হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য,শীতেই পানিশূন্য তিস্তা

0
744

খরস্রোতা তিস্তা বর্ষায় ফুলে ফেঁপে দু’কূল ভাসিয়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে। হিংস্রো থাবায় ভেঙে নিয়ে যায় ঘরবাড়ি ফসলি জমি ও স্থাপনা। সেই তিস্তা শীত না যেতেই শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।  খেয়া পাড়ে বা মাছ ধরতে বর্ষায় হাজারো নৌকা নিয়ে অবারিত ছুটে চলা মাঝি-মাল্লাদের দৌঁড়-ঝাঁপ থেমে গেছে। পানি আর মাছভর্তি তিস্তার বুকে জেগে উঠেছে ধু ধু বালুচর। জমি জেগে উঠলেও সেচের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ। কেউ কেউ দূর থেকে পানি এনে বাঁচিয়ে রেখেছেন ফসল।

মাছ ধরতে না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন নদী পাড়ের জেলে পরিবারগুলো। নৌকা নয় পায়ে হেঁটেই তিস্তা পাড়ি দিচ্ছে নদী পাড়ের মানুষজন। জানাযায়, ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ঐতিহাসিক এ তিস্তা নদী। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রক্ষপুত্র নদের সঙ্গে মিশেছে এ নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার। ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে সেই দেশের সরকার একতরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় শীতেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী জেলার ১২৫ কিলোমিটার তিস্তার অববাহিকায় জীবনযাত্রা, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেশের অন্যতম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ অকার্যকর হওয়ার উপক্রম হয়েছে।  তিস্তা নদীর উপর নির্মিত তিস্তা রেলসেতু, তিস্তা সড়ক সেতু ও নির্মাণাধীন দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু যেন প্রহসন মূলকভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে ধু-ধু বালুচরের তিস্তার উপর। ব্রিজ থাকলেও পায়ে হেঁটেই পার হচ্ছে অনেকেই। ঢেউহীন তিস্তায় রয়েছে শুধু বালুকনা। তিস্তা নদীতে মাছ আহরণ করে শুটকি ও মাছ বিক্রি করে জীবনযাপন করতেন এ অঞ্চলের জেলেরা। তারাও আজ কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

20 + five =