Site icon Aparadh Bichitra

নাঙ্গলকোটে মিটার দেওয়ার নাম করে ৪ লাখ টাকা আদায়

মো: জামাল উদ্দিন স্বপন, কুমিল্লা:
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে পল্লী বিদ্যুৎতের মিটার দেওয়ার নাম করে গ্রামের মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৪ লাখ ২২ হাজার ৫ শত টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঢালুয়া ইউপির মগুয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার মাছুম, প্রফেসর আমিন, আবুল কাশেম, মাহবুবুল হক, জলিল বিএসসি ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দাবীদার একটি সিন্ডিকেট ওই গ্রাম থেকে ৭৮ জন গ্রাহকের কাছ থেকে মিটার দেওয়ার নাম করে সর্বমোট ৪ লাখ ২২ হাজার ৫ শত টাকা ঘুষ আদায় করেন। টাকা না দিলে কেউ মিটার পাবে না বলে ঘোষণা দেন ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে অভিযোগকারী ওই গ্রামের কাজী বাড়ীর আবুল খায়ের, জাফর আহম্মদ, মো: ছায়েদ, নুরুল হক নুরু, নেজাম, মাহবুবুল হক, আমিনুল হক, নেয়ামত উল্যাহ, দুলাল, নুরুন্নবী,মাওলানা নুরুল আলম, আওয়াল, বিল্লাল, আলম, মোবারক, হানিফ,কালাম, ইসমাঈল, মোবারক, মনির, কাজী ইলিয়াছ, দোকানদার ইউসুফ, ইসমাঈল হুজুর, বিল্লাল, মো: নুর আহম্মদ, অলি আহাম্মদ, খোকা মিয়া, লেদু মিয়া, মানিক, মাহবুবুল হক, কাদের, শাহ আলম, মনি, বিল্লাল, কাসেম, আবু তাহের, আবু বক্কর, আবদুল মান্নান, গোফরান, কেফায়েত, সেলিম, সবুজ, দুলাল, হোরন, হজল, মুসা মিয়া, এনায়েত, খোরশেদ আলম, দুলাল ভূইয়া নার্সারীর, বাবুল  (মোতালেব), মনির, নাছির, রাবিয়ার কাছ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে,  জালাল জামাই, নুর ইসলাম,  হোসেন মিকার থেকে ২ হাজার টাকা করে, দেলোয়ার হোসেন, কামাল হোসেন থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে, ডা. রুহুল আমীন থেকে ১ হাজার টাকা, হাতেম মেম্বার থেকে ৩ হাজার টাকা, সামছু থেকে ৫ হাজার টাকা, ইউসুফ থেকে ৭ হাজার টাকা, মোস্তফা থেকে ৯ হাজার ৫০০ টাকা, সাহাদাত,গফুর, সফিক, ইউসুফ, নাছির, রবিউল হক, ছালে আহম্মদ, আনোয়ার থেকে ৯০০০ টাকা করে, জামাল থেকে ১৪ হাজার, আনোয়ার থেকে ৪ মিটার বাবত ১৬হাজার টাকা, গিয়াস উদ্দিন থেকে ২ মিটার বাবত ১০ হাজার টাকা, আলী আককাছ থেকে ৩ মিটার বাবত ১৩হাজার ৫০০ টাকা করে প্রায় ৭৮ জন গ্রাহকদের কাছ থেকে ১০২টি মিটার বাবদ ৪ লাখ ২২ হাজার ৫শত টাকা ঘুষ আদায় করা হয়।  গ্রামের উত্তরপাড়া এখনো মিটার দেওয়া বাকী ।সেখানেও প্রায় রয়েছে অর্ধশতাধিক পরিবার। আর সেখানেও এমন বাণিজ্য হয়তো হবে। আর এদিকে ৭৮ জনের সাথে মিটার দেওয়া বাকি আছে আমান উল্যাহ, বিল্লাল, তপু মিয়া, বাবুল মিয়া। বিল্লাল থেকে আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৫ শত টাকা, তপু (তাজু) মিয়ার ৪ ভাই থেকে ১৮ হাজার টাকা। আবার ৭৮ জনের মধ্যে লিষ্টে থাকা মাসুম টাকা না দিয়েই মাতব্বরি করে উল্টো কর্মকর্তা সেজে উপরোক্ত ঘটনা ঘটার নাটের গুরু হয়েছেন। এদিকে প্রভাষক আদর্শ আমিন নিজ বাড়িতে ৬ পরিবারকে নিজ মিটার থেকে সাইড লাইন দিয়ে ৫০০ টাকা করে ৩ হাজার টাকা আদায় করছেন। অথচ মোট ৭ পরিবার চালিয়ে তার মিটার বিল আসে ২০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
এ ব্যাপারে স্থানীয় একাধিক আ.লীগ নেতা জানান, গত বছরে পরিকল্পনা মন্ত্রী তাদের গ্রামে এক পথসভা অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেছেন নাঙ্গলকোট উপজেলায় প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎতায়ন করা হবে, একটি ঘরও বাকী থাকবে না। তবে এ নিয়ে যদি কোন ব্যাক্তি মিটার বানিজ্য করে তাহলে সে যে দলের হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু দেখা যায় মন্ত্রীর কথা তোয়াক্কা না করে লক্ষ লক্ষ টাকা মিটার বাণিজ্য করেন দলীয় নেতা কর্মীরা। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ঢালুয়া হোমনাবাদ আর্দশ কলেজের  প্রভাষক আমিন জানান- আমার সাথে আগামীকাল (রবিবার) দেখা করেন। আমি এখন ব্যস্ত।
অভিযুক্ত সাবেক মেম্বার মাছুম জানান- আমি দোকানে আছি। বাসায় গিয়ে কল ব্যাক করবো।
ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার এর স্বামী হাজী দেলোয়ার জানান- আমরা গ্রামবাসী কিছুদিন ভাইস চেয়ারম্যান আবু ইউসুফের সাথে দেখা করে অভিযোগ দিলে,তিনি জানিয়েছেন ১০০০ টাকা রেখে বাকী টাকা যেন ফেরত দেওয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান ভূইয়া বাছির বলেন- মঘূয়া গ্রামের  মিটার সংক্রান্ত বিষয়টি আমার কানে এসেছে। মৌখিক একাধিক অভিযোগ এসেছে। আমি গ্রামবাসীকে বলেছি আপনারা সরাসরি মন্ত্রী মহোদয়কে জানান।
ডিজিএম জানান- আগামীকাল (রবিবার) সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করবো। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে জানাবো আপনাদের। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ জানান- আসলে গ্রামে মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ্ব। আর মিটার জামানত ১ হাজার টাকার উপরে নেওয়া ও নিষেধ।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল লোটাস কামালকে বারবার কল করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এবং ওনার পিএস রতন কুমার সিংহকেও কল করে পাওয়া যায়নি।