আবারও দেশি পিয়াজের দাম বেড়েছে

0
767

লাগামহীনভাবে পিয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে দেশি পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এ ভোগ্যপণ্যের দাম অব্যাহতভাবে বেড়ে চলছে বলে ব্যবসায়ীদের মন্তব্য। তবে অসাধু

ব্যবসায়ীদের কারসাজির ফলে সব ধরনের পণ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল ও কাওরানবাজারসহ কয়েকটি কাঁচাবাজারে ব্যবাসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে বাজারদরের এসব চিত্র দেখা গেছে। হাতিরপুল কাঁচাবাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী আনিসুল ইসলাম একদিন আগে শনিবার প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ বিক্রি করেছেন ১৩০ টাকায়।

আর সেই পিয়াজ গতকাল ক্রেতাদের কাছে কেজিতে ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করেছেন ১৪০ টাকা। আর আমদানি করা বড় আকারের লাল পিয়াজ বিক্রি করেছেন ৯০ টাকা। হঠাৎ করে একদিনে কেজিতে ১০ টাকা বাড়ার কারণ জানতে চাইলে হাতিরপুলের এ ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে পিয়াজের চরম ঘাটতি। দেশি পিয়াজ যা সংরক্ষণে আছে তা বেশি দামে কিনে এনে লাভে বিক্রি করাতে পিয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে যতদিন পর্যন্ত না নতুন পিয়াজ আসে ততদিন পর্যন্ত দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেন আনিসুল ইসলাম। অব্যাহতভাবে পিয়াজের দাম বৃদ্ধিতে চরম নাখোশ একই বাজারের মধ্যম আয়ের ক্রেতা ইব্রাহীম মণ্ডল। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের মতো অল্প আয়ের মানুষের রক্ত চুষে ব্যবসায়ীরা পিয়াজের মতো লাল হচ্ছে। বাজারে যে যেভাবে পারছে সেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে রাজধানীর সবচেয়ে বৃহৎ কাঁচাবাজার কাওরানবাজারে কেজিপ্রতি দেশি পিয়াজ কেনাবেচা হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। আর আমদানি করা পিয়াজের দাম ছিল ৮০-৮৫ টাকা। কাওরানবাজারের ব্যবসায়ী ওপেন্দ্র কুমার বলেন, দেশে পিয়াজের আমদানি কম। বাজারে পিয়াজের ঘাটতির কারণেই পিয়াজের দাম বাড়ছে। তবে নতুন পিয়াজ আসা শুরু হলেই দাম কমে যাবে বলে জানান তিনি।
পিয়াজের পাশাপাশি ধীরে ধীরে বাড়ছে চালের দাম। এতে ক্রেতাদের মধ্যে দেখা গেছে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া। হাতিরপুলের ভাড়ায় গাড়িচালক আশরাফুর ইসলাম বলেন, যে কয় টাকা কামাই করি তা দিয়ে সদাই করা কষ্ট হয়ে যায়। সদাই কমিয়ে দিয়েও বাজার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে হাতিরপুল বাজারে খুচরা ও পাইকারি চাল বিক্রেতা তারেকুল ইসলাম জানান, সরকারের আমদানি করা চালের মজুদ শেষের দিকে। ফলে চালের দাম দুয়েক টাকা করে এখন বাড়তে থাকবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। হাতিরপুল ও কাওরানবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি ভালো মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা। মধ্যম মানের মিনিকেট চাল ৫৮ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৩ টাকা। এ ছাড়া গতকাল মোটা/স্বর্ণা চাল বিক্রি হতে দেখা গেছে ৪৬ টাকা ও আটাশ ৫৪-৫৫ টাকা। আর স্থিতিশীল রয়েছে অন্যান্য সব ধরনের চালের দাম।
এদিকে শীতকালীন হাতেগোনা কয়েকটি সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেলেও অমৌসুমী সবজি বিক্রি হয়েছে চড়া দামে।
কাওরানবাজারের চেয়ে হাতিরপুল কাঁচা বাজারে সব ধরনের সবজিতে মানভেদে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। হাতিরপুল বাজারে প্রতিপিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা। প্রতিকেজি শীতকালীন সবজি শিম, ধনিয়া পাতা ও বটবটি বিক্রি হয়েছে ৫০-৮০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিকেজি পটোল, করলা, ঝিঙ্গা ও গাজর বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকা। প্রতি পিস লাউ ও মিষ্টি কুমড়ার দর ৬০ ও ৭০ টাকা। আর সব ধরনের শাকের আঁটি মানভেদে বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৫-২৫ টাকার মধ্যে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

16 + one =