Site icon Aparadh Bichitra

নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগার বন্দিরা নেই রয়ে গেছে হয়রানী ও জুলুমের চিহ্ন

পুরাতন ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত প্রায় দুইশত বছরের বেশী পুরাতন এ কারাগার নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ ছিল না। যুগ যুগ ধরে অনেক জিজ্ঞাসা এই কারাগরের জীবন সম্পর্কে। গত নভেম্বর ২, ২০১৬ ইং থেকে নভেম্বর, ৫, ২০১৬ ইং পর্যন্ত বন্দিহীন এ কারাগার দেখার জন্য সাধারন জনগনের জন্য উন্মুক্ত রাখার ঘোষনা দেয়া হয়। সকাল ১০ ঘটিকা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ১০০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে দর্শনার্থীরা ঐতিহাসিক এ কারাগার দেখার সুযোগ পাবে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। নভেম্বর ৩, সকালে যথা সময়ে গিয়ে টিকিটের জন্য গেলে বলা হয় বেলা ১২ টার পর টিকেট দেয়া হবে। কারন জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে মন্ত্রী মহোদয়গন ভেতরে অবস্থান করছিলেন। অথচ এই ঘোষনা আগে দেয়া উচিৎ ছিল যে নভেম্বর. ৩ তারিখে দর্শনার্থীদেরকে টিকেট দেয়া হবে বেলা ১২ টার পরে। কারন মন্ত্রী মহোদয়গন সেখানে আসবেন তা পূর্ব নির্ধারিত। অসংখ্য লোক টিকেটের জন্য দুই ঘন্টা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল যা রীতিমত হয়রানী ও অনিয়ম। এরপর বেলা ১২ টার সময় টিকেট দেয়া হয়। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট নিয়ে ভেতরে প্রবেশের সময় শুরু হয় হয়রানী ও হুমকি ধমকি। অসহনীয় গরমের কারনে অনেক দর্শনার্থী পানির বোতল নিয়ে ভেতরে প্রবেশের সময় কর্তব্যরত কারারক্ষীরা তাদের হাত থেকে পনির বোতল কেড়ে নেয় ও গেটের পাশে রাস্তায় ফেলে দেয়। পানির বোতল কেড়ে নেয়ার কারন জিজ্ঞাসা করাতে অনেক দর্শনার্থীদের সাথে কারা রক্ষীরা অসৌজন্যমূলক আচরন করে। মহিলা দর্শনার্থীদের সাথে থাকা ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করে তল্লাশির নামে। অথচ পরিত্যাক্ত এই কারাগারে কোন বন্দি নেই এবং নিরাপত্তা নিয়ে কোন শংকাও থাকার কথা নয়। প্রবেশপথে হয়রানীর পর গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে দর্শনার্থীরা দেখেন অধিকাংশ লকআপ তালা মারা এবং দর্শনার্থীরা এসব লকআপের সামনে গেলে কারারক্ষীরা ধমকি মেরে সরিয়ে দেয়। দর্শনার্থীদের আগ্রহ ছিল ফাঁসির মঞ্চ ও বিভিন্ন লকআপ দেখা। অথচ অধিকাংশ লকআপে দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারেনি বলে তারা অসন্তোস প্রকাশ করেন। মেঘনা, পদ্মা, স্কুল ১, স্কুল ২, ২৭ সেল, ৯০ সেল, মনিহার, ১৪ সেল, দালান, কারা হাসপাতাল, ২৭ সেলের পশে মসজিদ, কারা অভ্যন্তরে বিভিন্ন চৌকা ইত্যাদি সব তালা মেরে শুধু সামান্য একট ু যায়গা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা ছিল যা দশ থেকে পনের মিনিট ঘুড়লেই দেখা হয়ে যায়। অথচ বলা হয়েছিল প্রতিটি দর্শক ১০০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে দুই ঘন্টা অবস্থান করতে পারবেন। অনেক দর্শনার্থী উইন্ডো কলের সামনে গেলে কারা রক্ষীরা ধমকি মেরে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। অথচ এই উইন্ডো কলে বন্দিদের সাথে দেখা করতে হলে কারা প্রশাসনকে ২,৫০০/- টাকা ঘুষ দিতে হত বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এদিকে নভেম্বর ৫ এর আগেই হঠাৎ করে অঘোষিতভাবে দর্শনাথী প্রবেশ ও টিকিট বিক্রয় বন্ধ করে দেয়া হয়। দেখা যায় বন্দিহীন পুরাতন কারাগার দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখার নামে উৎসুক জনতার সাথে তামাশা ও হয়রানী করা হয়েছে মাত্র। বন্দিরা নেই, রয়ে গেছে কারা অভ্যন্তরে জুলুম হয়রানীর চিহ্ন।