Site icon Aparadh Bichitra

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল
মামলা নং-৩/২০১৬
মোঃ ইউনুছ আলী ফরিয়াদী
প্রধান বন রক্ষক,
বন রক্ষকের কার্যালয়,
বন ভবন, আগারগাঁও, ঢাকা।
বনাম

জনাব এস এম মোর্শেদ প্রতিপক্ষ
সম্পাদক,
সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা,
মডার্ণ ম্যানশন (১৫তলা),
৫৩, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০।
জুডিশিয়াল কমিটির উপস্থিত চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ ঃ
১। বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ চেয়ারম্যান।
২। ড. উৎপল কুমার সরকার সদস্য।
৩। ড. মোঃ খালেদ সদস্য।
ফরিয়াদীর পক্ষেঃ  জনাব মোঃ মোবাশ্বের হাসান, এডভোকেট।
প্রতিপক্ষ‍ঃ  স্বয়ং উপস্থিত।
শুনানীর তারিখ‍ঃ ১১/০৫/২০১৬ইং, ০৫/০৯/২০১৬ইং, ২৬/১০/২০১৬ইং ও
২৯/১১/২০১৬ইং
রায়ের তারিখঃ২৮/১২/২০১৬ইং।
রায়
ফরিয়াদীর আর্জি ঃ
ফরিয়াদী নিবেদন করেন এই যে, ৫৩ মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা পত্রিকার বিগত ২১/০৩/২০১৬ ও ২৮/০৩/২০১৬ খ্রিঃ তারিখের ৪৩ ও ৪০ সংখ্যায় প্রধান বন রক্ষক মোঃ ইউনুছ আলীর গংদের সীমাহীন দুর্নীতি ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড শিরোনামে প্রকাশিত অসত্য আপত্তিকর, কাল্পনিক, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ করার মাধ্যমে তাহাকে জনসম্মুখে সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও ব্লাকমেইল করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। এ বিষয়ে তাহার বক্তব্য হলো যে, সংবাদটি সম্পূর্ণ অসত্য ভিত্তিহীন, বানোয়াট, মনগড়া, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানিকর ও বটে। এধরনের সংবাদ জাতিকে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলবে এবং সরকারি কাজে বিশৃংখলার সৃষ্টি করবে। প্রতিবেদনটিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী সাজেদা চেক্সধুরীর প্রভাব খাটানোর কথা বলা হয়েছে। তিনি একজন সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মাত্র, তাদের নাম ভাঙ্গালে অবশ্যই চোখে পড়তো এবং তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করত, কিন্ত‘ তারা তা করেন নাই বরং বনবিভাগের কর্মকান্ডের উন্নতি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। প্রকাশিত সংবাদে গাড়ি ক্রয়ের কথিত দুর্নীতির মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাহা সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট ভিত্তিহীন মনগড়া, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানিকরও বটে। দুর্নীতি দমন বিভাগ কর্তৃক তদন্ত এবং অনুসন্ধানে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আইনানুগ ভাবে তদন্তের মাধ্যমে উক্ত কেস খারিজ করে অব্যহতি প্রদান করা হয়েছে এবং নিষ্পত্তিকৃত বিষয়ের অবতারণা করে পত্রিকান্তরে মানহানি
করা আইনতঃ দন্ডনীয় অপরাধ।

বদলীর ব্যাপারে আমার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রতিদপ্তরে নিয়োগ ও বদলীর জন্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত নির্দেশিত নীতিমালার আলোকে বদলী ও নিয়োগ কমিটি এর সুপারিশের ভিত্তিতে বদলী ও নিয়োগ করা হয়। ফরেস্ট রেঞ্জার, ফরেস্টার এর বদলীর ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা আছে, সেই নীতিমালা কখনো লঙ্ঘন করা হয় নাই। জনবল সমস্যার কারণে ফরেস্ট রেঞ্জার ও ফরেস্টারগণ একাধিক কেন্দ্রেরও অফিসের দায়িত্ব পালন করতে হয়, যা জনস্বার্থে করা হয়ে থাকে। কখনও ফরিয়াদীর হস্তক্ষেপের সুযোগ নাই। উন্নয়ন
প্রকল্পের নামে যে হরিলুটের কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকরও বটে। উন্নয়ন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক দ্বারা সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ পূর্বক টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত ও সম্পাদিত হয় এবং সরকারি অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিবছর অডিট করা হয় যা ফরিয়াদী কর্তৃক সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ও বাস্তবায়ন করা হয় না। ঝজঈডচ প্রকল্প হতে প্রধান বন রক্ষক হিসেবে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের সংবাদটি সম্পূর্ণ অসত্য ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত মানহানিকর বটে। উক্ত প্রকল্পটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডঃ অরুপ চেক্সধুরী, অতিরিক্ত সচিব, ডঃ তপন কুমার দে, বন রক্ষক এবং জনাব মোঃ আকবর হোসেন উপ-প্রধান বন রক্ষক প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে থেকে যাবতীয় ব্যয় সহ সকল কাজ তদারকী ও বাস্তবায়ন করে আসছে। প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চলমান যা বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক তত্ত্বাবধানে একজন প্রকল্প পরিচালক কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে। উক্ত প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের ঋড়ৎবহংরপ অডিটের মাধ্যমে ব্যয়ের নির্ভূলতা যাচাই করা হয়। এখানে প্রধান বন রক্ষক হিসেবে কোন হস্তক্ষেপের সুযোগ নাই। জনাব হাসেম আলী মাতব্বরকে জড়িয়ে যে তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে তাহা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোন ব্যক্তি বিশেষের সহায়তায় সম্পদের সাথে জড়িয়ে সংবাদ পরিবেশন কুৎসা রটানোর শামিল। আত্মীয় ও কাছের লোকজনের সাথে গাজীপুর ও শরিয়তপুরের প্রচুর সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন এবং ফ্ল্যাট ও ভবন নির্মাণ করেছে বলে যে বক্তব্য বর্ণিত সংবাদে উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মনগড়া। এই মনগড়া সংবাদের কোন তথ্য, সূত্র বা উৎস উল্লেখ্য না করে মানহানির অপচেষ্টা করা হয়েছে। মনিপুর বীটের বনভূমি নিয়ে যে সংবাদ উত্থাপন করা হয়েছে তাও সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে, ঢাকা বনবিভাগের রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের মনিপুর বীটের গেজেট মূলে বনভূমির পরিমাণ হচ্ছে ৭৪২.