Site icon Aparadh Bichitra

রাজশাহীর বাঘায় সুনির্দিষ্ট প্রকাশনার গাইড কিনতে শিক্ষকের চাপ, নেপথ্যে অর্থের লড়াই!

বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার সৃজনশীল লেখা-পড়ার মান উন্নয়নে শিক্ষার্থীদের যখন গাইড বই পড়তে বারণ করছে, ঠিক তখন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরা নির্দিষ্ট প্রকাশনার গাইড বই কেনার জন্য আদেশ ও চাপ দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

 

এর ফলে কিছু প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে নগদ অথর্, আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠান সমিতির মাধ্যমে পাচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এমনটি তথ্য মিলেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়। সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানা গেছে, বাঘায় মাধ্যমিক স্তরে ৫২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা পাঞ্জেরী, ভিক্টোরি, অনুপম, লেকচার, সংসদ, জুপিটার ইত্যার্দি গাইড কেনার পরামর্শ দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ফলে বাঘার প্রতিটা লাইব্রেরীতে জমে উঠেছে রমরমা গাইড ব্যবসা। এর মধ্যে “ভিক্টোরি’’ নামে একটি প্রকাশনীর গাইড কিনতে শিক্ষার্থীদের আদেশ দিয়েছে ছয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান। এর পিছনে ওই প্রকাশনীর সাথে অর্থ লেনদেনের চুক্তিও হয়েছে স্কুল প্রধানদের।
প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে, মনিগ্রাম, কালিদাস খালি , মীরগঞ্জ , আড়পাড়া, জোতনশী ও কিশোরপুর। যার সত্যতা স্বীকার করেছেন মনিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বাবুল ইসলাম। তাঁর মতে, এটা সব জায়গাতেই চলছে। তিনি এ বিষয়ে কালিদাসখালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এর সাথে কথা বলার জন্য এ প্রতিবেদককে জানান।

তবে ভিক্টোরি প্রকাশনীর কাছ থেকে অর্থ লেনদেনের বিষয় সঠিক নয় দাবি করেছেন কালিদাস খালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সরকার। তিনি বলেন , যদিও গাইড দেখে লেখাপড়া করা সরকারের নিষিদ্ধ তার পরেও পাঞ্জেরী গাইড সব চেয়ে ভাল। এ জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের পাঞ্জেরী গাইড বই কেনার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ।
অন্য দিকে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বারি গ্রুপ) রাজশাহী জেলা শাখার মাধ্যমে বাঘায় “জুপিটার’’ নামে একটি প্রকাশনীর গাইড ক্রয় করছেন উপজেলা সদরে অবস্থিত বাঘা রহমতুল্লা বালিকা বিদ্যালয় ও বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়সহ ২২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সুত্রে জানা গেছে, এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জুপিটা গাইড কেনার পরামর্শ দিয়ে নগদ অর্থ না পেলেও সমিতির মাধ্যমে প্রতিবছর মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।

তবে বাঘা উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা কোন নগদ অর্থ পায় না। তবে কোন শিক্ষক মারা যাওয়া কিংবা অবসর গ্রহন করলে সমিতি থেকে এককালিন ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা প্রদান করি। এ ছাড়াও প্রতিবছর মেধাবী শিক্ষার্থীদের সমিতির পক্ষ থেকে মুল্যায়ন করা হয় বলে তিনি জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফুর রহমান বলেন, সৃজনশীল মেধা বিকাশে গাইড পড়া সরকারি ভাবে সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ। আমরা উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছি। তার পরেও শিক্ষকরা গাইডসহ কোচিং এবং পাইভেট পড়তে শিক্ষার্থী উদ্বুদ্ধ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর মতে, গাইড বিক্রীর বিষয়ে সরকারি ভাবে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ এলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এটি বন্ধ করা সম্ভব।