Site icon Aparadh Bichitra

দেশ উন্নয়নে দুর্নীতিই বড় বাঁধাঃ কুরআন-সুন্নাহ্ই একমাত্র সমাধান

মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন

দুর্নীতিতে সারা দেশ ছেয়ে গেছে। দুর্নীতিতে জনপ্রতিনিধিরা সবার শীর্ষে রয়েছে। অতীতে রাজনীতিবিদদেরকে দেশবাসী মনে-প্রাণে যেমন সম্মান করতেন, তেমনি শ্রদ্ধা করতেন, ভক্তি করতেন এবং বিশ্বাসও করতেন। দেশ স্বাধীনতার পর রাজনীতিবিদরা দুর্নীতিবাজ হতে শুরু করে। স্বাধীনতার পূর্বে যারা পায়ে হেঁটে পথ চলতো বা রিক্সায় ওঠার মতো তৌফিক ছিল না, আজ তাদের মধ্যে অনেকেই শত-শত কোটি টাকার মালিক। তাদের মধ্যে অনেকেই বিলাস বহুল গাড়ীতে চড়েন এবং বিলাস বহুল ভবনে বসবাস করছে এবং তারা বাজার করেন বিদেশের মাটিতে। আবার তারা শত-শত কোটি টাকা খরচ করে দেশে-বিদেশে রঙমহল তৈরি করেছে।

এরা সকলেই রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দুর্নীতিতে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। এখন রাজনীতিবিদ বলতেই দেশবাসী বুঝে, ওরা দুর্নীতিবাজ! আর এসব দুর্নীতিবাজদের কারণেই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দুর্নীতি করতে সাহস পাচ্ছে। যদি রাজনীতিবিদরা সৎ থাকতো, তবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দুর্নীতি করতে সাহস পেত না। যখন রাজনীতিবিদরা অসৎ হয়ে রাষ্ট্রের অর্থ-সম্পদ চুরি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ-বিত্তের মালিক হয়ে যায়, তখন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সৎ থাকবে কেন?

আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি স্বাধীন হওয়ার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন। ওই সময় দেশে কিছুই ছিল না। ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশকে পূনর্গঠনের জন্য তিনি সর্বক্ষণ চেষ্টা চালাতে থাকলেন কিন্তু চারপাশের মানুষের আচরণ দেখে তিনি খুবই মর্মাহত হলেন। তিনি একটি জনসভায় অতি ক্ষোভের সাথে বললেন, “সবাই পায় স্বর্ণের খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি…….।” তাই তিনি প্রচলিত ধ্যান-ধারণা বা রাজনৈতিক রণকৌশল পরিবর্তন করে নতুন ধরণের একটি কর্মসূচি ঘোষণা করে সম্মুখপানে অগ্রসর হতে চেষ্টা করলেন। তাঁর লক্ষ্যই ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি। তিনি এক জনসভায় বলেছিলেন, “রাজনৈতিক স্বাধীনতা মূল্যহীন, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া।” তাই নতুন কার্যক্রমের লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এ দেশকে নিয়ে যাওয়া। বড়ই দুর্ভাগ্য! ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে তাঁকে জীবন দিতে হয় এবং তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির লালায়িত স্বপ্ন ধূলিস্যাত হয়ে যায়। তাঁর মৃত্যুর পর অনেকগুলো সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে। দুর্নীতি যেন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধিই পাচ্ছে। দুর্নীতি কমাবার জন্যে কোন সরকারই গ্রহণযোগ্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। দুর্নীতিবাজদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পেতে আজ যে কত দুর্নীতিবাজ সমাজে বিচরণ করছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান কেউ দিতে পারবে না। দুর্নীতি চলছে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায়। জনগণ এর পরিসমাপ্তি চাইলেও এ যাবৎকাল সরকারগুলো কেউই চায়নি বা চাচ্ছেও না!? কারণ সরকারগুলো এ সব দুর্নীতির পক্ষে। দুর্নীতি বন্ধ করার একমাত্র পথই হলো মহান আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের পথে ফিরে আসা। আর এর কোন বিকল্প নেই।

