Site icon Aparadh Bichitra

জার্মানের টেলিভিশন চ্যানেল ডয়চে ভেলের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এস এম মোরশেদ। লাইসেন্স পেয়ে গেলেই ভেজাল ওষুধ উৎপাদন শুরু হয়

ডয়চে ভেলে জার্মানির একটি আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল। ডয়চে ভেলে বাংলাদেশের জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান এস এম মোরশেদ এর একটি একান্ত সাক্ষাতকার প্রকাশ করেন ২৮শে মার্চ ২০১৭ সালে। যা হুবহু প্রকাশ করা হলো। বাংলাদেশে ভেজাল ওষুধ নির্ধারণ করার মতো জনবল ও কার্যকারিতা নেই। কোম্পানিগুলো মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন করে লাইসেন্স নেয়, পরে নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহার করে। জানান জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এস এম মোরশেদ।এস এম মোরশেদ, জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান
ডয়চে ভেলে: আপনারা ভেজাল ওষুধ নিয়ে বহুদিন ধরে কাজ করছেন? বাংলাদেশে ভেজাল ওষুধের দৌরাত্ম্য এত বেশি কেন?
এসএম মোরশেদ: বাংলাদেশে ভেজাল ওষুধ নির্ধারণ করার মতো সরকারের পক্ষ থেকে যে জনবল রয়েছে, তা যথেষ্ট নয়? একেবারেই অপ্রতুল? সেজন্য ভেজাল প্রতিরোধে গত প্রায় আট বছর ধরে কাজ করছি আমরা? আমরা ভেজাল খাদ্যসামগ্রি ও ওষুধ তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচেতন করার জন্য জেলায় জেলায় প্রচারণা চালাচ্ছি? এ সব প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়ে কথা বলছি? আসলে সব কিছুতেই তো ভেজাল? যে কোনো ওষুধ কোম্পানিতে গেলে দেখবেন যে, তারা যখন লাইসেন্সটা নেয়, তখন মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন করেই লাইসেন্সটা নেয়? কিন্তু লাইসেন্স পাওয়ার পর, তারা আর মানসম্মত ওষুধ তৈরির দিকে খেয়াল রাখে না? তখন নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে ওষুধ উৎপাদন করে? ফলে এর ভুক্তভোগী হন সাধারণ মানুষ? অথচ সাধারণ জনগণ পয়সা দিয়েই এই ওষুধ কিনছেন? অথচ তাঁদের রোগ প্রতিরোধে তা কাজে আসছে না? তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন?ভেজাল ওষুধের কারণে শারীরিক অসুস্থতা বা মৃত্যুর ঘটনা কি ঘটে? এর কোনো পরিসংখ্যান আছে আপনাদের কাছে?
হ্যাঁ, আমাদের কাছে তথ্য আছে? সেসব তথ্য নিয়ে আন্দোলন করার কারণে প্রায় ৫২ টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার নোটিশ পাঠিয়েছে? ২০টি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে?
কোন লক্ষণগুলো দেখে বোঝা যায় যে ওষুধগুলো ভেজাল?
খোলা বাজারে বিশেষ করে চর্ম এবং যৌন রোগের ভেজাল ওষুধ বিক্রি হয়ে থাকে? এগুলো খেলে ক্যানসারের উপসর্গ দেখা দেয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়? এ ধরনের নিম্নমানের ওষুধ খেয়ে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে? কিন্তু এগুলো নিয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করে না? বাংলাদেশে চিকিৎসা নিয়ে ব্যবসার কারণে এ সব ভেজাল ওষুধ খেয়ে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়? ভেজাল ওষুধের কারণে শারীরিক অসুস্থতা বা মৃত্যুর ঘটনা কি ঘটে? এর কোনো পরিসংখ্যান আছে আপনাদের কাছে?
হ্যাঁ, আমাদের কাছে তথ্য আছে? সেসব তথ্য নিয়ে আন্দোলন করার কারণে প্রায় ৫২ টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার নোটিশ পাঠিয়েছে? ২০টি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে?
কোন লক্ষণগুলো দেখে বোঝা যায় যে ওষুধগুলো ভেজাল?
খোলা বাজারে বিশেষ করে চর্ম এবং যৌন রোগের ভেজাল ওষুধ বিক্রি হয়ে থাকে? এগুলো খেলে ক্যানসারের উপসর্গ দেখা দেয়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়? এ ধরনের নিম্নমানের ওষুধ খেয়ে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে? কিন্তু এগুলো নিয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করে না? বাংলাদেশে চিকিৎসা নিয়ে ব্যবসার কারণে এ সব ভেজাল ওষুধ খেয়ে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
দেশে আগাছার মতো ক্লিনিক গজিয়ে উঠছে, সেখানে ভেজাল ওষুধের দৌরাত্ম্য কতটা?
সরকারি হাসপাতালগুলোতে কিছু ওষুধ দেয়া হয়? আর বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয় বেশি? ছোটখাটো বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে প্রায় ৯০ ভাগ ওষুধই ভেজাল?
গ্রাম না শহর? কোথায় ভেজাল ওষুধ বেশি বিক্রি হয়?
ওষুধ যে ভেজাল হতে পারে গ্রামের মানুষ তা চিন্তাও করতে পারেন না? তাঁদের কল্পনাতেও আসে না এটা? শহরের মানুষ এ বিষয়ে কিছুটা সচেতন? শহরে কিছুটা মনিটরিংও হয়? ওষুধ কোম্পানিগুলো গ্রামে-গঞ্জে এই ওষুধ ছড়িয়ে দেয় এবং চিকিৎসকদের উপঢৌকন দেয়, যাতে তাঁরা প্রেশকিপশনে এই ওষুধের নাম লেখেন? তাছাড়া গ্রামের অনভিজ্ঞ মানুষদের ওষুধের দোকানের কর্মচারীরা ওষুধ দিয়ে থাকে কোনো প্রেসক্রিপশন ছাড়াই? তারাই বলে দেয় কোন রোগের কী ওষুধ?
ভেজাল ওষুধের কারণে গর্ভবতী নারীরা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন?
হ্যাঁ, তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন? কিন্তু হাসপাতালগুলো এগুলো চেপে রাখে, যাতে তা গণমাধ্যমে না আসে?
এর প্রতিকার কী?
প্রতিকার পাওয়ার জন্য জনসচেতনতার বিকল্প নেই? তাই আমরা জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি? আমরা বিভিন্ন সেমিনার করছি? যে সব কোম্পানি সরকারের ছত্রছায়ার আছে, তারা আমাদের পাত্তা দিতে চায় না? তারা পেশী শক্তি ব্যবহার করে আমাদের এই সচেতনতা বৃদ্ধি রোধ করার চেষ্টা করে? আসলে বাংলাদেশে যে আইন আছে, সেই আইনেরও প্রয়োগ নেই?

http://www.dw.com/bn