৪০ একর, অথচ সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে ১৫০০ একর জমি জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ দিয়েছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উল্লেখ্য যে, প্রধান বন রক্ষকের বাড়ী ডামুড্যায় নয়। সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ করে তিনি প্রতি বছর আয় ব্যয় ও সম্পদ বিবরণী আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করে থাকে। বনভূমি বরাদ্দ ও বাগান লুটপাট সংবাদ সম্পূর্ণ অসত্য ও ভিত্তিহীন। বনভূমি ও বাগানসমূহ নির্দিষ্ট বন বিভাগাধীন থাকায় স্ব-স্ব বিভাগ কর্তৃক উক্ত বাগান সৃজন, রক্ষণাবেক্ষণ সহ যাবতীয় কার্যাদী পরিচালিত হয়। বিভিন্ন সময় দুস্কৃতিকারী কর্তৃক বনের গাছ কাটা, বনভূমি জবরদখল সহ কোন অবৈধ কার্যকলাপ সংঘটিত হলে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কর্মচারীরা দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন যা দেশের বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন আছে। বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ প্রসঙ্গে যে অসত্য তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গাইডলাইনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত জনবল নিয়োগ কমিটি লিখিত ও মেক্সখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে সুপারিশ করলে তখন প্রধান বনরক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে থাকেন। জনাব অবনী ভূষণ ঠাকুর, জনাব আবদুল লতিফ মিয়া, জনাব মনিরুজ্জামান, নামজুল হাসান এবং আতাউর রহমানসহ যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা স্ব-স্ব কর্মস্থলে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কর্তৃক বদলী হয়ে সরকারি কাজে নিয়োজিত আছেন। ঐসব কর্মকর্তাদের সহিত পেশাগত সম্পর্ক ছাড়া তাহার অন্য কোন সম্পর্ক নেই। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০০৪ সালে জারিকৃত বদলী নীতিমালা অনুযায়ী গেজেটেড, কর্মকর্তাদের বদলী মন্ত্রণালয় কর্তৃক হয়ে থাকে। জনাব অবনী ভূষণ ঠাকুর, জনাব আব্দুল লতিফ মিয়া বন রক্ষকগণের বদলী পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় কর্তৃক হয়েছে। এই বিষয়ে ফরিয়াদীর কিছুই করনীয় নাই। প্রধান বন রক্ষক হিসাবে তাহার ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুন্ন ও বন বিভাগের প্রশাসনের বিশৃংখলা ক্সতরীর মূল উদ্দেশ্য একই সাথে কায়েমী স্বার্থ ও চরিতার্থ করার অসৎ উদ্দেশ্যে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত কথিত উক্ত পত্রিকাটি নিয়মিত ছাপা হয় না। শুধুমাত্র মানসিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে তাৎক্ষণিক ভাবে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও চটকদার সংবাদ পরিবেশন করে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করা উল্লেখিত সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষের একমাত্র নেশা ও পেশা। এই ধরনের অপসাংবাদিকতা দেশের জন্য ক্ষতিকর ও বিপদজনক, সরকার ও ব্যক্তির জন্য বিব্রতকর। এছাড়া সরকারি জমি জবরদখলকারীদেরও উৎসাহ দিবে। তাই এতদবিষয়ে পত্রিকাটির সম্পাদক, প্রকাশক, প্রতিবেদক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রেস কাউন্সিল ১৯৭৪ এর ১২ ধারার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ একান্ত আবশ্যক। এ আপত্তিজনক প্রতিবেদন প্রকাশের বিরুদ্ধে আমি সংশ্লিষ্ট সম্পাদকের নিকট প্রতিবাদ পাঠিয়েছি। সম্পাদক আমার প্রতিবাদটি মোটেও ছাপায়নি। তাতে অভিযোগের কারণ প্রশমিত না হয়ে প্রকোপিত হয়েছে। প্রার্থনা ঃ অতএব উপরোক্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে মহাত্মন সমীপে বিনীত নিবেদন এই যে, মেহেরবানীপূর্বক ন্যায় বিচারের স্বার্থে উল্লেখিত মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনকারীদের বিরুদ্ধে প্রেস কাউন্সি এ্যাক্ট, ১৯৭৪ এর ১২ ধারার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতঃ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মর্জি হয়।

প্রতিপক্ষের জবাব ঃ
প্রতিপক্ষ নিম্নলিখিতভাবে নিবেদন করেন যে, সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা পত্রিকায় বিগত ২১/০৩/২০১৬ এবং ২৮/০৩/২০১৬ ইং যথাক্রমে ৪৩ এবং ৪৪ তম সংখ্যায় প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ ইউনুছ আলী গংদের সীমাহীন দুর্নীতি ১, ২, ৩ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদসমূহ যথার্থ বস্থনিষ্ঠ, বাস্তবভিত্তিক ও প্রকৃত তথ্যনির্ভর হওয়ায় ফরিয়াদী তার কৃত অনিয়মের আইনী পরিণাম আঁচ করতে পেরে এবং তার অপরাপর দুর্নীতি/অনিয়ম যাতে আর প্রকাশিত না করা হয় তারই কেক্সশল হিসাবে প্রেস কাউন্সিলের আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিপক্ষ আরও নিবেদন করেন যে, সংবাদটি কোনভাবে অসত্য, ভিত্তিহীন, বানোয়াট মনগড়া নয়। কোনপ্রকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানহানিকরও নয়। সম্পূর্ণ সত্য ও বস্থনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। এ ধরনের সংবাদ জাতিকে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলার এবং সরকারি কাজে বিশৃংখলা সৃষ্টির প্রশ্নই আসেনা এবং ১০০% সত্য ও বস্থনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে জাতি উপকৃত হবে বরং অপরাধের মাত্রা কমবে এবং অপরাধী/দুর্নীতিবাজদের সরকার আইনের আওতায় এনে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী সাজেদা চেক্সধুরীর (প্রকৃত পক্ষে মাননীয় সংসদ উপনেতা বেগম সাজেদা চেক্সধুরী হবে) প্রভাব খাটানোর কথা বলা হয়েছে। তিনি একজন সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তাদের নাম ভাঙ্গালে অবশ্য চোখে পড়তো এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতো, কিন্তু তারা তা করেন নাই বরং বন বিভাগের কর্মকান্ডের উন্নতি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন প্রভৃতি বক্তব্য সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে তিনি ব্যক্তিগত অবৈধ সুবিধা ভোগের উদ্দেশ্য সেসব