রাজনীতি হচ্ছে সবচেয়ে বড় মাপের সমাজসেবা, দেশ সেবা বা মানব সেবা। এ কাজটি করেছিলেন বিশ্ব মানবতার দূত বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)। তিনি কাফেরদের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে নিজ মাতৃভূমি মক্কা হতে মদীনাতে হিজরত করতে বাধ্য হয়েছিলেন! তিনি মদীনায় পৌঁছলে মদীনাবাসী তাঁকে অতি সম্মানের সাথে গ্রহণ করেছিলেন এবং দিনের পর দিন ইসলামের জয়যাত্রা শুরু হলে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। মদীনাতে অবস্থানকালে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়। এ সব যুদ্ধে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করে নেতৃত্ব দেন। কোন এক যুদ্ধে আল্লাহ্র এ নবীকে শত্র“পক্ষ আঘাতে-আঘাতে জর্জরিত করে ফেলে কিন্তু তিনি ছিলেন আল্লাহ্র প্রতি শতভাগ বিশ্বাসী এবং বেশীর ভাগ যুদ্ধেই তিনি জয়লাভ করেন। যদিও ওই সময় তাঁর বাহিনীতে লোকসংখ্যা ছিল শত্র“পক্ষের চেয়ে অনেক কম। নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ ও মহান আল্লাহ্র প্রতি পূর্ণ বিশ্বাসী ছিলেন বলেই বেশীরভাগ যুদ্ধে তাঁর বাহিনী জয় লাভ করতে সক্ষম হন।

অনেক যুদ্ধের পর বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কা বিজয় লাভ করেন এবং বিজয়ের বেশে তিনি তাঁর অনুসারীদের নিয়ে মক্কা নগরীতে প্রবেশ করলেন। আল্লাহ্র নবী মক্কা নগরীতে প্রবেশের পরে কুরাইশদের মধ্যে চরম ভীতি ও ভয়ের সঞ্চার হল এবং তাই ছিল স্বাভাবিক। কেননা তাদের অত্যাচার, নির্যাতন এবং শত বাঁধা-বিপত্তির কারণে তাঁকে তাঁর মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করতে হয়েছিল। হিযরত করার সময় তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন। আর তিনি হাজার-হাজার মুসলিম নিয়ে বিজয়ের বেশে মক্কা নগরীতে প্রবেশ করছেন! মক্কায় প্রবেশের পূর্বে আবু সুফিয়ান কোরাইশগণকে বলতে লাগলেন-“কোরাইশরা শোন, মুহাম্মদ ১০ হাজার সৈন্য নিয়ে আমাদের দরজায় দন্ডায়মান। আজ আর কারো রক্ষা নেই! যে কেউ কাবা ঘরে বা আমার গৃহে আশ্রয় নেবে অথবা নিজ নিজ গৃহে আবদ্ধ থাকবে, সে নিরাপদ! আজ আর আমি তোমাদের দলপতি নই। আমি এখন মুসলমান।”

কুরাইশরা আবু সুফিয়ানের কথা শোনার পর যার যার নিরাপদে আশ্রয় গ্রহণ করলো। ভোরবেলা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নগরে প্রবেশের আয়োজন করলেন। বিভিন্ন দলপতিকে বিভিন্ন দিক দিয়ে মক্কায় প্রবেশের আদেশ দিলেন এবং কাউকে কোন রকম আক্রমণ না করার নির্দেশ দিলেন। বিজয় নিশান উড়িয়ে মুসলিম বাহিনী চলছে, আর আল্লাহ্র নবী চলছেন সবার পেছনের একটি উঠে চড়ে এবং তাঁর পাশে একজন ক্রীতদাস। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে শত অত্যাচার, দুঃখ-কষ্ট ও কন্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে আজ তিনি মহা বিজয়ের পথে অগ্রসর। তিনি মহান আল্লাহ্পাকের উদ্দেশ্যে মাথা নত করে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন বারে বারে। প্রথমে তিনি তাঁর অনুসারীদের নিয়ে পবিত্র কাবা ঘরের দিকে অগ্রসর হয়ে ভক্তিসহকারে পবিত্র কাবা ঘর ৭ বার প্রদক্ষিণ করলেন। কুরাইশরা তখন ভয়ে কাঁপছিল।

‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে চারিদিক মুখরিত করে আল্লাহ্র নবী বললেন, “সত্য সমাগত, মিথ্যা বিতাড়িত। মিথ্যার বিনাশ অবশ্যাম্ভাবী।” তখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হযরত ওমর ফারুক (রাঃ)-কে দিয়ে কাবা ঘরে রক্ষিত ৩৬০টি মূর্তি আল্লাহ্র ঘর হতে ফেলে দিয়ে কথিত দেবতার অধিকার হতে মুক্ত করলেন। এর পরে হযরত বেলাল (রাঃ) আজান দিলেন এবং সকলে নামাজ পড়লেন। এ সময় কুরাইশরা তাদের অদৃষ্টের কথা ভাবতেছিল, কিন্তু মহাপুরুষ আল্লাহ্র নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হাসিমুখে কুরাইশদের উদ্দেশ্যে বললেন, “তোমাদের প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই। তোমাদেরকে ক্ষমা করা হলো এবং তোমরা সকলেই আজাদ।”

তখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কথা শুনে তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ মক্কাবাসী “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহা, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্” কালেমা বলে মুসলাম হয়ে গেল। মক্কা বিজয় মাত্র-একটা দেশ বিজয়ই নয়। এ বিজয় যেন অন্ধকার থেকে আলোর যুগের মহাবিজয়। মক্কা বিজয়ের পর মহান আল্লাহ্র রাজ্য সুপ্রতিষ্ঠিত হল। মক্কা বিজয়ের পর আমরা কি দেখলাম, মুসলমানরা কোন বাড়ী-ঘর লুটপাট বা ধ্বংস করলো না।

কাউকে হত্যা করলো না। কারও ওপর প্রতিশোধ গ্রহণ করলো না, বরং সবাইকে ক্ষমা করে দিলেন। আমাদের দয়াল নবী রাজনীতি করেছেন একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্যে। আর আজকাল রাজনীতির নামে হচ্ছেটা কি………? আমার প্রশ্ন- আজ যারা রাজনীতি করছে, তারা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী থেকে শিক্ষা নিচ্ছে না কেন? তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিলেইতো সত্যিকারের মানুষ হওয়া যায়। আর সত্যিকারের মানুষ হতে পারলেই সত্যিকারের রাজনীতিবিদ, সমাজবিদ, শিক্ষাবিদ বা যেকোন কিছু হওয়া সহজ।

আজ যারা রাজনীতির দোহাই দিয়ে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মানুষের অধিকার খর্ব করে রাষ্ট্রের অর্থ-বিত্ত চুরি করে শত-শত বা হাজার-হাজার কোটি টাকার মালিক হচ্ছে। এ সম্পর্কে পবিত্র র্কোআনের সূরা আল-নিসার ২৯ নং আয়াতে আল্লাহ্পাক এরশাদ করেছেন, “হে মুমিনগণ, তোমরা একে অপরের ধন-সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; তবে তোমাদের পরস্পরের সম্মতিতে ব্যবসা করা বৈধ এবং একে অপরকে হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি দয়ালু।” এখানে আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের জন্য পাক কালামে সূরা আল্-বাকারা’র ১৮৮ নং আয়াতে আল্লাহ্তা’য়ালা এরশাদ করেন, “তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকদের নিকট পেশ করো না।” সৃষ্টি জগতের মালিক মানুষকে যখন-তখন শাস্তি দেন না এবং তা দিলে দুনিয়ায় প্রলয় হয়ে যেত।

এ সম্পর্কে রাব্বুল আল-আমিন সূরা ফাতিরের ৪৫ নং আয়াতে বলেন, “আল্লাহ্ যদি মানুষকে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি (তৎক্ষনিক) দিতেন, তবে ভূ-পৃষ্ঠে কোন জীব-জন্তুও রেহাই পেতো না। কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। পরে তাদের সময় উপস্থিত হলে শাস্তি দেয়া হয়। আল্লাহ্তো ভৃত্যদের প্রতিও দৃষ্টি রাখেন।”

দুর্নীতিবাজদের সম্পর্কে পবিত্র র্কোআনে আল্লাহ্তা’য়ালা এরশাদ করেছেন, “যারা দেশে সীমালঙ্ঘন করেছে এবং তাতে বড় বেশী দুর্নীতি করেছে, তাদের ওপর তোমার প্রভু শাস্তির কষাঘাত হানলেন। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক পর্যবেক্ষণ করছেন।” (আল-র্কোআন। সূরা: আল-ফজর, আয়াত নং: ১১-১৪)।

