সমাধানের পথ খুঁজছে ইসি, আনিসুলের সিটিতে ভোটে জটিলতা

0
770

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে এ সিটির মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ১ ডিসেম্বর থেকে পদটি শূন্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই সিটিতে মেয়র উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের আইনী

বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু নতুন আরো ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় এবং সে অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করায় করায় এ সিটিতে নির্বাচন করায় কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ জটিলতা এড়াতে সমাধানের পথ খুঁজছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এর আগে (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সাথে নতুন ৩৬টি ওয়ার্ড যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. শহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ২০ আগস্ট এ সংক্রান্ত গেজেট ইসিতে পাঠানো হয়। সূত্র জানায়, এই সিটিতে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড (সীমানা বাড়ানোর ফলে বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, বেরাইদ, উত্তরখান দক্ষিণখান, ফায়দাবাদ, নলভোগ, দিয়াবাড়ী, কামারপাড়ার বিভিন্ন মৌজা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এলাকা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়) যুক্ত হওয়ায় এবং সে অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ ও ভোটার তালিকায় তৈরি করায় এ জটিলতার তৈরি হয়েছে। কারণ নতুন ওয়ার্ডগুলো যুক্ত হওয়ার পর পুরোনো ওয়ার্ডগুলোর কিছু কিছু অংশ নতুন ওয়ার্ডে যুক্ত হয়ে গেছে। এবং সে অনুযায়ী ভোটার তালিকাও প্রণয়ন করা হয়েছে। কিভাবে বিষয়টির সমাধান করা যায় তা নিয়ে এরই মধ্যে কমিশনে আলোচনাও হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলে হলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, স্থানীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশন আলোচনার মাধ্যমে কিভাবে সমাধান করা যায় সেটি দেখবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধনের প্রয়োজন হলে সেটি সংস্কার করে নির্বাচনের প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইসি সূত্র জানায়, সিটি কর্পোরেশনের সাথে নতুন কোনো ওয়ার্ড যুক্ত হলে কোন প্রক্রিয়ায় সেগুলোতে নির্বাচন হবে এ সংক্রান্ত কোনো বিধান নেই। এছাড়া কত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে এটাও বলা নেই। তাছাড়া ঢাকার দুই সিটিতে ভোটের দুই বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখন নতুন এসব ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন হলে সেগুলোর মেয়াদ কতদিন হবে? এরা কি ৫ বছর থাকবে নাকি এই সিটির মেয়াদ ৩ বছরের মতো আছে সেটি থাকবে? সূত্র আরো জানায়, যদি কোনো ইউনিয়নে নতুন কোনো ওয়ার্ড যুক্ত হয়; তাহলে একটি বিধান রয়েছে পূর্বতন প্রতিনিধির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে সেখানে সাধারণ নির্বাচন করা যাবে না। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে এসব কিছু বলা নেই। তাই এ সংক্রান্ত আইন-বিধি সংস্কার করা ছাড়া নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন আনিসুল হক। লন্ডনে সাড়ে চার মাসেরও বেশি সময় চিকিত্সাধীন থাকার পর ওয়েলিংটন হাসপাতালে ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে  মৃত্যুবরণ করেন তিনি। রোববার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর কারণে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন), আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৫ (ঙ) মোতাবেক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ ১ ডিসেম্বর থেকে শূন্য ঘোষণা করা হল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সহকারি সচিব মো. রাজীব আহসান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী সিটি করপোরেশন শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসেবে ১ তারিখ থেকে ডিএনসিসিকে শূন্য ঘোষণা করা হলে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই সিটিতে নির্বাচক করতে হবে।’ ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৩৬ টি সাধারণ ও ১২ টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৫৭ টি সাধারণ ও ১৯ টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হয়। পরে স্থানীয় সরকার বিভাগ এ দুই সিটি কর্পোরেশনের পাশ্ববর্তী ৮ টি করে মোট ১৬ টি ইউনিয়ন ভেঙে সিটি কর্পোরেশনের এলাকাভুক্ত করে গত ২৬ জুলাই গেজেট প্রকাশ করে। এতে ঢাকা উত্তরের সাথে নতুন করে ১৮ টি ওয়ার্ড যুক্ত করা হয়। নবগঠিত এলাকা নিয়ে এ সিটিতে মোট সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা এখন ৫৪ টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৮ টি। একইভাবে দক্ষিণের সাথে নতুন ১৮ টি ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় এ সিটিতে এখন মোট সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫ টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সংখ্যা ২৫ টি।

 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

sixteen + 12 =