নোমান মাহমুদঃ সাভারের পৌর এলাকা গেন্ডার কাঁচাবাজার, হেমায়েতপুর বাস স্টান্ড, উলাইল কর্ণপাড়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে লটারীর নামে চলছে প্রকাশ্য জুয়ার আসর। বিভিন্ন প্লাস্টিক ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে লটারীর নামে সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত করে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
গতকাল সরেজমিনে সাভারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে দেখা যায়, অনেকটা বিনা বাধায় চলছে এই অবৈধ লটারীর আসর। রাস্তার পাশে আয়োজন করা অবৈধ এই লটারীর আসরের পাশ দিয়ে পুলিশের টহল গাড়ি তাদের দায়িত্ব পালন করলেও এসকল আসরের প্রতি তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বিভিন্ন লোক-সমাগম স্থানে কোথাও ভ্রাম্যমান ভ্যান, কোথাওবা টেবিল বসিয়ে বিভিন্ন লোভনীয় লেকচার দিয়ে পথচারীদের আকর্ষন করে জমানো হচ্ছে আসর। তারপর ২০ টাকা করে ২০-৩০ জনের কাছে কিছু নাম্বার সংবলিত মোটা কাগজের স্লিপ ধরিয়ে একটি ছোট বাক্স থেকে বেশ কিছু পেচানো কাগজের টুকরা হতে তোলা হচ্ছে একটি কাগজ। তোলা কাগজের টুকরায় লেখা নাম্বারের সাথে লটারীতে অংশগ্রহনকারী কারোও নাম্বার মিলে গেলেই ব্যাস ! ২০ টাকার বিনিময়ে পেয়ে যাচ্ছেন ৫০ কিংবা ১০০ টাকা মূল্যের কোন পন্য সামগ্রী। আর এই লোভে লোভে সাধারন পথচারীদের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও সেখানে ভীড় জমাচ্ছে। গচ্ছা দিচ্ছে সারাদিনের টিফিন কিংবা যাতায়াতের পয়সাটাও। আর সাধারন মানুষকে লোভের জালে ফেলে ১০০ কিংবা ২০০ টাকার পন্য সামগ্রী দিয়ে লটারী নামক জুয়ার আসরের আয়োজকরা প্রতি চক্করে হাতিয়ে নিচ্ছে ৫০০-১০০০ টাকা। প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত অবধী চলা এই লটারী নামক জুয়ার আসরে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। সুত্র বলছে লোক সমাগম বেশি হলে কখনো কখনো এক একটি লটারীর স্টলে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকাও লাভ হয়। সেই হিসাবে দেখা যায় একটি লটারী স্টল থেকে প্রতি মাসে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে নূন্যতম ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা যা বছরে দাড়ায় ২০ লক্ষ টাকার উর্দ্ধে। আবার যে সকল স্থানে এই লটারীর আসর জমানো হচ্ছে সেখানকার আশেপাশের বাসিন্দাদেরও এর কারনে অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। লটারীর লোভে অনেক সময় শিশু কিশোররাও তাদের অভিভাবকের কাছ থেকে বিভিন্ন বাহানা দিয়ে টাকা নিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে এই জুয়ার আসরে। আবার কেউ কেউ মনে করেন এই লটারীর কারনে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত জুয়ার প্রতি হয়ে পড়ছে আসক্ত । এভাবে প্রকাশ্যে রাস্তার পাশে এই অবৈধ জুয়ার আসরের আয়োজন করার পরেও কেন এদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না এবিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এলাকাবাসি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনতিবিলম্বে এই লটারী নামক প্রকাশ্য জুয়ার আসর বন্ধ করার দাবী জানান।