অনিয়ম/দুর্নীতি করেছেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় সংসদ উপনেতা বেগম সাজেদা চেক্সধুরীর দোহাই দিয়ে কমস্থলে অধঃস্তন কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে ভীতি সঞ্চার করতেন যাতে তার অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে না পারে। তার নেতৃত্বে বন বিভাগের যেসব অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা আগামী ৫০ বছরেও পূরণ হওয়ার নয় বলে অসংখ্য বন কর্মকর্তা কর্মচারী জানিয়েছেন যা মাননীয় বনমন্ত্রী মহোদয়ও অবগত আছেন। অভিযোগের ৩নং ক্রমে বর্ণিত গাড়ী ক্রয়ের যে দুর্নীতির মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসত্য বানোয়াট ভিত্তিহীন মনগড়া উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানিকর বলে ফরিয়াদী যে দাবী করেছেন তা মোটেও সত্য নয়। একই সাথে ফরিয়াদী স্বীকার করেছেন দুর্নীতি দমন কর্তৃক তদন্ত এবং অনুসন্ধানে মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় আইনানুগভাবে তদন্তের মাধ্যমে উক্ত কেস খারিজ করে অব্যহতি প্রদান এবং নিষ্পত্তিকৃত বিষয়ের অবতারণা করে পত্রিকান্তরে মানহানি ও আইনী দন্ডনীয় অপরাধের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে ফরিয়াদী যা দাবী করেছে তা সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ফরিয়াদী কর্তৃক গাড়ী ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ২০০৩ সালে সরকারি ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা প্রশ্নাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা হয় যা পরবর্তীতে দুদকে নিয়মিত মামলা হিসাবে চলমান ছিল। ২০০৭ইং সালে ১/১১ সেনা সমর্থিত সরকারের সময় ফরিয়াদীর নানামুখী কর্মকান্ড ও অনাকাঙ্খিত বাহ্যিক প্রভাব ও চাপের কারণে তার মামলার বিপরীতে এফ, আর টি প্রদানে দুদককে বাধ্য করা হয় মর্মে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে নিশ্চিত করে। সুতরাং ফরিয়াদীর বক্তব্য আদেক্স সত্য নয় এবং এ আলোচিত মামলাটি দুদক কর্তৃক পুনরায় সচল হচ্ছে মর্মে জানা গেছে। বদলীর ব্যাপারে প্রধান বন সংরক্ষকের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে ফরিয়াদীর দাবী আদেক্স সত্য নয়। ফরিয়াদীর মতে প্রতিদপ্তরে নিয়োগ ও বদলীর জন্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত নির্দেশিত নীতিমালার আলোকে বদলী ও নিয়োগ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বদলী ও নিয়োগ করা হয় মর্মে দাবী করা হলেও ফরিয়াদী কর্মচারীদের বদলীর ক্ষেত্রে ৯০% বন নীতিমালা লঙ্ঘন করে অনিয়ম করার বিষয়টি বনে কর্মরত সকল শ্রেণীর কর্মকর্তা কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন যার প্রমাণ আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। ফরেষ্ট রেঞ্জার, ফরেষ্টারের বদলী মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা আছে, সেই নীতিমালা কখনো লংঘন করা হয়নি মর্মে দাবী সত্য নয়। জনবল সমস্যার কারণে ফরেষ্ট রেঞ্জার ও ফরেস্টারগণ একাধিক কেন্দ্রের ও অফিসের দায়িত্ব পালন করতে হয়, যা জনস্বার্থে করা হয়ে থাকে। কখনও প্রধান বন সংরক্ষকের হস্তক্ষেপের সুযোগ নাই প্রভৃতি মর্মে ফরিয়াদীর দাবী আদেক্স সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ফরিয়াদী বনের প্রধান হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর বদলী ও পদায়নের ক্ষেত্রে বন নীতিমালা জলাঞ্জলি দিয়ে যেভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন তা বনের ইতিহাসে এ যাবৎ অন্য কোন প্রধান বন সংরক্ষক করেন নাই মর্মে বনের অসংখ্য নির্ভরযোগ্য সূত্র সমূহ নিশ্চিত করেছেন; উন্নয়ন প্রকল্পের নামে হরিলুটের সংবাদটি সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর, উন্নয়ন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট পরিচালক দ্বারা সরকারি বিধি অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিবছর অডিট করা হয়। প্রধান বন সংরক্ষক কর্তৃক সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ও বাস্তবায়ন করা হয় না মর্মে ফরিয়াদীর যাবতীয় দাবী সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ফরিয়াদী বনের প্রধান হিসাবে সকল ক্ষেত্রে কাগজে কলমে আত্মরক্ষা মূলক রেকর্ড মেনটেইন করা হলেও সকল ক্ষেত্রে ফরিয়াদীর অলিখিত নির্দেশে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে হরিলুট করা হওয়ার অসংখ্য অভিযোগ বনে কর্মরতদের কাছ হতে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, যা অনুসন্ধানে সত্য প্রমাণিত হয়েছে;
ঝজঈডচ প্রকল্প হতে প্রধান বন সংরক্ষকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের সংবাদটি সম্পূর্ণ অসত্য, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানহানিকর মর্মে ফরিয়াদীর দাবী সত্য নয়। উক্ত প্রকল্পটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডঃ অরুপ চেক্সধুরী, অতিরিক্ত সচিব, ডঃ তপন কুমার দে, বন সংরক্ষক এবং জনাব মোঃ আকবর হোসেন উপ-প্রধান বন সংরক্ষক প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে থেকে যাবতীয় ব্যয়সহ সকল কাজ তদারকি ও বাস্তবায়ন করে আসছে।

প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চলমান যা বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক তত্ত্বাবধানে একজন প্রকল্প পরিচালক কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে এবং উক্ত প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের ঋড়ৎবহংরপ অডিটের মাধ্যমে ব্যয়ের নির্ভূলতা যাচাই করা প্রভৃতি বক্তব্য সত্য। তবে এ ঝজঈডচ প্রকল্পের প্রতিটি বরাদ্ধের কত অংশ ফরিয়াদী নিয়ে থাকেন তা উল্লেখ করেননি। কাগজে কলমে প্রকল্পের পরিচালক আকবর হোসেন ফরিয়াদীর সাথে পরষ্পর যোগসাজসে বনের ৭টি স্থানে ৩০টি বিল্ডিং ঘর নির্মাণ না করে কিভাবে ২৭(সাতাশ) কোটি টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিজেরা আত্মসাৎ করেছেন তা উল্লেখ করেন নাই। এখানে প্রধান বন সংরক্ষকের কোন হস্তক্ষেপের সুযোগ নাই মর্মে ফরিয়াদীর দাবী সত্য নয়। জনাব হাসেম আলী মাতব্বরকে জড়িয়ে যে তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কোন ব্যক্তি বিশেষের সহায়তায় সম্পদের সাথে জড়িয়ে সংবাদ পরিবেশন কুৎসা রটানোর শামিল, আত্মীয় ও কাছের লোকজনের সাথে গাজীপুর ও শরিয়তপুরের প্রচুর সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন এবং ফ্ল্যাট ও ভবন নির্মাণ করেছে বলে যে বক্তব্য বর্ণিত সংবাদে উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মনগড়া, এই মনগড়া সংবাদের কোন তথ্য, সূত্র বা উৎস উল্লেখ না করে মানহানির অপচেষ্টা করা হয়েছে মর্মে ফরিয়াদীর দাবী মোটেও সত্য নয়। প্রকৃত পক্ষে অপরাধ বিচিত্রায় সংশ্লিষ্ট সংখ্যা সমূহে যে বাগান মালী হাসেম আলী মাতব্বর ফরিয়াদীর আপন বড় ভাইয়ের ছেলে। ২০০৮ সালের আগে ফরিয়াদী এবং তার ভাতিজা বাগান মালী হাসেম আলী মাতব্বরের তেমন কোন সহায় সম্পদ না থাকলেও বর্তমানে ফরিয়াদীর ভাতিজা বাগান মালীর কোটি কোটি টাকায় নির্মিত আলিশান বাড়ী, কয়েকটি মাছের ঘের ও শত শত একর ফসলী জমির মালিক ভাতিজা বাগান মালী কিভাবে অর্জন করল বা এজন্য বাগান মালীর পক্ষে দুর্নীতি করেও এতসব সম্পদ অর্জন সম্পব কিনা ফরিয়াদী সে কথা উল্লেখ করে নাই। শরিয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার বড় মোলনা গ্রামের লোকেরা জানিয়েছেন প্রকৃতপক্ষে ঐসব সম্পদ ফরিয়াদীর ভাতিজা বাগান মালী হাসেম আলী মাতব্বরের নামে হলেও এর প্রকৃত মালিক ফরিয়াদী দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন এবং নিজে আইনের হাত থেকে বাঁচার নিমিত্তে ভাতিজার নামে চালিয়ে যাচ্ছেন। ফরিয়াদীর অবৈধ অর্থে ঢাকায় কয়টি বাড়ী, ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে তা ফরিয়াদী উল্লেখ করেন নাই। এভাবে ঢাকা বন বিভাগের গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে ফরিয়াদী তার বিভিন্ন নিকট আত্মীয়সহ ভাতিজা বাগান মালী হাসেম আলী মাতব্বরের নামে কম বেশী ১০০ কোটি টাকার ও বেশি মূল্যে জমি ও কয়েকটি বাড়ী থাকার কথা উল্লেখ করেন নাই। মনিপুর বীটের বনভুমি নিয়ে যে সংবাদ উত্থাপন করা হয়েছে তার সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে ফরিয়াদীর দাবী সত্য নহে। ঢাকা বন বিভাগের রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের মনিপুর বীটের গেজেট মূল্য বনভূমির পমিান ৭৪২.৪০ একর অথচ সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে ১৫০০ একর জমি জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ দিয়েছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ফরিয়াদীর প্রভৃতি দাবি সত্য নয়। প্রকৃত পক্ষে গত কয়েক বছরে ঢাকা বন বিভাগের মনিপুর বীট এলাকা সহ বিভিন্ন স্থানে কমবেশী ১৫০০০ (পনের হাজার) একর জমি বেদখলে সহযোগিতার মাধ্যমে ফরিয়াদী শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে বিভিন্ন বন সূত্র নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রধান বন সংরক্ষকের বাড়ী ভুলবশতঃ বড় মোলনা গ্রামের স্থলে ডামুড্যায় লেখা হয়েছে। এ অনাকাঙ্খিত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত। ফরিয়াদীর বিরুদ্ধে আমাদের পত্রিকায় প্রকাশিত ঢাকা বন বিভাগের জমি ও বাগান সাবাড় করণের সকল সংবাদ সম্পূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ ও সত্য মর্মে অসংখ্য বন সূত্র নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ আরও নিবেদন করেন যে, ফরিয়াদীর মতে বনভূমি বরাদ্দ ও বাগান লুটপাট সংবাদ সম্পূর্ণ অসত্য ও ভিত্তিহীন, বনভূমি ও বাগানসমূহ নির্দিষ্ট বন বিভাগাধীন থাকায় স্ব স্ব বন বিভাগ কর্তৃক উক্ত বাগান সৃজন, রক্ষণাবেক্ষণসহ যাবতীয় কার্যাদি পরিচালিত হওয়া, বিভিন্ন সময় দুস্কৃতিকারী কর্তৃক বনের গাছ কাটা, বনভূমি জবর দখলসহ কোন অবৈধ কার্যকলাপ সংঘটিত হলে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কর্মচারীরা দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন যা দেশের বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন আছে মর্মে ফরিয়াদীর বক্তব্য আংশিক সত্য হলেও অধিকাংশ তথ্য সত্য নয়। প্রকৃত পক্ষে ফরিয়াদীর আজ্ঞাবহ সিন্ডিকেট সদস্য দুর্নীতিবাজ বন কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঢাকা বন বিভাগের কম বেশী ১৫০০০ হাজার একর বনভূমি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বেহাত বা বেদখলে সহযোগিতা সহ ঐ পরিমাণ বনভূমির বনজ সম্পদও অর্থের বিনিময়ে লুটপাট করা হয়েছে যার আর্থিক সুবিধা ফরিয়াদী তার নির্দিষ্ট বন কর্মচারীদের মাধ্যমে গ্রহণ করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট বন কর্মচারীরা লিখিতভাবে জানিয়েছেন যা অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র যেসব ক্ষেত্রে বেদখলকারীরা চাহিদা মাফিক অর্থ দিতে পারেনি এবং বনসম্পদ পাচারকারীরা চাহিদামত অর্থ দেয়নি এ প্রকারের কিছুঘটনায় সংশ্লিষ্ট বন কর্মচারীরা বিভিন্ন আদালতে কিছু মামলা করেছে। এক্ষেত্রে অধিকাংশ মামলায় আদালতে উৎসাহিতবোধ করায় অধিকাংশ মামলায় অপরাধীরা খালাস পেয়ে যায়। বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ প্রসঙ্গে যে অসত্য তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মর্মে ফরিয়াদীর দাবী সত্য নয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গাইড লাইনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত জনবল নিয়োগ কমিটি লিখিত ও মেক্সখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে সুপারিশ করলে তখন প্রধান বন সংরক্ষক নিয়োগ প্রদান করে থাকেন মর্মে ফরিয়াদীর বক্তব্য সরকারি বিধান ও নিয়মাবলী অনুসারে সত্য। কিন্তু সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাহিরে ফরিয়াদীর নির্দেশে নিয়োগ বোর্ড এর দৃশ্যমান প্রক্রিয়ার বাইরে গোপনে চাকুরী প্রার্থীদের কাছ থেকে যেসব কেক্সশলে পত্রিকায় উল্লিখিত হারে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কথা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের ও নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে কয়েকজন নিশ্চিত করেছে যা বন ভবনে কর্মরত সদস্যরাও অনেকে অবগত আছেন। জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কর্মকান্ডের আড়ালে যেসব অদৃশ্যমান কর্মকান্ড সংঘটিত হয় তা

