Site icon Aparadh Bichitra

ফেনীতে সর্বাত্মক হরতাল চলবে, হত্যার দায় স্বীকার করা আসামীদের খালাস দিলে

হাজারী তার মাসিক ভাষণটি ১৪ই ডিসেম্বর দিয়েছিলেন। এর আগে এই মাসিক ভাষণটি মাসের প্রথম সপ্তাহে দিয়ে দিতেন। এই বিলম্ভের কারণের কৌফিয়ত দিতে দিয়ে তিনি বলেন, তার চোখের একটি জটিল অপারেশন হয়েছিল। অপেরেশনটি ছিল কম্বাইন্ড গুলোকুমা ও ছানি অপারেশন একসাথে হয়েছিল। ড. দ্বীন মোহাম্মদ অপরেশনটি করেছিলেন। এছাড়া এ

মাসের প্রথম দিকে বিপিএলের খেলা চলমান ছিল তাই তিনি বুদ্ধিজীবি দিবসকেই বেচে নিয়েছিলেন। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবিদের প্রতি পরম শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে ভাষণটি শুরু করেন। বুদ্ধিজীবিদের সঙ্গে তিনি যুবলীগ নেতা সম্রাটের পিতাকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তার পিতার সঙ্গে হাজারীর কিছু স্মৃতিচারণ করেন। তবে সম্রাট পরশুরামের জানাজায় বিশেষভাবে দুই-একজনের নাম ধরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অথচ ঢাকায় উপস্থিত মন্ত্রীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানানোয় হাজারী দুঃখপ্রকাশ করেন। তারপরে রহমান বিকম ও আরজুর সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে কথা বলেন। প্রথমে আরজু একটি সাংবাদিক সম্মেলণ করে সেন্ডিকেট নেতা ও নাসিমের বিরুদ্ধে কিছু কথা বলেন। এটি মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছিল। পরে বিভিন্ন মহলে কিছু প্রতিক্রিয়াও হয়েছিল। আরজুর সাংবাদিক সম্মেলনকে সামাল দিতে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করেন রহমান বিকম ফেনীতে। তিনি আরজুর ব্যাপক সমালোচনা করেন। তবে সাত মিনিটের এই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা বিকমকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। নাসিম কে? এইরূপ প্রশ্নের উত্তরে বিকম বলেন উনি ফেনী জেলা থেকে কেন্দ্রের জন্য এক নম্বর কাউন্সিলার এবং কেন্দ্রীয় নেতা। আসলে এক নম্বর কাউন্সিলার গঠনতন্ত্র মোতাবেক শুধুমাত্র জেলা কমিটির সভাপতি কাউন্সিলার হয়ে থাকেন। অপরদিকে কোন কমিটির একটি সদস্যও না থেকে কি করে কেন্দ্রীয় নেতা হলেন এই প্রশ্নের কোন জবাব বিকম দিতে পারেনি। এই সম্মেলণটি বিকমদের জন্য বুমেরাং হয়েছিল। এরপরে ফেনীতে প্রশাসন যে মুক্ত দিবস উজ্জাপন করেছে সেই প্রসঙ্গে হাজারী বলেন এখানে এই অনুষ্ঠানে প্রায় সব কয়জন অমুক্তিযোদ্ধারাই অতিথি হয়েছে এবং পুরো অনুষ্ঠান তারাই নিয়ন্ত্রণ করেছে। এই অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ চৌধুরীকে রাখা হয় নাই। এমনকি আমন্ত্রণপত্রটিতেও তার নাম ছিল না। আমন্ত্রণপত্রে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হান্নানের নামও ছিল না। বাংলাদেশের কোথাও প্রশাসন আঞ্চলিক মুক্তি দিবস পালন করে না। ফেনীতে গত বছর থেকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে এটি করা হচ্ছে। তিনি এসব অনিয়মের ঘোর নিন্দা করেন। কিছুদিন আগে জাফর ইমাম বলেছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় সে একটি পাকিস্তানি যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করেছিল। হাজারী বলেন এসব ইতিহাস বিকৃতি জাতির জন্য মঙ্গলজনক নয়। তিনি বলেন আমি ও জাফর ইমাম একই জায়গায় কাজ করেছি। সেখানে এইরূপ কোন ঘটনাই ঘটেনি। কারণ তখন যোদ্ধাদের হাতে বিমান বিধ্বংসী কামন ছিল না। সাধারণ গুলি মিক বিমানের কাছে গেলেই পাউডার হয়ে যায়। তবে ওই সময়ে একটি বাড়ির খড়ের চিনে আগুন লাগিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছিল বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। বিমানের ধ্বংসাবশেষ তো যাদুঘরে থাকার কথা। যুদ্ধের পর ৪৬ বছর পার হয়ে গেল অতীতে কখনো এই কথাটি বলা হলো না এখন কোন উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে তা বোঝা মুশকিল। নিজামের বউয়ের এখন কি অবস্থা লোকজন প্রায়ঃ হাজারীকে জিজ্ঞেস করে এই প্রসঙ্গে হাজারী বলেন সেটি জানতে হলে নিজামকেই জিজ্ঞেস করুন সে ভাল বলতে পারবে। নিজামের মামলা প্রসঙ্গে হাজারী বলেছেন এখন কোর্ট বন্ধ হয়ে গেছে সুতরাং জানুয়ারীতে আবার মামলাটি চালু হবে বলে আশা করা যায়। একরাম হত্যা মামলা প্রসঙ্গে হাজারী বলেন প্রচার হচ্ছে এই মামলার সকল আসামী খালাস পেয়ে যাবে। এ ব্যাপারে হাজারী বলেন যারা নিজেরা আদালতে পরিষ্কারভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছে যাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যি হয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে তাদেরকে খালাস দিলে ফেনীবাসীকে অবশেষে হরতালের মত কঠোর কর্মসূচীর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন। এদিকে আলাউদ্দিন নাসিম মেয়র হবে এমন কিছু প্রচারণা দেশের পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাজারী বলেন তা হলে আমিও প্রতিদ্বন্দ্বীতা করব। তবে ফেনীর লোক হিসেবে নাসিম নমিনেশন পেলে হাজারী খুশি হবেন এমনটাই বলেছেন। হাজারী সব শেষে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, খালেদা জিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ফেরার সময় বিএনপি মহিপালে যে তাণ্ডব চালিয়েছে সেটি দলের জন্য দুঃখজনক ও লজ্জাস্কর। দুই দিন আগে ফালাইয়া মাদ্রাসায় ছাত্রলীগের সম্মেলন করতে গিয়ে শিবিরে হাতে মার খেয়ে ফিরে এসেছে এসব দলের জন্য কোন সুখকর খবর নয়। সবশেষে নজরুলের একটি কবিতার পংক্তি দিয়ে হাজারী তার বক্তব্য শেষ করেন।