Site icon Aparadh Bichitra

বছরজুড়ে ব্যাংকিং খাতে লুটপাট

বছরজুড়ে সর্বাধিক আলোচনায় ছিল ব্যাংকিং খাত। শুরুটা হয় ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় বদল দিয়ে। আর বছরের শেষ দিকে এসে লুটপাটের কারণে ব্যাংক চালাতে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগে বাধ্য হন ফারমার্স ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পর্ষদের একাধিক সদস্য। এ ছাড়া মালিকানা বদলের কারণে আলোচনায় আসে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকও। বিদায়ী বছরে এসে দেশের ব্যাংকিং খাত আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। সব ব্যাংকেই যেন সুশাসনের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। নামে-বেনামে ইচ্ছামতো অর্থ লুটে নেয়া হয়েছে। সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি ব্যবস্থা আগের চেয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। :

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে সরকারি- বেসরকারি মিলে ব্যাংকের সংখ্যা ৫৭টি। এর মধ্যে বেশিরভাগ ব্যাংকের অবস্থাই খারাপ। আর্থিক অবস্থার অবনতি হওয়া ১৩টি ব্যাংকের মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও বিশেষায়িত ব্যাংক আটটি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কমার্স, ন্যাশনাল, ফারমার্স ও এনআরবি কমার্শিয়ালে পরিস্থিতি কয়েক বছর ধরে খারাপ। এছাড়া বেসরকারি খাতের একাধিক ব্যাংকের মালিকানা বদল নিয়েও নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে আমানতকারীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সেগুলো চালু রাখতে হচ্ছে। অন্যদিকে বিদ্যমান বেসরকারি চালু ব্যাংকগুলো যেখানে ভালো চলছে না, সেখানে নতুন ব্যাংক অনুমোদনের তোড়জোড় চলছে। : বিদায়ী বছর কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় আকস্মিক পরিবর্তন ও খেলাপি ঋণের কারণে দেশের ব্যাংকিং খাত ছিল আলোচনায়। ঘটেছে একের পর এক অস্বাভাবিক বড় বড় কেলেঙ্কারি। এর মধ্যে সোনালী ও বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি ইত্যাদি। সম্প্রতি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এর আগে ইসলামী ব্যাংক মালিকানা পরিবর্তনের ঘটনা ব্যাংকিং খাতকে চিন্তায় ফেলেছে। সর্বশেষ এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিবর্তনেও বেশ প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও আস্থাহীনতা ও চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। এছাড়া নতুন করে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেয়া ব্যাংকগুলোতে পরিচালনা পর্ষদে রদবদলের কারণে অর্থ হরিলুটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ফলে গোটা ব্যাংকিং খাতের প্রতিই আমানতকারীর আস্থা নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। : সূত্র বলছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ দেয়া হয়। এতে সেক্টরটিতে ব্যাপকভাবে দুর্নীতি-লুটপাট হয়। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল ছিল ব্যাংকিং খাতের ‘অন্ধকার যুগ’ বা দুর্দশাগ্রস্ত সময়। এ সময় হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বিসমিল্লাহ গ্রুপের ঋণ জালিয়াতি, বেসিক ব্যাংকে ব্যাপক হারে লুটপাট হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ঋণ অনিয়ম ও রূপালী ব্যাংকেও ঘটে ঋণ জালিয়াতির ঘটনা। এতে ঋণ শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ায় প্রতিবছর সম্পদ আটকে যাচ্ছে ব্যাংকগুলোর। আদায় না হওয়ায় খেলাপি ঋণের পাহাড় জমছে। ঋণ অনাদায়ী থাকায় ব্যাংকগুলোর আয় কমছে। : বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে চলতি বছরের জুন শেষে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ২১০ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ৭৪১ কোটি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৭১০ কোটি টাকা। আর এসব ঘাটতি মেটাতে চলতি বছরের শুরুতে সরকারের কাছে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। : বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের সরকারি ব্যাংক খাত মৃতপ্রায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথাযথ তদারকির অভাবে ব্যাংকিং খাত নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এত দিন সরকারি ব্যাংকের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ থাকলেও এখন তা বেসরকারি ব্যাংকেও ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় দেয়া নতুন কয়েকটি ব্যাংকের টিকে থাকাটাই মুশকিল হয়ে গেছে। ভালো চলছিল বেসরকারি ব্যাংক খাত। কিন্তু সরকারি হস্তক্ষেপে এই বেসরকারি ব্যাংক খাতও অস্থির হয়ে পড়েছে। এছাড়া ব্যাংক খাতের শীর্ষ ব্যক্তিদের মতে, যে পদ্ধতিতে ব্যাংকের পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তাতে গ্রাহকদের আস্থা হারিয়ে যাবে। : এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিও এখন ক্লান্ত। ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে তাদের সুপারিশ এখন বিশাল স্তূপাকার ধারণ করেছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। সংসদীয় কমিটি পরিণত হয়েছে ঠুঁটো জগন্নাথে। অথচ সরকারি ব্যাংকে ৩০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এতে বোঝা যায়, সরকারি ব্যাংক খুবই অপেশাদারভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সেটার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বা অর্থমন্ত্রীই দায়ী। কারণ সরকারি ব্যাংকে পরিচালনা পর্ষদসহ এমডি, চেয়ারম্যান ও ডিএমডিদের নিয়োগ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। তারা সঠিক লোক নিয়োগ দিচ্ছে না বলে সরকারি ব্যাংক সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। এসব খারাপ লোক বছরের পর বছর কাজ করে মন্দমানের খেলাপি ঋণের পাহাড় গড়েছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রশাসনিকভাবে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। : বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সদিচ্ছা না থাকলে কমিশন গঠন করেও লাভ হবে না। কারণ এর আগে পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের রিপোর্ট এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনের রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। তাহলে শুধু কমিশনে কাজ হবে না। