ইউনিলিভারের মুনাফা বৃদ্ধি

0
616

খাদ্য ও ভোক্তাপণ্য জায়ান্ট ইউনিলিভার বৃহস্পতিবার ২০১৭ সালের জন্য ৬৫০ কোটি ইউরো (৮০৫ কোটি ডলার) মুনাফা দেখিয়েছে। বছরজুড়ে ‘বড় কিছু পরিবর্তন’ ও ক্রাফট হেইঞ্জ অধিগ্রহণের উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পরেও কোম্পানিটি এ বড় অংকের মুনাফা করতে সমর্থ হয়েছে। ইউনিলিভার জানিয়েছে, কোম্পানিটি তাদের ম্যাগনামসহ জনপ্রিয় বিভিন্ন আইসক্রিমের বাজার বাড়ানোর লক্ষ্যে রোমানিয়ার শীর্ষস্থানীয় আইসক্রিম প্রস্তুতকারক বেটি আইসকে কিনে নিয়েছে। অবশ্য এজন্য কত ব্যয় হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি।

গত বছর ইউনিলিভারের বিক্রয়ের ওপর নিট মুনাফা ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫ হাজার ৩৭০ কোটি ইউরোয় পৌঁছেছে। বছরওয়ারি হিসাবে এটি ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। এ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাহী পল পোলম্যান বলেন, নিট মুনাফায় এ অগ্রগতি নির্দেশ করছে যে,  ইউনিলিভারকে আরো বেশি সহনশীল ও কর্মতত্পর ব্যবসা হিসেবে পরিণত করার ব্যাপারে আমরা অগ্রগতি অর্জন করেছি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা একটি সার্বিক পারফরম্যান্সের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। কোম্পানিটি বছরজুড়ে ২০০ কোটি ইউরো সঞ্চয় করতে সমর্থ হয়েছে। পোলম্যান বলেন, আমাদের যে ৬০০ কোটি ইউরো সঞ্চয়ের লক্ষ্য, সেদিকে আমরা ভালোভাবেই এগোচ্ছি। এছাড়া ২০২০ সাল নাগাদ ২০ শতাংশ পরিচালন মুনাফার যে লক্ষ্য, সেটি অর্জন করার ব্যাপারেও অগ্রগতি অর্জন করেছি। রটারডামভিত্তিক ইউনিলিভারের আওতায় বিশ্বব্যাপী ১ লাখ ৬৯ হাজার মানুষ কাজ করছে। কোম্পানিটি ৪০০-এরও বেশি ব্র্যান্ডের মালিক। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ডাভ বিউটি প্রডাক্টস, নর সুপ, লিপটন চা, ম্যাগনাম আইসক্রিম ও মারমাইট। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রাফট হেইঞ্জ ইউনিলিভারের অধিগ্রহণ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এর পর থেকে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কাছে প্রমাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যে, প্রতিষ্ঠানটি নিজে নিজেই আরো ভালো করতে পারবে। কোম্পানি বিশ্লেষক, ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সিমরান জাগদেভ বলেন, তারা যে একাই চলতে পারে, সেটি বিনিয়োগকারীদের বোঝানোর ব্যাপারে ভীষণ রকম চাপে ছিল। তিনি আরো বলেন, এখন ইউনিলিভারের আগ্রাসী অধিগ্রহণ ও নতুন ব্র্যান্ডের উদ্বোধন খুবই লাভজনক হিসেবে দেখা দিয়েছে এবং একটি কষ্টকর বছর বেশ ইতিবাচকভাবে শেষ হয়েছে। কোম্পানিটি ২০১৭ সালে ১১টি কোম্পানি অধিগ্রহণ বা অংশীদারিত্ব কিনেছে। জৈব ও প্রাকৃতিক পণ্যে বিশেষ নজর দিয়েছে তারা। এসবের মধ্যে আছে ব্রাজিলের মাই টেহা অর্গানিক ফুড ও ব্রিটেনের পাকা হার্বস অর্গানিক হারবাল চা। পোলম্যান বলেন, আমরা পোর্টফোলিও বাড়াচ্ছি, যাতে এটা নিশ্চিত করতে পারি যে, লম্বা সময়ের প্রবৃদ্ধির জন্য আমাদের একটি প্লাটফর্ম থাকে। ক্রাফটস হেইঞ্জ অধিগ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিলিভার একটি ৩৫০ কোটি ইউরোর পুনঃকাঠামোর পরিকল্পনা নেয় এবং এর মার্জারিন বিভাগ ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করে। হেইঞ্জের সঙ্গে চুক্তি হলে গ্রুপটির মূল্য দাঁড়াত ১৪ হাজার ৩০০ কোটি ইউরো। সেটি না হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের উদ্বিগ্নতা দূর করতে এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার ইউনিলিভার এক বিবৃতিতে উল্লেখ করে, আমাদের বৈশ্বিক স্প্রেড ব্যবসা বিক্রির ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছার পর আমরা আশা করছি, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি নাগাদ এ খাতে থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। স্প্রেড ব্যবসা বাদে ইউনিলিভারের বিক্রির পরিমাণ ৫ হাজার ৭ কোটি ইউরোতে পৌঁছেছে, যা গত ১২ মাসের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। বিশেষত এশিয়ায় বিক্রি ছিল খুবই শক্তিশালী। চীনে অনলাইনে বিক্রি বেড়ে যাওয়া এবং ভারত ও পাকিস্তানে শক্তিশালী চাহিদার জন্য এশিয়ায় বিক্রি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × five =