বগুড়ার কাহালু উপজেলার শেখাহারের সেমাইপল্লিতে অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিএসটিআইয়ের (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটশন) অনুমতি ছাড়া এবং অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে লাচ্ছা সেমাই তৈরির দায়ে এ সময় মেসার্স নূর লাচ্ছা সেমাই নামে একটি কারখানার প্রায় দেড় টন লাচ্ছা সেমাই ধ্বংস করা হয়েছে। অবৈধ সেমাই কারখানাটির মালিক মো. রুবেলের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনেই বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কাহালু উপজেলার শেখাহারের ওই সেমাই কারখানায় গতকাল বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন কাহালু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান।
হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিএসটিআইয়ের রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা দেবব্রত বিশ্বাস কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ এনে কাহালু থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
বিএসটিআই সূত্রে জানা গেছে, তাদের কাছে খবর ছিল শেখাহার বাজারে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছিল ‘নূর লাচ্ছা সেমাই’। বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন না থাকলেও কারখানায় উৎপাদিত সেমাই বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কারখানায় সেমাই তৈরির উপকরণ ধোয়া হচ্ছিল পুকুরের দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে। কারিগরেরা খালি গায়ে সেমাই ভাজছিলেন। তাঁদের শরীর থেকে ঘাম ঝরছিল। বিএসটিআইয়ের নাম ভাঙিয়ে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে লাচ্ছা সেমাই তৈরির কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার আবেদন করে বিএসটিআই। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল অভিযান চালানো হয়।
দলের সঙ্গে থাকা দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘অভিযানের সময় আদালতের বিচারকের নির্দেশে ১ হাজার ৫৬৮ কেজি সেমাই জব্দ ও ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত হয়। অভিযানের একপর্যায়ে কারখানার মালিক রুবেল সেখানে হাজির হয়ে সেমাই ধ্বংস না করে জরিমানা করতে বলেন। কিন্তু আদালত সেমাই ধ্বংস করার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় কারখানার মালিক ক্ষিপ্ত হন। তিনি আদালতের সামনেই আমাকে প্রাণনাশের এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।’ এ ব্যাপারে রুবেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই এলাকায় এমন ১০ থেকে ১২টি কারখানা থাকা সত্ত্বেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে শুধু তাঁর কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। এ কারণে তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়েছে। কিন্তু হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।
অবশ্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওই কারখানায় অভিযান চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রমজান মাসের শুরু থেকেই আমরা অভিযান চালাচ্ছি। এমন আরও যেসব কারখানা রয়েছে, সেগুলোতেও অভিযান চালানো হবে।’