Site icon Aparadh Bichitra

সাতদিনের আল্টিমেটাম ক্র্যাবের ৫৭ ধারা বাতিলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী সাত দিনের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) নেতৃবৃন্দ। এই সময়ের মধ্যে ৫৭ ধারা বাতিল না হলে আন্দোলন আরো কঠিন হবে বলে ঘোষণা দেন তারা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সদস্যসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার ও ৫৭ ধারা বাতিলের দাবিতে ক্র্যাব আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের সভাপতি আবু সালেহ আকন।

তিনি বলেন, ‘আগামী সাত দিনের মধ্যে ৫৭ ধারার মতো কালো আইন বাতিল করতে হবে। এছাড়া সাংবাদিক ধ্রুবসহ অন্যান্য সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তা না হলে সাত দিন পর আমরা একই জায়গায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করবো। এরপরও ৫৭ ধারা বাতিল না হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
আবু সালেহ বলেন, ‘সাংবাদিক দ্রুব’র বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আমরা রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলাম। এরপর মানিকগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ মো. মাহবুবুর রহমান এক সাংবাদিকের মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করে মামলা প্রত্যাহার করবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এক মাস পার হলেও তিনি সেটি করেননি। তাই আমরা তাকে আর এক সপ্তাহ সময় দেব। এর ভেতরে তিনি মামলা প্রত্যাহার না করলে আমরাও আরো কঠোর হবো।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় খুবই নগণ্য সংখ্যক গ্রেফতার হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে ভুল তথ্য দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। তার এমন বক্তব্য সাংবাদিক সমাজকে ক্ষুব্ধ করেছে। তিনি তথ্যমন্ত্রী হয়ে জাতীয় সংসদে ভুল তথ্য দিয়েছেন। আমাদের কাছে থাকা তথ্যমতে সারাদেশে এ পর্যন্ত অর্ধশতরও বেশি সাংবাদিক ৫৭ ধারার শিকার হয়েছেন। এখনও প্রতি সপ্তাহে একের পর এক মামলা হচ্ছে। যে অবস্থা শুরু হয়েছে তাতে খুব দ্রুত এর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যাবে।’

মানববন্ধনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানী জানান, গত দুই মাসে সারাদেশে ২২ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে। তাদের ১৯ জনই ক্রাইম রিপোর্টার।

তিনি বলেন, চলতি সংসদ অধিবেশনে এই ধারা বাতিল করতে হবে। তথ্যমন্ত্রী গত কয়েক বছর ধরে ৫৭ ধারা বাতিলের কথা বলছিলেন। যেহেতু সরকার এটি বাতিল করতে সাংবাদিকদের সাথে একমত, সেহেতু দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা উচিত।

ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি খায়রুজ্জামান কামাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আক্তার হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান ও মাহবুব আলম লাবলু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির দফতর সম্পাদক নয়ন মুরাদ, ক্র্যাবের সিনিয়র সদস্য ওসমান গনি বাবুল ও ৫৭ ধারার মামলার আসামি ক্র্যাব সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব প্রমুখ।

এছাড়া ডিআরইউ সাংগঠনিক সম্পাদক জিলানী মিলটন, ক্র্যাব যুগ্মসম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল লতিফ রানা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক শাহীন আলম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার, দফতর সম্পাদক রুদ্র রাসেল, কার্যনির্বাহী সদস্য শাহরিয়ার আরিফ এবং ক্র্যাব ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।