Site icon Aparadh Bichitra

রুবিনাকে দেখতে হাসপাতালে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক

ট্রেনে কাটাপড়ে পা হারানো জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের মোধাবী শিক্ষার্থী রুবিনাকে দেখতে হাসপাতালে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি। ১ ফেব্রুয়ারী সকাল ১১টায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে দেখতে যায়। সময় রেলপথ মন্ত্রীর সাথে হাসপাতলে যান পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নরুল ইসলাম সুজন এমপি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মেজর জেনারেল নাসির উদ্দীন, পরিচালক প্রশাসন আবু জাহের, ফরেন্সী বিভাগের পরিচালক সোহেল মাহমুদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কুমিল্লার কৃতি সন্তান শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল প্রমূখ।

একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। নাম রুবিনা আক্তার (২২) গ্রামের বাড়ি উত্তর বঙ্গের জেলা পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার শান্তিনগর গ্রামে। গরীব এক মুসলিম পরিবারে জন্ম তার। বাবা মা এক ভাই এবং এক প্রতিবন্ধী এক বোন সহ ৫ জনের এক ছোট্ট পরিবার তাদের। ছোট বেলা থেকেই রুবিনা খুব মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্লাসেই তার অবস্থান ছিলো প্রথম সারিতে। এস এস সি এবং এইচ এস সি পরীক্ষায় এলাকার মুখ উজ্জল করে পর পর দুইটি পরীক্ষায় গোল্ডেন এপ্লাস তথা জিপিএ ফাইভ অর্জন করা এলাকার মানুষ সহ তার পড়া শোনার জন্য শিক্ষা বৃত্তি দিয়ে তার পড়া শোনার খরচ বহন করে আসছেন ডাচ বাংলা ব্যাংক। এরপরই সে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে মেধার যোগ্যতায় পরীক্ষা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে মেধা তালিকায় প্রথম সারিতে অবস্থান করেন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকার সদরঘাট এলাকার একটি মেসে থেকেই পড়া শোনা করে আসছিলো রুবিনা পড়াশোনার পাশাপাশি নিজে টিউশনি করে সংসারে টাকা পয়সা দিতো বাবা মাকে। কিছু দিন পূর্বে সংসারের জোয়াল তার কাঁদে তুলে দিয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে গেছেন হতবাগা পিতা। একদিকে পিতার শোক তার উপর আবার সংসারে ঘানি টানা। ২৮ জানুয়ারী রবিবার মায়ের জন্য টিউশনি করে উপার্জন করা টাকা সহ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন রুবিনা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে স্টেশনের ছয় নম্বর ফ্ল্যাটফর্ম থেকে পাঁচ নম্বর ফø্যাটফর্মে যাওয়ার জন্য রেললাইন পার হচ্ছিলো রুবিনা। এসময় একটি রেলের ইঞ্জিন বদলের জন্য ইঞ্জিনটি ঘোরানো হচ্ছিলো ওই ফ্ল্যাটফরমে। এসময় ট্রেনের ইঞ্জিনে কাটা পড়ে হাঁটুর ওপর থেকে তার দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রুবিনার। স্থানীয়রা লোকজন ও রেওয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। গত ৩০ জানুয়ারী দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কুমিল্লার কৃতি সন্তান শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল মেয়েটির এই হৃদয় বিদারক ঘটনার বর্ণনা দিলে মাননীয় মন্ত্রী তার চিকিৎসায় তার পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন এবং ৩১ জানুয়ারী রুবিনার অভিবাবকদের নিয়ে দেখা করা কথা বলেন। মন্ত্রীর কথা অনুযায় আজ ৩১ জানুয়ারী দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক এমপির দপ্তরে এলে মন্ত্রী তাদের পরিবারে অভিবাবক রুবিনার মায়ের হাতে নগদ ২ লাখ টাকা প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে তার চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলেন এবং তার চিকিৎসার ক্ষেত্রে পা লাগানোর জন্য তার পাশে থাকার অশ^াস দেন। বর্তমানে রুবিনা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।