Site icon Aparadh Bichitra

পাথরের ভিতর আদি গুহা মানবদের আঁকা ছবি

ভারতের কাশ্মীরে গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে একটি পাথরের উপর রহস্যময় চিত্র দেখতে পান পর্যটকেরা। এরপর গবেষকেরা পরীক্ষা করে জানান, সেটি কম করে হলেও ৫ হাজার বছরের পুরনো। পাথর খোদাই করে আঁকা ছবিতে দেখা যায়, সেকালের মানুষেরা পশু শিকার করছে। আদি গুহা মানবদের আঁকা ছবিতে এমন দৃশ্য অনেক রয়েছে।

কিন্তু রহস্য দেখা দেয় অন্যখানে! সেই ছবিতে দেখা যায়, আকাশে দু’টি সূর্য আঁকা রয়েছে।  কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব? আমাদের সৌরজগতে তো একটাই সূর্য! আশপাশেও এমন কোনো সৌরজগত নেই যার আলো দিনের আকাশে দেখা যায়। রাতের বেলাতেও একই কথা প্রযোজ্য। অর্থাৎ পৃথিবীর উপগ্রহ একটি হওয়ার কারণে রাতের আকাশেও দু’টি চাঁদ দেখার প্রশ্নই ওঠে না। তাহলে? আদি মানবেরা নিছক খেয়ালের বশে ছবিটি এঁকেছে এমন যুক্তি মানতে নারাজ বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তাই বলে দু’টি সূর্যকেও মেনে নেয়া সম্ভব নয়! রাসায়নিক উপায়ে পাথর পরীক্ষা করে তারা নিশ্চিতও হয়েছেন যে, সেটি খ্রিস্টপূর্ব ২১০০ থেকে ৪১০০ বছর আগের। আর পাথরটি আবিস্কার হয় ১৯৬০ সালের দিকে। সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, কাশ্মীরের পাথরটি যে সময়ে আঁকা হয়েছে সেই সময় সম্ভবত সুপার নোভা’র মতো ঘটনা ঘটেছিল। ফলে সূর্যের পাশাপাশি আরও একটি উজ্জ্বল আলোকবস্তু সেই সময়ে মানুষ দেখতে পায়। ভারতের পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের অধীনে গবেষণা করা একদল বিজ্ঞানী সম্প্রতি এই দাবি করেছেন। মায়াঙ্ক ভাহিয়ার নেতৃত্বে ওই গবেষক দল দিনক্ষণ পরীক্ষা করে নাকি দেখেছেন, যে সময়ের পাথর চিত্রটি আঁকা হয়েছিল, সেই সময় সৌরজগতের খুব কাছেই সুপার নোভার মতো মহাজাগতিক ঘটনা ঘটে। সেই সুপার নোভার নামও তারা বের করেছেন। তাদের বিশ্বাস এইচবি৯ নামের দুর্লভ মহাজাগতিক মুহুর্ত অবলোকন করেন আদি মানবেরা। ফলে তাদের চোখে আকাশে তখন দুটি সূর্য ছিল, এমনটাই ভাবা স্বাভাবিক। কেননা সেই ঘটনাটি খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ সালের দিকে ঘটে বলেই বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন। মানুষের মধ্যে আধুনিকতার ছোঁয়া সেই সময়টিতে ছিল না বলেই ইতিহাসবিদেরা দাবি করে থাকেন। সেই সময় মানুষ খাদ্য সংগ্রহ এবং পৃথিবী বিভিন্ন বস্তুকে উপাসনার মাধ্যমে দিন নির্বাহ করতো বলেই বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস। পৃথিবীর বাইরে বিভিন্ন মহাজাগতিক ঘটনা সম্পর্কে ধারণা না থাকায় নানা অন্ধ বিশ্বাস সেই সময়ের মানুষের মধ্যে ছিল বলেও বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন। তাই এই পাথর চিত্রটিও সেই কারণেই আঁকা হয়েছে বলে মনে করছেন ভারতের বিজ্ঞানীরা।