কখনও গোপন থাকে না। তাই সম্প্রতি বন বিভাগের ১৪৭৫ জন নতুন জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে এবং এক্ষেত্রে ৭০-৭৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মর্মে বনের বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। ফরিয়াদীর ভাষ্য মতে, জনাব অবনী ভূষণ ঠাকুর, জনাব আব্দুল লতিফ মিয়া, জনাব মনিরুজ্জামান, নাজমুল হাসান এবং আতাউর রহমানসহ যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা স্ব স্ব কর্মস্থলে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কর্তৃক বদলী হয়ে সরকারি কাজে নিয়োজিত আছে মর্মে ফরিয়াদীর দাবী আদেক্স সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ফরিয়াদী শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেছেন মাত্র। প্রকৃতপক্ষে বন নীতিমালা অনুসারে উপরোক্ত ব্যক্তিদের কারও বদলী ও পদায়ন হয়নি। যদিও বন ক্যাডার সার্ভিস অফিসারদের বেলায় মন্ত্রণালয় কর্তৃক বদলী ও পদায়ন হয় কিন্তু এক্ষেত্রে প্রধান বন সংরক্ষকের সুপারিশ প্রয়োজন হয়। প্রধান বন সংরক্ষকের সুপারিশ এবং বদলীর প্রস্তাব মোতাবেকই অবনী ভূষন ঠাকুর এবং আব্দুল লতিফ মিয়ার বদলী বা পদায়ন হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একক ইচ্ছায় কখনও কোন কর্মকর্তার বদলী বা পদায়ন হয় না মর্মে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া উপরোক্ত অন্যান্য কর্মচারীসহ বনের শত শত কর্মচারীকে গত ৪ বছরে সম্পূর্ণ বন নীতিমালা পরিপক্ষিভাবে ফরিয়াদী আর্থিক লোভে সরাসরি নিজেই বদলী ও পদায়ন করেছেন এবং এখনও করছেন বলে বন কর্মকর্তা কর্মচারীরা লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। ফরিয়াদীর বন নীতিমালা পরিপক্ষিত (বন মন্ত্রণালয়ের ২০০৪ সালে জারিকৃত বদলী নীতিমালা আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে) কর্মকান্ডের কারণে বনের সর্বত্রই চেইন অব কমান্ড ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মর্মে বন কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিশ্চিত করেছেন। প্রধান বন সংরক্ষক হিসাবে আমার ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুন্ন ও বন বিভাগের প্রশাসনের বিশৃংখলা ক্সতরীর মূল উদ্দেশ্য একই সাথে কায়েমী স্বার্থ চরিতার্থ করার অসৎ উদ্দেশ্যে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে মর্মে ফরিয়াদীর দাবী মোটেও সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ফরিয়াদী ও তার সিন্ডিকেট সদস্যদের অনৈতিক কর্মকান্ডে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অপূরণীয় ক্ষতিসহ শত শত নিরীহ বন কর্মচারীকে তিনি সম্পূর্ণ কাল্পনিক অজুহাতে প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে যে ক্ষতি করেছেন তাদের অন্তর আত্মার আহাজারি আল্লাহও কবুল করেছেন। ফরিয়াদীর মতে কথিত উক্ত পত্রিকাটি নিয়মিত ছাপা হয় না, শুধুমাত্র মানসিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে তাৎক্ষনিকভাবে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও চটকদার, সংবাদ পরিবেশন করে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করা উল্লেখিত সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষের একমাত্র নেশা ও পেশা, এধরনের অপসাংবাদিকতা দেশের জন্য বিব্রতকর, এছাড়া সরকারি জমি জবর দখলকারীদের উৎসাহ দেবে ফরিয়াদী ইত্যাদি দাবী আদেক্স সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা পত্রিকাটি নিয়মিতভাবে বিগত ২৫ বছর যাবৎ অত্যন্ত সুনামের সাথে ছাপা হচ্ছে। দেশের সকল সাপ্তাহিক পত্রিকার মধ্যে শীর্ষ স্থানীয় এ পত্রিকাটি সত্য প্রকাশে আপোষহীন এবং দেশে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের শক্তিশালী দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সরকার ও দেশের কল্যাণে বিরামহীনভাবে কাজ করে চলছে। দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকান্ডে যাদের কর্মময় জীবন পরিচালিত হয় একমাত্র তাদের পক্ষেই সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে এহেন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য তথা তথাকথিত অপসাংবাদিকতা ও কাল্পনিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণ নেয়া ও পেশা প্রভৃতি বক্তব্য প্রদান করে নিজের পাহাড়সম অপরাধ ঢাকা দেয়ার অপচেষ্টা মাত্র। ফরিয়াদীর দুর্নীতির সংবাদ সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার ৪৩তম সংখ্যায় গত ২১/০৩/১৬ইং তারিখে প্রকাশিত হলে ও ফরিয়াদী দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় পরে গত ২৬/০৪/২০১৬ইং তারিখে স্বাক্ষরিত প্রতিবাদ পত্র খানা আমাদের হস্তগত হয় ০৩/০৫/২০১৬ইং তারিখে অপরাধ বিচিত্রার ৪৩, ৪৪ এবং ৪৬ তম সংখ্যায় প্রকাশিত সংবাদের আংশিক প্রতিবাদ জানানো হলেও আমরা ঐ প্রতিবাদপত্র ও পত্রিকার বক্তব্য যথাসময়ে ছাপাই। ফরিয়াদীর দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকান্ডের ধারাবাহিক সংবাদ সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার ৪৩,৪৪ এবং ৪৬ তম সংখ্যায় প্রকাশিত হওয়ার পর নি¤œলিখিত প্রতিকার ও প্রতিক্রিয়াসমূহ প্রতিপক্ষের পত্রিকার সাফল্য, যেমনঃ অপরাধ বিচিত্রার ৪৩,৪৪ এবং ৪৬ তম সংখ্যায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের ফলে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অসংখ্য বন কর্মকর্তা-কর্মচারী আমাদেরকে অসংখ্য তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে এবং সেলফোনে অসংখ্য সাধুবাদ জানানো হয়েছে। ফরিয়াদী কর্তৃক অন্যায়ভাবে কাল্পনিক অভিযোগে চাকুরী হারা ও চাকুরীরত নির্যাতিত ও হয়রানির শিকার শত শত বন কর্মচারী প্রতিপক্ষের সাথে দেখা করে তাদের ক্ষোভ ও কষ্টের কথা শুনিয়েছে। ফরিয়াদীর সীমাহীন দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর পর জনাব ফরেস্ট রেঞ্জার ফজলুল হককে সাসপেন্ড এর ১৫ দিন পর চাকুরীতে পুর্নবহাল, ফরেস্ট রেঞ্জার হারুন অর রশিদকে দীর্ঘ ২ বছর সাসপেন্ড