ঈদের কিছুদিন আগে থেকে একটা বিষয় খুব খেয়াল করে দেখছিলাম। সেটা হল কিছু কিছু সংগঠন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিভিন্নভাবে ঈদ উদযাপনের জন্য সাহায্য-সহযোগিতা করছে। কেউ জামা দিচ্ছে, কেউ সেমাই-চিনি দিচ্ছে, কেউ কেউ শিশুদের নিয়ে ঈদে ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে, আবার কেউ কেউ প্রবীণদের ঈদ ভালোভাবে উদযাপনের জন্য কাজ করছে। এ সংক্রান্ত ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসার পর অনেকে নানা ধরনের মন্তব্য করে যাচ্ছে। কেউ বলছে, দান করে দেখানোর দরকার কী, আবার কারও কারও মত- এটা ভালো কাজ। মনে করে দেখবেন, কিছুদিন আগেও অর্থাৎ চার-পাঁচ বছর আগেও ঈদ বা রোজার আগে থেকেই বিভিন্ন এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, মাদ্রাসায় সাহায্য চাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হতো।
এখনও হয়, কিন্তু একটু ভিন্নতা এসেছে এ বিষয়গুলোতেও। অনেক প্রতিষ্ঠান খুঁজে খুঁজে সুবিধাবঞ্চিত জায়গাগুলোতে সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছে। এতে করে দুটো কাজ একসঙ্গে হচ্ছে। একটি হল প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত মানুষজন সহায়তা পাচ্ছে এবং অন্যটি হল মানুষ দেখে দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে দান করার ব্যাপারে। হাওরে সাহায্য পাঠানোর জন্য যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার হয়েছে, তা সত্যিই আশা প্রণোদিত ব্যাপার আমাদের জন্য। পাহাড়ে দুর্যোগেও একই অবস্থা। শুধু তাই নয়, ঘূর্ণিঝড় মোরা আঘাত হানার সময় সতর্কবার্তা প্রচারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কাজ করেছে অসাধারণভাবে। শুধু একটু প্রচারের প্রায়োগিক ব্যবহারের ফলে আগে যেরকম সাহায্য-সহযোগিতা পেত সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো, তার চেয়েও কিছুটা বেড়েছে বর্তমানে। এটাকে আমি এগিয়ে যাওয়ার একটি ধাপ বলতে চাই। তথ্যপ্রযুক্তির ভালো ব্যবহারের স্বীকৃতি অর্জনে বাংলাদেশ একদিন শীর্ষ দেশের তালিকায় থাকবে এবং তা খুব নিকট ভবিষ্যতেই। সামাজিক ব্যবসার সবচেয়ে বড় মাধ্যম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঠিক ব্যবহার বাড়াতে পারলে দুর্নীতিও অনেক কমে আসবে বলে মনে করি। সবকিছুর সমালোচনা না করে ভালো দিকগুলো তুলে ধরতে পারলে অবশ্যই সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ আমাদের সামনে উজ্জ্বল হবে। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা নতুন করে প্রকাশ পেল ঈদে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর একটি সুন্দর উদ্যোগের মধ্য দিয়ে।