প্রতিবন্ধী দুখু মিয়া পায়ে লিখেই অবাক করে দেয় উপজেলা কর্মকর্তাদের

0
797

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
পা দিয়ে লিখে অবাক করে দিলো শারীরিক প্রতিবন্ধি দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র দুখু মিয়া। সে রৌমারী উপজেলার যাদুুরচর ইউনিয়নের বকবান্দা গ্রামের আলমাজ আলীর ছেলে। তার মা গোলেনুর বেগম। গতকাল তার বাবা দুখু মিয়াকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। প্রতিবন্ধি শিশুটিকে ইউএনওর টেবিলে বসিয়ে খাতা ও কলম দিলে সে পা দিয়ে স্বাচ্ছন্দে ইংরেজি ও বাংলায় তার জন্মগত ঠিকানাসহ সব কিছুই সুন্দর ভাবে লিখে দেন। এসময় উপস্থিত সকলেই তার লেখনি দেখে অবাক হয়ে যায়।

সমাজ সেবা অধিদপ্তরের রৌমারী উপজেলা সমাজ কর্মি আব্দুল্লাহহেল কাঁফীকে, সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম, প্রতিবন্ধী দুখু মিয়ার প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন জানালে। সমাজ কর্মি আব্দুল্লাহহেল কাঁফী সাথে সাথে আমলে নিয়ে প্রতিবন্ধী দুখু মিয়ার প্রতিবন্ধি ভাতা প্রদান করেন। এসময় উপস্তিত ছিলো, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায়, মজিবুর রহমান উপজেলা চেয়ারম্যান, আরও উপস্থিত ছিলেন, দাঁতভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলম, চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক মন্ডল, সমাজসেবা অধিদপ্ত কার্যালয়ের সমাজকর্মী আব্দুল্লাহহেল কাফী, সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম, ও অত্র এলাকার গন্যমান্যব্যক্তিবর্গগন।

দুখু মিয়া তার বাবা মায়ের খুবই আদরের প্রথম সন্তান। মায়ের গর্ভ থেকে ভুমিষ্ট হওয়ার পর ভালোই ছিল। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস । শিশুটির যখন তিন বছর বয়স, তখন থেকেই সে আস্তে আস্তে শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। হাটতেও পাড়েনা এবং কি বসতেও পারেনা, যখন মা বাবা তাকে খাওয়া ঠিক সেই সময় সে খায়। এভাবেই ওই শিশুটির বর্তমান জীবন চলার জীবন খেলা। তবে যে কেই তার পায়ের লেখনি দেখলেই ইচ্ছা হবে দুখু মিাকে সাহায্য করি। এমনি একজন প্রতিবন্ধী ভাবার মতো একটা কিছই মনে হয়। এর কারনটা এমন যে অনেক ভালো ভালো ঘরের সন্তান রয়েছে সুসাস্থ্যর অধিকারি কিন্তু এতো ভালো লেখা তারা লেখতে পাড়ে না। এই অবাক প্রতিবন্ধী দুখু মিয়া সেটি পাড়ে তবে এইসব প্রতিবন্ধীকে আমরা সবাই আপন করে নেই। অভাব-অনাটনের কারনে উন্নত চিকিতসা করাতে পারেননি।
তবুও স্থানীয় রৌমারী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রৌমারী হতে উন্নত চিকিতসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কুড়িগ্রামেও শিশুটির চিকিতসা হয়নি। অভাব-অনাটনের কারনে চিকিতসার খরচ যোগাতে না পেরেই হতাশায় পড়ে আবার, বাড়িতে ফিরিয়ে আসে। এরপর দুখু মিয়া ধীরে ধীরে পঙ্গু হয়ে যায়।
পাড়ার ছেলেদের মতো সেও মানুষের মতো মানুষ হতে চায়। স্কুলে গিয়ে অন্যানদের মতো শিক্ষক হতে চায় প্রতিবন্ধী দুখু মিয়া। ফলে তার বাবা বকবান্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। বার্ষিক পরীক্ষায় সে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়। দুখু মিয়া পড়ালেখা মাধ্যমে ভালো চাকরী করে নিজে স্বাবলম্বী ও বাবা মাকেও স্বালম্বী করে বাবা মার কষ্ট দুর করতে চায়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 − 2 =