Site icon Aparadh Bichitra

লুটপাটেই শেষ হচ্ছে বিমানের আয়

বছরের পর বছর লোকসানের ঘানি টানছে বিমান। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সরকার নিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেট। অনেকটা সকলের যোগসাজসেই সংন্থাটিকে গলা টিপে মারা হচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদে বিমান নামক প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতির যে চিত্র প্রকাশিত হয়েছে তা ভয়ংকর। সংস্থাটির অভিভাবক বলতে কেউ নেই। এর প্রতিটি বিভাগেই প্রকৃত আয় ও প্রদর্শিত আয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। বিমানের নিজস্ব তদন্তে এসব তথ্য উঠে আসে। তদন্তে দেখা যায় পুকুর চুরি চলছেই। সরকার নিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারের বিপুল অর্থ। গ্রাউন্ড পাওয়ার ইউনিট, এয়ার কন্ডিশন ইউনিট, এয়ার বাস টোবার, কার্গো লোডার, ট্রলি সেবা ইত্যাদি প্রতিটি বিভাগে চলছে অপরধিদের রামরাজত্য। নিরপেক্ষ কোন সংস্থা দিয়ে তদন্ত করে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছিল। সে সুপারিশ মানা হয়নি। ২০১৬ সালে বিমনেরই তদন্তে দুর্নীতির অবিশ্বাস্য চিত্র উঠে আসে। তবে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সিন্ডিকেটের মূল হোতা বিমানের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা বর্তমানে সরকারের একজন সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রীর মেয়ের জামাতা। শাহজালালে প্রতিদিন গড়ে ১২০ টি ফ্লাইট অবতরন করে। একটি বিদেশী উড়োজাহাজে এক ঘন্টা বিদ্যুৎ সার্ভিস নিলে বিমানকে জিপিইউ বাবদ ভাড়া দেয়। এখানে মাসে বিমান প্রকৃত যে আয় করে তা থেকে অনেক কম দেখানো হচ্ছে। বিমানের লিজ বাণিজ্যোরও অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন আগে হঠাৎ আট মাসের জন্য এয়ারবাস লিজে নেয় চড়া দামে। প্রতি বছরই হজের অজুহাতে শেষ মুুহুর্তে চড়াদামে উড়োজাহাজ লিজ নেয় বিমান। এর সঙ্গে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বিমান বংলাদেশ এয়ারলাইন্স ইচ্ছামতো জনবল নিয়োগ দেয়। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কোন অনুমোদন নেয় না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিধি-নিষেধও মানছে না। সম্প্রতি বিমানে এমন সব পদে নিয়োগ হয়েছে যেগুলো সাংগঠনিক কাঠামোতেই নইে-যেমন চিফ ফিন্যানশিয়াল অফিসার, ডিজিএম সিকিউরিটি, জিএম এসকিউ পদ। বিমানের আট শাখায় অস্থায়ী পদে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে ভয়াভহ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে জাল ও ভুয়া ডিও লেটার দিয়ে একটি চক্র নিয়োগ বাণিজ্য করছে। দুষ্টচক্রের অশুভ হাত থেকে বিমানকে বাঁচাতে হবে।