সূরা বাকারার ১৮৮ নং আয়াতে আল্লাহ্তা’য়ালা এরশাদ করেন, “তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।” হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “সত্য কথা বলো, যদিও তা তিক্ত।” (সহীহ্ মুসলিম)। “তোমাদের মধ্যে এমন এক দল লোক অবশ্যই থাকতে হবে। যারা মানুষকে কল্যাণ ও মঙ্গলের দিকে ডাকবে। ন্যায় ও সত্য কাজের নির্দেশ দেবে। আর পাপ ও অন্যায় কাজে বাঁধা দেবে। যারা এ কাজ করবে, তারাই সাফল্য অর্জন করবে।” (সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১০৪)। অপর এক আয়াতে আল্লাহ্ তা’য়ালা এরশাদ করেন, “তোমরা সর্বোত্তম উম্মাহ্। তোমাদের উত্থান ঘটানো হয়েছে মানবজাতির পথ প্রদর্শন ও সংশোধনের উদ্দেশ্যে। তোমরা মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের আদেশ দেবে। আর অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত থাকবে অবিচল আস্থাশীল।” (সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১১০)।

হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে এক হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি এক বিঘাত পরিমাণ জমিতে জুলুম করলো (জবর দখল), কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ তার গলায় সাত তবক জমিন পরিয়ে দেবেন।” (বোখারী ও মুসলিম)।

ঘুষ বা উৎকোচ সম্পর্কে সূরা বাকারার ১৮৮ নং আয়াতে মহান আল্লাহ্পাক বলেন, “তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিও না।”

ঘুষ বা উৎকোচ সম্পর্কে আব্দুল্লাহ্ ইব্নে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, “ঘুষ প্রদানকারী ও ঘুষ গ্রহণকারী উভয়ই দোযখে যাবে।” (আবু দাউদ, ইব্নে মাজাহ্, মিশ্কাত)। এ সম্পর্কে যুবায়দা (রাঃ) বলেন, নবীজী বলেছেন- “আমি যাকে ভাতা দিয়ে কোন কাজের দায়িত্ব প্রদান করেছি, সে যদি ভাতা ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহণ করে তবে তা হবে খিয়ানত।” (আবু দাউদ ও মিশ্কাত)। এ সম্পর্কে খাওনাহ্ আনছারী বলেন, নবীজী বলেছেন-“নিশ্চয় কিছু লোক আল্লাহ্র সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে। কিয়ামতের দিন তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।” (বুখারী ও মিশ্কাত)। সুদের মতো ঘুষ গ্রহণ এবং প্রদান একটি কবীরা গুনাহ্, যার পরিমাণ জাহান্নামের সরকারী বা বেসরকারী কোন কর্মচারী বা দায়িত্বশীলকে ঘুষের মাধ্যমে প্রভাবিত করে ও প্রকৃত হকদারকে তাদের ন্যায্য প্রাপ্য হতে বঞ্চিত করে, ওই সম্পদ গ্রহণ করা হারাম।” (বুখারী ও মিশ্কাত)। সওবান (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন- “যে ব্যক্তি ঘুষ গ্রহণকারী ও ঘুষ প্রদানকারীর মধ্যে মধ্যস্থতা করবে, তার ওপরও আল্লাহ্ তা’য়ালা লানত প্রদান করেছেন।” (আহ্মাদ, বাইহাকী ও মিশ্কাত)। ইসলামে অমুসলিমদের অর্থ-সম্পদ হরণ করা সম্পর্কে কঠোরতা দেখিয়েছে।

এ সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “সাবধান! কোন মুসলমান কোন অমুসলিম নাগরিকের ওপর অত্যাচার চালিয়ে তার অধিকার হরণ করে, তার ক্ষমতার বাইরে কষ্ট দেয় এবং কোন বস্তু জোরপূর্বক নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্র দরবারে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করবো।” (আবু দাউদ)।
লেখক : মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন, সাংবাদিক ও কলাম লেখক।
ফোন # ০১৭১০৮৮৩৪১৩, ই-মেইল :

jahangirhossain8431@gmail.com