব্যাসিলোসিস (অপঃরহড়নধপরষষড়ংরং): ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ যা জিহ্বাকে শক্ত করে দেয় এবং ঘা হয়ে যায় ফলে প্রাণি খেতে পারেনা। জিহ্বাতে ভাইব্রোসিস হয়ে গিয়ে প্রচন্ড লালা ঝরে কোন কিছু খেতে পারেনা। আক্টিনোবাসিলোসিস লিগ্নিয়ারেসি নামক গ্রাম পজিটিভ কক্কোব্যাসিলাই জীবাণু এই রোগের কারণ। পুজ হয়, জিহ্বা নড়াচড়া করতে পারেনা।
সমাধাণঃ সোড়িয়াম আয়োডাইট ১০ সলুওশন প্রতি ১২ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ মাত্রা হিসেবে আক্রান্ত প্রাণীর শিরায় ইনজেকশন দিতে হবে।
পাশাপাশি এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। তাতে কাজ না হলে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ান দ্বারা জিহ্বা দেখে চিকিৎসা করানো উত্তম।
৭। পিপি আরঃ পিপি আর এর পুরো নাম হল (চবং:রং ঢ়বঃরঃবং জঁসরহরঃরং)। প্যারামিক্সোভিরিডি গোত্রের মরবিলি গণের একটি অন্যতম ভাইরাস এই রোগ সৃষ্টির জন্যে দায়ী। ছাগলের খুব পরিচিত এই রোগটি। প্রায় সব বয়সের ছাগলের জন্যি এটি ক্ষতিকর
লক্ষনঃ যে লক্ষন সমষ্টি দেখে সহজে চনা যায় তার মধ্যে
ছাগলের দেহের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায় প্রায় ১০৪-১০৪ফা (৪০-৪০স)
আক্রান্ত পশু তার শরীর লিয়ে এয়, দেখেই মনে হয় অসুস্থ্য, দেহের চামড়া শুকিয়ে যায়, মাজল শুকিয়ে যায়
পশুর খাবার চাহিদা কমে যায়
জ্বর বাড়ার সাথে সাথে নাক দিয়ে পুজ মত পানি নিঃসৃত হয়, আস্তে আস্তে সেই পানির ঘনত্ত বাড়তে থাকে ।
নাকের ভিতর শক্ত আবরন দেখা যায়। যার ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব করে।
চোখের কনজাংটিভা লাল হয়ে যায়।
দাতের মাড়িতে ঘা সৃস্টি হয় , যা পরবর্তিতে শক্ত আকার ধারণ করে। ফলে ছাগল তেমন খেতে পারে না।
পরবর্তি বংকনিয়মনিয়া সৃষ্ট হয়। যার ফলে ছাগল হাপাতে থাকে ।
গর্ভবতী ছগলের গর্ভপাত হয়ে যায়।
মুখে ঘা সৃষ্টি হয়।
ডায়রিয়া ও পালতা পায়খানা দেখা যায়।
চিকিৎসাঃ যদিও তেমন সন্তোষজনক চিকিৎসা নেই এই রোগের । তার পরেও লক্ষন দেখে চিকিৎসা দিয়ে এর মৃত্যহার অনেকটা কমিয়ে আনা যায় ।
কিছু এন্টিবায়োটিক দেয়া হয় যেমন , টেট্রাসাইকিন, অ্যামক্সোসিলিন (অসড়ীড়পরষরহ,) ইত্যাদি চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে।
ছাগলের অস্থিরতা কমানোর জন্যে এস্ট্রিনজেন্ট গ্রুপের ওষুধ
হিস্টামিনের নিঃসরণ কমানোর জন্যে এ্যন্টিহিস্টামিন।
পানির ঘাটতি পুরনের জন্যে ইলেকট্রলাইট দেয়া যেতে পারে ।
প্রাণীর প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখলেই আমরা বুঝতে পারবো তার খাবার চাহিদা কেমন। উপরুক্ত আলোচনা হতে যদি স্বাভাবিক কারণে মনে হয় তাহলে সময় কিছু ব্যবস্থা নিলে এবং যদি রোগের কারণে হয় তাহলে তার দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে দ্রুত সুস্থ্য হয়ে প্রাণি পুরণায় আগের মত ভাল খেয়ে তার বৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। তাহলে প্রতিটি পদক্ষেপই হবে নিজের উন্নতির পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নের অংশ। আমাদের আমিষের চাহিদা পুরণ হবে।