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দেশের শীর্ষ বেসরকারি ব্যাংক। মালিকানা পরিবর্তনের পর ব্যাংকটিতে দেখা দিয়েছে তারল্য সংকট। বেড়েছে খেলাপি ঋণ। নতুন পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্যাংকটির ওপর একটি গ্রুপের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকরা অনেকেই ব্যাংকটি থেকে তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে নিচ্ছেন। কমে গেছে রেমিট্যান্স সংগ্রহও। : সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডও (এসআইবিএল) একটি বিশেষ গ্রুপের দখলে চলে গেছে। গত ৩০ অক্টোবর এসআইবিএল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন হয়। ওইদিন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)কে হঠাৎ পদত্যাগ করতে হয়। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের পর পরিচালনা পর্ষদের সভায় এক সঙ্গে ৭ পরিচালক পদত্যাগ করেন। রাজনৈতিক বিবেচনায় লাইসেন্স পাওয়া ফারমার্স ব্যাংকের অবস্থাও শোচনীয়। ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরুর পর বছর না ঘুরতেই ঋণ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে ব্যাংকটি। তারল্য সংকটে পড়ে নিয়মমতো বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংকটি। এ ছাড়া গ্রাহকরা চেক দিয়েও টাকা পাচ্ছেন না। ব্যাংকটি নিয়মকানুন লঙ্ঘন করে ‘ঝুঁকি’ বাড়ায় পর্যবেক্ষক বসানো ছাড়া এই ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাংক চালাতে ব্যর্থ হওয়ায় গত ২৭ নভেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হন ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। এ ছাড়া ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও পরিচালক মাহাবুবুল হক চিশতীকেও পদ ছাড়তে হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষে ফারমার্স ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৩৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিতরণ করা ঋণের ৭.৪৫ শতাংশই খেলাপি। এ ব্যাংকের মূলধনেও ৭৫ কোটি টাকা ঘাটতি হয়েছে। : কোনোভাবেই ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। আর সরকারি ব্যাংক হলে তো কথা-ই নেই। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঋণের নামে ইচ্ছেমতো লুটপাট চলছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই। যার অনন্য দৃষ্টান্ত বেসিক ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর কারণেই অত্যন্ত শক্তিশালী এ ব্যাংকটি আজ দেউলিয়ার পথে। বেসিক ব্যাংক ২০১৪ সালে ব্যাপক লুটপাটের পর ব্যাংকটির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়লে তাকে নিরাপদে পদত্যাগের সুযোগ করে দেয়া হয়। সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা অনিয়মের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে তাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি তোলা হলেও তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যান। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে দুদক ৪ ও ৬ ডিসেম্বর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুদকের ডাকে শুনানিতে অংশ নেন বহুল আলোচিত বাচ্চু। : সর্বশেষ এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডি পদে রদবদল করে পরিচালনা পর্ষদ ঢেলে সাজানো হয়েছে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে পরিবর্তন এসেছে। এক জরুরি পর্ষদ সভায় এসব পরিবর্তন করা হয়। সভায় প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ফরাছত আলীকে সরিয়ে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন তমাল এস এম পারভেজ। সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও ফারমার্স ব্যাংক পরিচালনায় অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করে ব্যাংকগুলোকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়। ইসলামী ব্যাংক নিয়েও সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংক এগ্রেসিভ লোন দিচ্ছে। : সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক জোর অবস্থান নিতে পারতো এসবের বিরুদ্ধে। তাদের ব্যর্থতায় এগুলো হচ্ছে। আর সরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে সরকারকেই দায়ভার নিতে হবে। তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোতে পর্ষদ সদস্যের পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তা ব্যাংক খাতের সুশাসনের জন্য অন্তরায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদের মতে, ব্যাংকের এমডি যদি শক্ত অবস্থান না নেয়, চাকরি হারানোর ভয়ে যদি কাজ করে তবে তা দুঃখজনক। এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন ব্যাংক দেয়া হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজের সমীক্ষাই হচ্ছে বাংলাদেশে এত ব্যাংকের প্রয়োজন নেই। তারপরও অনুমোদন দেয়া হয়। : বছরজুড়ে ব্যাংক খাতের নানা ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্সের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার একটি গণমাধ্যমকে  বলেন, ফারমার্স ব্যাংক আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য বয়ে আনল। তারা গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারছে না, ফলে সব ব্যাংকের জন্য বদনাম হয়ে গেল। বাংলাদেশ ব্যাংক এ খাতের নিয়ন্ত্রক। তবে এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারেনি। সঠিক সময়ে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকটি ঠিক করার উদ্যোগ নেয়া হলে এ পরিস্থিতি  তৈরি হতো না। : অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা যাচ্ছে দুর্বৃত্তদের পকেটে। ফলে লাগামহীনভাবে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। এসব ঋণের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হলেই তা অবলোপন (রাইট অফ) করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব কাজে সহায়তা করছেন ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী ও পরিচালনায় জড়িতরা। আর মূলধন ঘাটতির মাধ্যমে ব্যাংকগুলো দিনের পর দিন পঙ্গুত্বের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে এসব ব্যাংককে বাঁচাতে প্রতিবছরই বাজেট থেকে হাজার হাজার কোটি মূলধন সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সরকারি সংস্থার প্রতিবেদনেও এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এর দায়ভার নিচ্ছে না। কারণ এ ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হাতে।