Site icon Aparadh Bichitra

‘দায়মুক্ত’ ডিআইজি বাবুলের বিরুদ্ধে ফের অনুসন্ধান করছে দুদক

বিগত কমিশন আমলে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে ‘দায়মুক্তি’ পাওয়া ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (ডিআইজি) রফিকুল ইসলাম বাবুলের বিরুদ্ধে ফের অনুসন্ধানে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ লক্ষ্যে বাছাই কমিটির সুপারিশসহ বিষয়টি কমিশনের টেবিলে রয়েছে বলে জানা গেছে। সংস্থাটির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে এ তথ্য।
সূত্রটি জানায়, ডিআইজি রফিকুল ইসলাম (বাবুল) ক্ষমতার অপব্যবহারসহ অবৈধ উপায়ে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেন। কয়েকবছর আগেও  তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া বাজারে সরকারি খাস জমিতে তার ছিলো একটি টিনশেড ঘর। রাতারাতি তিনি হয়ে যান প্রায় শত কোটি টাকার মালিক। নিজ নাম এবং স্ত্রীর নামে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ৩টি বিলাসবহুল বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি টাকা। উত্তরায় প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের একটি বাড়ি কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছেন। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা দুটি দামি গাড়ি ব্যবহার করছেন, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি টাকা।
সূত্র আরো জানায়, ডিআইজি রফিকুল ইসলাম বাবুলের মালিকানায় রয়েছে ময়মনসিংহের নাবিবহর মৌজার ৮০/৮৭৭, ৮৭৮, ৮৭৯, ৮৮১, ৮৮৩ নম্বর দাগে ৭৪ শতাংশ জমি- যার আনুমানিক মূল্য ৩২ লাখ টাকা। মুথাজুড়ি মৌজার ছলংগায় ১২ বিঘা জমি, মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। একই মৌজায় ২৬৯৩, ৮৮৪৪ নম্বর দাগে ২৪ শতাংশ, যার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা। কড়ইচালায় ২০ বিঘা। যার মূল্য ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ফুলবাড়িয়া বাজারসংলগ্ন ২০৯৮ নম্বর দাগে ১৪০ শতাংশ- মূল্য ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ফুলবাড়িয়া উত্তরপাড়ায় ২৪ শতাংশ, যার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা। মুথাজুড়ি বাজারসংলগ্ন ২১২১ নম্বর দাগে ১০০ শতাংশ, যার মূল্য প্রায় ৮০ লাখ টাকা। একই মৌজার ২৪৭৩ নম্বর দাগে ১৭৫ শতাংশ। মূল্য প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২২৪২ নম্বর দাগে ১৪২ শতাংশ, মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
রফিকুল ইসলাম বাবুলের স্ত্রী শিরীন আক্তারের নামে মুথাজুড়ি মৌজার ৩০০৩, ৩০০৪, ৩০১১ ও ৩০১২ নম্বর দাগে ফুলবাড়িয়া দক্ষিণপাড়া (কসাইর চালা) ৮ বিঘা, যার আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে সম্পদের দালিলিক প্রমাণ হাতে পেয়েও বিশেষ সমঝোতায় রফিকুল ইসলাম বাবুলকে দায়মুক্তি দেয় দুদক। উপ-পরিচালক হামিদুল হাসান অভিযোগটি অনুসন্ধান করেন। তবে বিগত কমিশনের প্রশ্নবিদ্ধ ‘দায়মুক্তি’গুলো নিয়ে বর্তমান কমিশন আবারো আগ্রহী হয়ে উঠেছে বলে জানায় সূত্রটি।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল যুগান্তরকে বলেন, একটি অনুসন্ধান একবার নথিভুক্ত হলে নতুন করে অনুসন্ধান শুরু করতে আইনগত কোনো বাধা নেই। কমিশন যদি মনে করে অভিযোগ নথিভুক্ত হওয়ার পর নতুন কোনো তথ্য হাতে এসেছে তাহলে নতুন তথ্যের ভিত্তিতে আবারো অনুসন্ধান শুরু করতে পারে।