কিছু লোভি মানুষের থাবায় বিপন্ন করে তোলা হচ্ছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনস। কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই একের পর এক গড়ে উঠছে বহুতল বাণিজ্যিক স্থাপনা। অবাধে লুট হচ্ছে প্রবাল। শিকার করা হচ্ছে সামুদ্রিক কাছিম ও কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রকার জলজ প্রাণী।
সৈকতের চারপাশে টং দোকানে প্রকাশ্যে বিক্রি হয় প্রবাল, শৈবাল, শামুক, ঝিনুক ও শোভাবর্ধক মাছ। দ্বীপটিকে রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ২০০৯ সালে ২৪ টি সুপারিশ করেছিল। এসব সুপারিশের একটিও বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৯৯ সালে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটিকে পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। যেখানে পর্যটকদের রাত্রি যাপন নিষিদ্ধ ও দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সুপারিশ ছিল সেখানে পর্যটকদের রাত্রি যাপনের জন্য অবৈধভাবে দেড় শতাধিক হোটেল ও রিসোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে। আরও হোটেল গড়ার নামে দ্বীপ দখলের নৈরাজ্য চলছে। সরকারী দলের প্রভাবশালীরা এসব দখলের সাথে জড়িত বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। এক তলার বেশি স্থাপনা নির্মান করা যাবে না বলে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বহুতল অবকাঠামো নির্মানের কারনে দ্বীপটি আবাসন ব্যবস্থার চাপ সইতে পারছে না। এর পরও দ্বীপটির আবাদি জমিতে ঝুলছে নতুন নতুন হোটেলের সাইনবোর্ড। অনেক আবাসস্থল থেকে ময়লা আবর্জনা গিয়ে সরাসরি সমুদ্রে পড়ছে। পর্যটকরাও যেখানে সেখানে ময়লা ও আবর্জনা ফেলছে। পর্যটকবাহী জাহাজ থেকে দ্বীপের পাশে তেল পড়ার কারনে প্রবাল ও শৈবাল ধ্বংস হচ্ছে। পরিবেশ দূষনের কারনে সেন্ট মার্টিনস এর অনেক জলজ প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে জানা যায় পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে। টেকনাফের উপজেলা প্রশাসন অবৈধ বহুতল স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযানে গেলে আদালত থেকে স্থাগিতের আদেশ নিয়ে আসে হোটেল মালিকরা। আবার সরকারী দলের প্রভাবশালীরা লাঠিসোঠা নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানকে বাঁধা দেয় বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। প্রবাল দ্বীপটিকে রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়সহ অপরাপর মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমম্বয়হীনতার কারনে দ্বীপটিকে বাঁচানো যাচ্ছে না।