থাকার পর চাকুরীতে পুণঃ বহাল করতে ফরিয়াদী বাধ্য হয়। অপরাধ বিচিত্রায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের ফলে বর্তমানে বন বিভাগে বনের ভূমি বাণিজ্য ও বনজ সম্পদ লুটপাটের মাত্রা অনেকটা কমে আসছে বলে প্রতিপক্ষ অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে। সৎ ও নিরীহ এবং নির্যাতিত বন কর্মচারীদের পক্ষ থেকে প্রেরিত অভিযোগ সমুহ সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার কারণে বর্তমানে ফরিয়াদী ও তার সিন্ডিকেটের দুর্নীতিবাজ সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক অনুসন্ধান ও তদন্তকাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ফরিয়াদীর বিরুদ্ধে দুদকে থাকা পূর্বের মামলাও পুনঃ সচল হচ্ছে বলে জানা গেছে। অপরাধ বিচিত্রায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের পর বর্তমানে দুদক ও বন মন্ত্রণালয় কর্তৃক কমবেশী ২০ জন বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ চলমান আছে বলে জানা যায়। অপরাধ বিচিত্রায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের কারণে ফরিয়াদী কর্তৃক বন নীতিমালা পরিপন্থী বদলী ও পদায়নে সুবিধাভোগী ফরেস্ট রেঞ্জার খলিফা মনিরুজ জামানকে সোনারগাও চেক ষ্টেশন থেকে দীর্ঘ ৪ বছর পর অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি বন বিভাগের আরেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে “মোতালেবের খুটির জোর কোথায়, ২১ বছর ধরে চাকুরী করেছেন গাজীপুরে বরাখাস্ত হয়েও পেয়েছে পদোন্নতি” শিরোনামে সংবাদ

প্রকাশের পর পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় হতে মোঃ মোজাহেদ হোসেন, যুগ্ম সচিব (আইন) কর্তৃক গত ১২ মে ২০১৬ খৃষ্টাব্দ প্রধান বন সংরক্ষককে জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পরিশেষে প্রতিপক্ষ দাবী হয়েছে যে, ফরিয়াদীর বিরুদ্ধে অপরাধ বিচিত্রায় প্রকাশিত সকল সংবাদ ও তথ্য বস্তুনিষ্ঠ ও সত্য এবং ফরিয়াদী কর্তৃক প্রেরিত আংশিক প্রতিবাদপত্র যথানিয়মে গত বর্ষ ২০, সংখ্যা ৪৮, তারিখ ২৫/০৪/২০১৬ইং ছাপানো হয়েছে বিধায় এ মামলা আর চলতে পারে না। অপরাধ বিচিত্রায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের ফলে ফরিয়াদী ও তার সঙ্গীর দুর্নীতিবাজ বন কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুদক ও মন্ত্রণালয় কর্তৃক তদন্তকাজ ও অনুসন্ধান কাজ চলমান সহ কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্থ কর্মচারীকে চাকুরীতে পুনঃবহাল ফরিয়াদীর বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা প্রমাণ করে বিধায় এ মামলা চলার কোন হেতু নেই এবং ফরিয়াদী কর্তৃক আনীত অভিযোগ সত্য নয় বিধায় এ মামলা খারিজযোগ্য। ফরিয়াদী উল্লেখ করেছেন যে, অপরাধ বিচিত্রা ছাড়াও ফরিয়াদী প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ ইউনুছ আলী ও তার সিন্ডিকেট সদস্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের মধ্যে ক) দৈনিক সমাবেশ, তাং-২৪/০২/২০১৬ইং, খ) দৈনিক আজকের প্রভাত তাং-০৫/১১/২০১৫ইং, গ) দৈনিক প্রথম আলো তাং-২/০৪/২০১৬ইং, ঘ) দৈনিক যুগান্তর তাং-৩/০১/২০১৬ইং, ঙ) দৈনিক যুগান্তর তাং-৮/০১/২০১৬ইং, চ) দৈনিক যুগান্তর তাং-৫/০৫/২০১৬ইং, ছ) দৈনিক ইনকিলাব তাং-১০/০১/২০১৬ইং, জ) দৈনিক আমাদের সময় তাং-১১/০১/২০১৬ইং, ঝ) দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন তাং-১৩/০৫/২০১৬ইং তারিখ থেকে ৮টি সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, ঞ) দৈনিক যুগের চিন্তা তাং-৬/০১/২০১৬ইং, ট) দৈনিক যুগের চিন্তা তাং-৬/০৩/২০১৬ইং, ঠ) দৈনিক কালের কন্ঠ তাং-৯/০৫/২০১৫ইং, ড) সাপ্তাহিক সত্যকন্ঠ তাং-২৪ এপ্রিল ২০১৬ইং। সুতরাং, সংগত কারণে ফরিয়াদী কর্তৃক দায়েরকৃত গুরুত্বহীন এ মামলার আইনগত কোন ভিত্তি নেই বিধায় এটি খারিজযোগ্য।
ফরিয়াদীর প্রতিউত্তর ঃ
ফরিয়াদী তার প্রতিউত্তর দাখিল করে নিবেদন করেন যে, ২১/০৩/২০১৬ এবং ২৮/০৩/২০১৬ইং তারিখে সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা পত্রিকায় ৪৩ এবং ৪৪ সংখ্যায় ফরিয়াদী বিরুদ্ধে আপত্তিকর, কাল্পনিক, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ পরিবেশন করে তাকে সামাজিক ও ব্যক্তিগতভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য প্রতিপক্ষ ব্ল্যাকমেইল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। উল্লেখিত সংবাদ প্রকাশের বিরুদ্ধে ফরিয়াদী প্রধান সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিচার প্রার্থনায় একখানা অভিযোগ দাখিল করে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিগত ০২/০৬/২০১৬ইং তারিখে সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা পত্রিকার সম্পাদক এস, এম মোরশেদ তাহার অভিযোগের যে জবাব দান করেন উহার প্রতিউত্তর দাখিল করা হলো। ফরিয়াদী আরও নিবেদন করেন যে, সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদক এস. এম মোরশেদ তার জবাব দানের প্রারম্ভে উল্লেখ করেন যে, গত ২১/০৩/২০১৬ এবং ২৮/০৩/২০১৬ইং তারিখে যে সংবাদ প্রকাশ করেছন তাহা ১০০% সত্য ও বস্নিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে জাতি উপকৃত হবে, অপরাধ মাত্রা কমাতে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আসলে তিনি যে সংবাদ প্রকাশ করেছেন তাহা ১০০% মিথ্যা ও বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানিকর। মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে জাতি উপকৃত হয় না এবং অপরাধ করে না বরং অপরাধ বাড়ে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় না; জবাবের দ্বিতীয় দফায় বক্তব্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত, বানোয়াট, অসত্য বটে। সম্পাদক সাহেব কোন তথ্যের উপর ভিত্তি করিয়া উক্ত সংবাদ পরিবেশন করিয়াছেন তাহার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য সত্য নাই। যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া মাননীয় সংসদ উপনেতা ও মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতেন। প্রকাশিত সংবাদের বিরুদ্ধে ফরিয়াদীর গাড়ি ক্রয়ের দুর্নীতির বিষয়ে অভিযুক্ত সম্পাদক এস, এম, মোরশেদ বলেছেন, নানামুখী কর্মকান্ড ও অনাকাঙ্খিত বাহ্যিক প্রভাব ও চাপের কারণে মামলা এফ.