বাংলাদেশেও এখন পালন করা যাবে ‘মরুভূমির জাহাজ’ উট।

0
1986

রাজধানীর কমলাপুর বাজার রোডে স্থাপিত একটি খামারে প্রজনন ও প্রতিপালন হচ্ছে এই উটের।উট মূলত মরুভূমির প্রাণী। আর বাংলাদেশ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। মরুভূমির উটের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া একেবারেই অনুকূল নয়। কিন্তু এই প্রতিকূল আবহাওয়াতেই উটের খামার গড়ে তুলেছে সম্রাট মিল্ক প্রোডাক্টস নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ২০০৪ সালে ভারতের রাজস্থান থেকে আনা ১০টি উট নিয়ে খামারটি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এই খামারে ৪১টি উট আছে, যার মধ্যে ২৪টি স্ত্রী এবং ১৭টি পুরুষ উট।

 উট প্রতিপালন সম্পর্কে প্রতিবেদককে খামারের তত্ত্বাবধায়ক সাহার আলী জানান, যেহেতু উট মরুভূমির প্রাণী, তাই তারা প্রথমে খামারের ভেতরে বালু ফেলে কৃত্রিম মরুভূমির আবহ তৈরি করেছেন। এখানে উটগুলো সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। উটের খাবার সম্পর্কে তিনি বলেন, শুষ্ক মরু অঞ্চলের প্রাণী উটের খাদ্যাভ্যাস একেবারেই সাদামাটা। এদের খাবারের চাহিদা খুব বেশি নেই। অল্প পরিমানে খড়, ঘাস ও পানিই এদের জীবনধারণের জন্য যথেষ্ট। সাধারণত একটি স্ত্রী উট ১৩ মাসে একটি করে বাচ্চা দেয়। ৩/৪ বছর বয়সে একটি বাচ্চা পরিণত হয়ে ওঠে, যা থেকে মাংস এবং দুধ পাওয়া যায়। তিনি উট প্রতিপালনের ব্যয় সম্পর্কে বলেন, গড়ে একটি উটের জন্য মাসে একহাজার করে টাকা ব্যয় হয়। প্রাপ্তবয়স্ক একটি উটে ১০ থেকে ১৪ মণ মাংস পাওয়া যায়। একটি স্ত্রী উট প্রতিদিন ১০ থেকে ১৪ লিটার দুধ দেয়। দেশের বাজারে প্রাপ্তবয়স্ক একটি উট আট থেকে দশ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। জবাই করা উটের মাংস প্রতি কেজি ১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। দুধের দাম প্রতি লিটার ৪০০ টাকা।তিনি বলেন, দেশে উট প্রতিপালন ও প্রজনন একটি লাভজনক প্রকল্প হতে পারে। মাংস এবং দুধ ছাড়াও উটের চামড়াও বিক্রয়যোগ্য পণ্য। উটের চামড়া টেকসই হওয়াতে এর দামও অনেক বেশি। সরকার যদি আগ্রহী উদ্যোক্তাদের উটের প্রতিপালন ও প্রজননের ব্যাপারে সহযোগিতা করে, তবে উটের খামারও কর্মসংস্থানের একটি বিশাল ক্ষেত্র হতে পারে বলে মনে করেন এই উট খামারী।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one + 12 =