উন্নয়নশীল দেশের বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা নিতে বাংলাদেশ সক্ষম বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ

0
633

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, নি¤œআয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে উন্নতবিশ^ থেকে জিএসপিপ্লাসহ সকল বাণিজ্য সুবিধা অর্জনে বাংলাদেশ সক্ষম। উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবার সকল শর্ত পূরণ হবার কারনেই বিশ^ ইকোনমিক ও সোস্যাল কাউন্সিল চলতি বছর মার্চ মাসে বাংলাদেশকে নি¤œমধ্য আয়ের দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল(ডেভলপিং) দেশ হিসেবে ঘোষনা করবে।

 

উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশের পর বাণিজ্য ক্ষেত্রে যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সে জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত। ইতোপূর্বেও বাংলাদেশ তৈরী পোশাক খাতে শিশুশ্রম বন্ধ এবং রপ্তানি ক্ষেত্রে কোটা প্রথা বাতিলের পর যে বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ এসেছিল তা সফল ভাবে মোকাবেলা করে এগিয়ে এসেছে। বর্তমানে তৈরী পোশাক রপ্তানিতে বিশে^ বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। ইউরোপিয়নর ইউনিয়ন, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশে^র বেশির ভাগ উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে। অনেক দেশের সাথে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট(এফটিএ) করে বাণিজ্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। শ্রীলংকার সাথে এফটিএ স্বাক্ষর এখন চুড়ান্ত পর্যায়ে, থাইল্যান্ডের সাথে এফটিএ স্বাক্ষরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার সাথে প্রিফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট(পিটিএ) স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হলে বিশ^বাণিজ্য ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা হবে না, বরং বাণিজ্য আরো বাড়বে। এ জন্য ব্যবসায়ী সমাজকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
মন্ত্রী আজ (৩০ জানুয়ারি) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আবুল কাসেম খানের নেতৃত্বে নবনির্বাচিত পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তাগণের সাথে মতবিনিময় করে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, নি¤œআয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা বাংলাদেশ পূরণ করেছে। প্রথমত ঃ মাথাপিছু আয় ১২৪২ মার্কিন ডলার হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১৬১০ মার্কিন ডলার এবং গড় প্রায় ১৩০০ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয়ত ঃ মানব সম্পদের উন্নয়ন অর্থাৎ দেশের ৬৬ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের ৭২ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয়েছে। তৃতীয়ত ঃ অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার মাত্রা ৩০ ভাগের নীচে হতে হবে, বাংলাদেশে এ মহুর্তে তা ২৬ ভাগ অর্জন করেছে। মন্ত্রীবলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে বিশে^ উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবে। স্তর পরিবর্তনের সময় পাওয়া যাবে তিন বছর, ২০২৪ সালে তা কার্যকর হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশে^র অনেক উন্নয়নশীল দেশ থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। উন্নয়নশীল দেশ কেনিয়ার রপ্তানি ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, শ্রীলংকার রপ্তানি ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, পাকিস্তানের রপ্তানি ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি ৩৫ বিলিয়রন মার্কিন ডলার। অনেক উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশের ধারে কাছেও নেই। বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশে^র মধ্যে বিরল। উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়া বাংলাদেশের জন্য গৌরবের বিষয়। এতে প্রমানিত হয়েছে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি বা দরিদ্র দেশের রোল মডেল নয়। বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় দেশ। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক হতে যাচ্ছি। দেশের ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে, শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে।
এ সময় বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × four =