আর.টি প্রদানে দুদককে বাধ্য করা হয় মর্মে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেন যা সত্য নহে। বাংলাদেশ দুর্নীতি কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তদন্ত অনুসন্ধানে গাড়ি ক্রয়ের অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আইনানুগ ভাবে উক্ত কেস খারিজ করে অব্যহতি প্রদান করেন। নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংবাদ পরিবেশন করা মানহানিকর এবং আইনতঃ দন্ডনীয় অপরাধ। সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদক সাহেব উন্নয়ন প্রকল্পের অলিখিত নির্দেশে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে হরিলুট করার অসংখ্য অভিযোগ বন কর্মরতদের কাছ হতে আমার কাছে পাঠানো হয়েছে যা অনুসন্ধানে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ইহা সত্য নয় কোন কিছু অনুসন্ধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করানো হয় এবং পত্রিকার সম্পাদক সাহেবকে অবগত করার কোন নিয়ম নাই। ইহা ছাড়া সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ পূর্বক টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। সরকারি অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকল্পের কার্যক্রম অডিট করা হয়। কোন প্রকল্প ফরিয়াদী কর্তৃক সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ও বাস্তবায়ন করা হয় না। তাই এই সংবাদটি অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মানহানিকরও বটে। ফরিয়াদী দফাওয়ারী প্রতিউত্তর দাখিল করে তার অভিযোগের ভিত্তি রয়েছে মর্মে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দিয়েছে এবং ফরিয়াদী অভিযোগ সত্য বরং প্রতিবেদনগুলি অসত্য ও উদ্দেশ্যপূর্ণ বিধায় আইনানুসারে ন্যায় বিচারের জন্য আবেদন করেছেন।

ফরিয়াদীর বিজ্ঞ আইনজীবী আবেদনপত্র, জবাব এবং প্রতিউত্তর পড়ে নিবেদন করেন যে, প্রকাশিত সংবাদে গাড়ি ক্রয়ের কথিত দুর্নীতির মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাহা সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন মনগড়া, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানিকরও বটে। দূর্নীতি দমন বিভাগ কর্তৃক তদন্ত এবং অনুসন্ধানে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আইনানুগ ভাবে তদন্তের মাধ্যমে উক্ত কেস খারিজ করে অব্যহতি প্রদান করা হয়েছে এবং তিনি বলেন যে, প্রতিদপ্তরে নিয়োগ ও বদলীর জন্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত নির্দেশিত নীতিমালার আলোকে বদলী ও নিয়োগ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বদলী ও নিয়োগ করা হয়। ফরেস্ট রেঞ্জার, ফরেস্টার এর বদলীর ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা আছে, সেই নীতিমালা কখনো লঙ্ঘন করা হয় নাই। জনবল সমস্যার কারণে ফরেস্ট রেঞ্জার ও ফরেস্টারগণ একাধিক কেন্দ্রেরও অফিসের দায়িত্ব পালন করতে হয়, যা জনস্বার্থে করা হয়ে থাকে। কখনও ফরিয়াদীর হস্তক্ষেপের সুযোগ নাই। বিজ্ঞ আইনজীবী আরও বলেন যে, উন্নয়ন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক দ্বারা সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ পূর্বক টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত ও সম্পাদিত হয় এবং সরকারি অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিবছর অডিট করা হয় যা ফরিয়াদী কর্তৃক সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ও বাস্তবায়ন করা হয় না এবং ঝজঈডচ প্রকল্পটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডঃ অরুপ চেক্সধুরী, অতিরিক্ত সচিব, ডঃ তপন কুমার দে, বন রক্ষক এবং জনাব মোঃ আকবর হোসেন উপ-প্রধান বন রক্ষক প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে থেকে যাবতীয় ব্যয় সহ সকল কাজ তদারকী ও বাস্তবায়ন করে আসছে। প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চলমান যা বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক তত্ত্বাবধানে একজন প্রকল্প পরিচালক কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে। উক্ত প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের ঋড়ৎবহংরপ অডিটের মাধ্যমে ব্যয়ের নির্ভূলতা যাচাই করা হয়। এখানে প্রধান বন রক্ষক হিসেবে কোন হস্তক্ষেপের সুযোগ নাই। তিনি জোড় দিয়ে নিবেদন করেন যে, ঢাকা বনবিভাগের রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের মনিপুর বীটের গেজেট মূলে বনভূমির পরিমাণ হচ্ছে ৭৪২.৪০ একর, অথচ সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে ১৫০০ একর জমি জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ দিয়েছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উল্লেখ্য যে, প্রধান বন রক্ষকের বাড়ী ডামুড্যায় নয়। সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ করে তিনি প্রতি বছর আয় ব্যয় ও সম্পদ বিবরণী আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করে থাকেন। যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনকালে তিনি নিবেদন করেন যে, বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ প্রসঙ্গে যে অসত্য তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গাইডলাইনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত জনবল নিয়োগ কমিটি লিখিত ও মেক্সখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে সুপারিশ করলে তখন প্রধান বনরক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে থাকেন এবং জনাব অবনী ভূষণ ঠাকুর, জনাব আবদুল লতিফ মিয়া, জনাব মনিরুজ্জামান, নামজুল হাসান এবং আতাউর রহমানসহ যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা স্ব-স্ব কর্মস্থলে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কর্তৃক বদলী হয়ে সরকারি কাজে নিয়োজিত আছেন। ঐসব কর্মকর্তাদের সহিত পেশাগত সম্পর্ক ছাড়া তাহার অন্য কোন সম্পর্ক নেই। