Site icon Aparadh Bichitra

একটি অসহায় মেয়ের বাঁচার আকুতি

Exif_JPEG_420

রেজাউল ইসলাম (তুরান) রূপসা প্রতিনিধি:
একটি মেয়ে নাম আরিফা খাতুন, বয়স মাত্র (১৮) সে থাকত আলাইপুরের শাহানা পারভীন

 

লাখীদের বাড়িতে। তার স্বামী গফ্ফর শেখ একজন সামান্য চাকুরিজীবী। আরিফা তাদের বাড়িতে অনেক বছর যাবৎ আশ্রয়ীতা ছিল। সে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে আজ তার ঠিকানা হয়েছে রূপসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ একটি মহিলা বেডে। মেয়েটিকে বিভিন্ন রোগে প্রায় শেষ করে দিচ্ছে। সে যে সকল রোগে আক্রান্ত তার নাম হলো- হাঁপানির সমস্যা, লিভারে সমস্যা, বাম পাশের কিডনীর সমস্যা, হার্টের সমস্যা, রক্ষ শূন্যতা, শ^াস কষ্টের সমস্যা, যা তাকে প্রায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একজন ধনী লোকের যদি শরীরে কোন প্রকার সমস্যা দেখা দেয় তখন তিনি বড় বড় ডাক্তার দেখান যদি দেশে কাজ না হয় তবে বিদেশে ও চিকিৎসার জন্য যাই। কিন্তু আরিফা তার জন্মদাতা পিতামাতা কে তা ও সে জানে না। যে তাকে বড় বড় ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করাবে। কিন্তু মেয়েটি বাইরে ভিক্ষা করে চিকিৎসার খরচ যোগাতে চেষ্টা করে কিন্তু সে অসফল। কারন একটি বড় ডাক্তার দেখাতে গেলে তাদের ভিজিট দিতে হয় ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্ত সে যা ভিক্ষা করে পাই তা দিয়ে কোন বড় ডাক্তার দেখানো সম্ভব নয়। যার কারনে অবশেষে আরিফা শেষ আশ্রয় নিয়েছে হাসপাতালে। একটি অসুস্থ্য রোগী যে খাদ্য খাবার খাই তার কিছুই কিনে খেতে পারে না সে কারন টাকার প্রয়োজন। সে যে টাকা প্রতিদিন ভিক্ষা করে পাই তা দিয়ে তার ঔষধ কেনা সম্ভব হয় না। এ ব্যাপারে তার আশ্রয়দাতা শাহানা পারভীন লাখী এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আরিফা খুবই ভালো একটি মেয়ে। আমার বাড়িতে সে যতদিন থেকেছে এমন কোন কাজ করিনাই যাতে আমি কোন প্রকার মনে কষ্ট পাই। কিন্তু সেই মেয়েটির জন্য আজ আমার খুবই খারাপ লাগে। কারন দিনে দিনে আরিফা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। তিনি আরও বলেন যখন ভিক্ষুক মুক্ত রূপসা উপজেলা গড়ার জন্য যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় এই পদক্ষেপে আরিফা ২,০০০ (দুই হাজার) টাকা ও ৫টি মুরগি তাকে দেওয়া হয়। কিন্তু আরিফার চিকিৎসার জন্য মাত্র ২,০০০/- (দুই হাজার) টাকা কিছুই নয়। তার যে রোগ হয়েছে তার এক একটির রোগের জন্য মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে। আমার যতটুকু সামর্থ আছে আমি ততটুকু তার জন্য করার চেষ্টা করছি। আরিফার জন্য কয়েকবার প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করা হলেও কোন প্রতিকার পাইনি সে। যদি সে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পেত তাহলে মেয়েটি একটু ভালো চিকিৎসা পেতে পারত। এ ব্যাপারে আরিফার সাথে কথা বলা হলে সে বলে আমি বাঁচতে চাই, আমার যে ঔষুধ কেনা লাগে তা আমি ঠিকমতো কিনতে পারি না। আমার শরীরে আর এতটুকু শক্তি নেই যে আমি মানুষের দারে দারে হাত পাতব। আমাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার, নার্স এবং অন্যান্য কর্মচারীরা আমাকে বিভিন্ন সময় টাকা দিয়ে সহায়তা করে। যার কারনে আমি দু একটি ঔষুধ কিনে খেতে পারি। যদি সরকার আমার দিকে একটু দয়া করে একটি ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয় তবে আমি সারা জীবন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করব। আরিফা বলে আমার থেকে অনেক সুস্থ্য মানুষ বিভিন্ন ভাতা কার্ড পেয়ে থাকে কিন্তু আমি পিতামাতা ছাড়া অসহায় মেয়ে কোন সাহায্য সহযোগীতা পাই না। এ ব্যাপারে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পরিবার পরিকল্পনার কর্তকর্তা ডাঃ কুলসুম আরা এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন মেয়েটি যদি একটু উন্নত চিকিৎসা পাই তাহলে সে অনেকটা সুস্থ্য হয়ে উঠবে। তবেই সে আবার নিজের মতো বাঁচতে পারবে।