তানোরে মুক্তিযোদ্ধা কোটা উপেক্ষা করে নিয়োগ

0
1096

রাজশাহী প্রতিনিধি‍ঃ রাজশাহীর তানোরের তালন্দ লোলিত মোহন ডিগ্রী কলেজে মুক্তিযোদ্ধা কোটা উপেক্ষা ও বিধি লঙ্ঘন করে কর্মচারি নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা লঙ্ঘন করে কর্মচারি নিয়োগের খবর সাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়। এ ঘটনায়  চলতি বছরের ১৪ ডিসেম্বর বুধবার মুক্তিযোদ্ধা কার্তিক চন্দ্র ভুঁইমালী বাদি হয়ে নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধে স্থানীয় সাংসদ, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ও রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, যাকে নিয়োগ করা হয়েছে তিনি তেমন কোনো কম্পিউটার পরিচালনা করতে পারেন না। তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনা ও আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার কোটা উপেক্ষা করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, তানোর পৌর এলাকার তালন্দ লোলিত মোহন ডিগ্রী কলেজে চলতি বছরের ১ আগস্ট নিম্নমান অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সরকারী বিধি মোতাবেক আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন করতে বলা হয় ও কম্পিউটার শিক্ষায় অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের অগ্রাধিকারের কথা বলা হয়। এতে ২৫ জন আগ্রহী প্রার্থী আবেদন করেন। এরমধ্যে তানোর পৌর এলাকার হরিদেবপুর গ্রামের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কার্তিক চন্দ্র ভঁইমালীর পুত্র পরিমল কুমার ভুঁইমালী রয়েছেন। প্রথম অবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার আবেদন গ্রহণ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে কলেজের অধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ সরকার রহস্যজনক কারণে জমির মাস্টারকে নিয়ে মনগড়া নিয়োগ বোর্ড তৈরি করেন। ওই নিয়োগ বোর্ড চলতি বছরের ৫ নভেম্বর রাজশাহী কলেজে দেখানো হয়। সেখানে বোর্ডের সভাপতির অজানতেই তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোজাম্মেল হকের মেয়ে শাপলা সরকারকে ওই পদে নিয়োগ পাইয়ে দেয়া হয় বলে ব্যাপক প্রচার রয়েছে। সরেজমিন তদন্ত বা অনুসন্ধান করলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা কার্তিক চন্দ্র ভুঁইমালী জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সংগ্রাম করতে গিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। সরকারের বিধি মোতাবেক তার ছেলে ওই পদের যোগ্য প্রার্থী ছিল। কিন্তু কলেজের অধ্যক্ষ অর্থের বিনিময়ে সাজানো নিয়োগ বোর্ড তৈরি করে ভূয়া সদনে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষা অধিদফতরসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন এতে সুরহা না হলে প্রয়োজনে তিনি আদালতে যাবেন। তিনি আরো বলেন, যে প্রার্থীকে নিয়োগ করা হয়েছে সে কম্পিউটার পরিচালনা করতে যানেন না, তার পরেও রহস্যজনক কারণে তাকে ওই পদে নিয়োগ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ সরকার বলেছেন, তার কলেজে নিম্নমান অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার কোনো কোটা নেই। এ জন্য মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের আবেদন গুরুত্ব পাইনি। তবে, নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের নৈতিক সিদ্ধান্তে যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হয় বলে দাবী করেন। এব্যাপারে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রদীপ কুমার মজুমদার কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এব্যাপারে শাপলা সরকার বলেন, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন, কিšত্ত প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ উঙ্খাপন করেছে যার কোনো ভিত্তি নাই।
তানোর প্রতিনিধি

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty − 15 =