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০০৪ সালে জারিকৃত বদলী নীতিমালা অনুযায়ী গেজেটেড, কর্মকর্তাদের বদলী মন্ত্রণালয় কর্তৃক হয়ে থাকে। জনাব অবনী ভূষণ ঠাকুর, জনাব আব্দুল লতিফ মিয়া বন রক্ষকগণের বদলী পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় কর্তৃক হয়েছে। এই বিষয়ে ফরিয়াদীর কিছুই করনীয় নাই। পরিশেষে, তিনি নিবেদন করেন যে, পত্রিকাটি নিয়মিত ছাপা হয় না। শুধুমাত্র মানসিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে তাৎক্ষণিক ভাবে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও চটকদার সংবাদ পরিবেশন করে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করা উল্লেখিত সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষের একমাত্র নেশা ও পেশা। এই ধরনের অপসাংবাদিকতা দেশের জন্য ক্ষতিকর ও বিপদজনক, সরকার ও ব্যক্তির জন্য বিব্রতকর করা ছাড়া সরকারি জমি জবরদখলকারীদেরও উৎসাহ দিবে। তাই এতদবিষয়ে পত্রিকাটির সম্পাদক, প্রকাশক, প্রতিবেদক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রেস কাউন্সিল ১৯৭৪ এর ১২ ধারার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ একান্ত আবশ্যক। প্রতিপক্ষ নিজেই তার যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেন এবং নিবেদন করেন যে, ফরিয়াদী দুর্নীতির সংবাদ তাঁর পত্রিকায় ২১/০৩/২০১৫ইং তারিখে প্রকাশিত হয় এবং ফরিয়াদী বিভিন্ন তারিখে তার স্বাক্ষরিত প্রতিবাদপত্র প্রেরণ করেন এবং সেই প্রতিবাদ পত্রটি ২৫/০৪/২০১৬ তারিখে সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার সংখ্যা ৪৮ এর ৪৭-৪৮পৃষ্ঠায় ছাপানো হয় কিন্তু ফরিয়াদী উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে ০৫/০৫/২০১৫ তাহার আবেদনপত্রের ৭ম পৃষ্ঠার শেষভাগে হাতে লিখে উল্লেখ করেছেন যে, আপত্তিজনক প্রতিবেদন প্রকাশের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ পাঠিয়েছে কিন্তু প্রতিবাদ মোটেও ছাপায়নো হয়নি যা অসত্য বরং মনগড়া। কেবলমাত্র এই হয়রানিমূলক অভিযোগ দাখিল করার জন্য উক্তরূপ বক্তব্য করেছেন। যেহেতু প্রতিবাদপত্রটি ছাপানো হয়েছে তারপর মিথ্যা উক্তি এবং ভিত্তিহীন হেতুতে অভিযোগ দাখিল করেছেন, তাই অভিযোগটি সচল নয়, তাই নামঞ্জুর যোগ্য। তিনি আরও বলেন যে, সাংবাদিকতার রীতিনীতি মেনে প্রতিবেদনটি ছাপানো হয়েছে। তাই ফরিয়াদীর অভিযোগের কারণ প্রশমিত হয়েছে, তাই আবেদনপত্রটি ন্যায় বিচারের স্বার্থে খারিজ করা আবশ্যক। তিনি আরও নিবেদন করেন যে, সাংবাদিকতার নীতির নিরিখে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। ফরিয়াদীর অভিযোগ এবং প্রতিউত্তর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, কেবল প্রধান বনসংরক্ষকই প্রতিবেদনগুলির প্রতিবাদ

করেছেন কিন্তু অন্যকোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা যাদের সম্পর্কে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে কেউই প্রতিবাদ করেনি তাই আংশিক প্রতিবাদ করার মধ্য দিয়ে প্রধান বন সংরক্ষক প্রতিবেদনের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বন নীতি পরিপন্থী বদলী ও পদায়নে সুবিধাভোগী ফরেস্ট রেঞ্জার খলিফা মনিরুজ্জামানকে সোনারগাঁও চেক স্টেশন থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তিনি আরও নিবেদন করেন যে, অপরাধ বিচিত্রায়ই কেবল ফরিয়াদীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ছাপায়নি বরং জাতীয় পত্রিকা গুলিও তদ্রুপ দুর্নীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করা করেছে, তাই প্রধান বন সংরক্ষক সহ সকল দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারে তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। পরিশেষে খরচসহ ফরিয়াদীর অভিযোগ না-মঞ্জুর করার জন্য আবেদন করেন।
আলোচনা ও সিদ্ধান্তঃ
ফরিয়াদীর বিজ্ঞ আইনজীবী এবং প্রতিপক্ষের সম্পাদক এর যুক্তি-তর্ক শুনা হলো। ফরিয়াদীর অভিযোগ, প্রতিপক্ষের জবাব এবং ফরিয়াদীর প্রতিউত্তর বিশ্লেষণ করা হলো। ফরিয়াদীর বিজ্ঞ আইনজীবী এবং প্রতিপক্ষের যুক্তি-তর্কের আলোকে ফরিয়াদীর আবেদনপত্র পরীক্ষাকালে দেখা যায় যে, অভিযোগ পত্রের গর্ভে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ হওয়ার কোন বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন নাই, তবে আবেদনপত্রের ৭ম পৃষ্ঠার শেষভাগের উল্লেখ করেছেন। “এ আপত্তিজনক প্রতিবেদন প্রকাশের বিরুদ্ধে আমি সংশ্লিষ্ট সম্পাদকের নিকট প্রতিবাদ পাঠিয়েছি। সম্পাদক আমার প্রতিবাদটি মোটেও ছাপায়নি। তাতে অভিযোগের কারণ প্রশমিত না হইয়া প্রকোপিত হইয়াছে।” ০৫/০৫/২০১৬ তারিখে ফরিয়াদী আবেদন দাখিল করেছেন। অপরপক্ষে প্রতিপক্ষের যুক্তি-তর্ক কালে উপস্থাপনকৃত বক্তব্য পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, ফরিয়াদীর প্রতিবাদপত্রটি অপরাধ বিচিত্রার ৪৭-৪৮ পৃষ্ঠায়, সংখ্যা ৪৮, তারিখ ২৫/০৪/২০১৬ তে হুবহু ছাপানো হয়েছে। তারপরে আবেদনপত্র দাখিলের কোন হেতু উদ্ভব হয় না। এমতাবস্থায়, প্রতিপক্ষের বক্তব্য সঠিক বলে প্রতিয়মান হয়। প্রতিবাদপত্রটি হুবহু ছাপানোর পরে অভিযোগের কোন হেতু থাকে না। তাই, হেতুবিহীন অভিযোগ অচল। আবেদনপত্রটি ০৫/০৫/২০১৬ তারিখে দাখিল করেছে কিন্তু কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফরিয়াদী সত্য গোপন করেছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তার নিকট থেকে এরূপ আচরণ আশা করা যায় না। এমতাবস্থায়, প্রতিপক্ষের দাবীর প্রেক্ষিতে খরচসহ আবেদনপত্রটি না-মঞ্জুর করা সমীচীন বলে মনে হয়। আমরা উপরোক্ত অবস্থাধীনে অভিযোগের গুনাগুণের উপর আর কোন মতামত দেওয়া প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। ফরিয়াদীর আইনজীবী এবং প্রতিপক্ষের যুক্তিতর্ক, দাখিলকৃত আবেদনপত্র, প্রতিপক্ষের জবাব, ফরিয়াদীর প্রতিউত্তর এবং অপরাধ বিচিত্রার ২৫/০৪/২০১৬ তারিখের সংখ্যা ৪৮ বিবেচনায় এনে আমরা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তে পেঁক্সছেছি যে আবেদন (অভিযোগ) পত্র দাখিলের কোন হেতু উদ্ভব হয়নি কেননা প্রতিপক্ষ ২৫/০৪/২০১৬ তারিখে ফরিয়াদীর প্রতিবাদপত্র হুবহু ছেপেছেন, ফলে অভিযোগের কারণ প্রশমিত হয়েছে। তাই, হেতুবিহীন আবেদন পত্রটি না-মঞ্জুর করা হলো।