নিখোঁজের ১৫ ঘন্টা পরে লাশ উদ্ধার
উজিরপুরে মৎস্যঘের মালিকের অবহেলায় শ্রমিকের মৃত্যু, ২ জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের
বরিশালের উজিরপুরের সাতলায় মৎস্যঘের মালিকের অবহেলায় শ্রমিকের মৃত্যু, নিখোঁজের ১৫ ঘন্টা পর লাশ উদ্ধার। উজিরপুর মডেল থানায় ২জনকে আসামী করে মামলা দায়ের।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উজিরপুরের পশ্চিম সাতলার কাজেম মিয়ার ছেলে মৎস্যঘের মালিক গিয়াস উদ্দিন মিয়ার মৎস্যঘেরে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিল সাতলা পটিবাড়ির গৌরাঙ্গ বাইনের ছেলে অপু বাইন (২৬) গতকাল রবিবার প্রতিদিনের ন্যায় কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার মুহুর্তে ঘের মালিক গিয়াস মিয়া পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত ¯সুইজগেটে জমে থাকা আবর্জনা পরিস্কার নির্দেশ দিলে শ্রমিক অপু বাইন ঐ স্থানটি প্রবলবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিধায় ঝুঁকিপূর্ণ বলে সুইজগেটের কপাটের আবর্জনা পরিস্কার করতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে ঘের মালিক গিয়াস ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিক অপু বাইনকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল এবং মারধর করে। কাজ না করলে মজুরী প্রদান করবে না বলে হুমকি দেয় গিয়াস মিয়া। উপায়ান্তর না দেখে শ্রমিক অপু অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাড়ে ৫টার দিকে সুইজ গেটের কপাটের কাছে গেলে প্রবল পানির তোড়ে ভিতরে আটকা পড়ে এবং তার কোমরে বাধা রশি ধরে টানাটানি করলে তার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে অন্য শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে ঘের মালিক গিয়াস তাদেরকে শাসায় যেন কিছুই হয়নি।
ঘটনার ২ ঘন্টা পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে শতশত লোক জড় হয়ে পুলিশ এবং দমকল বাহিনীকে খবর দেয়া হয়। রাত ১০ টা থেকে ১টা পর্যন্ত ডুবুরি দল নিখোঁজ শ্রমিক অপুকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। পরের দিন সকাল ৮টার সময় উদ্ধার কাজ শুরু করে সকাল ৯টার দিকে প্রায় ১৫ ঘন্টা পরে ডুবুরি নবীর উদ্দিন শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে উজিরপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ অর্ঘ্য দেবনাথ জানান, শ্রমিকটি দুর্ঘটনার সাথে সাথে খবর পেলে ও উদ্ধার কাজ চালাতে পারলে অপুকে বাঁচানো যেত। দেবীতে খবর পাওয়ার বিষয়ে তিনি সাধারণ মানুষকে সচেতন হবার তাগিদ দেন। অপুর সাথে কর্মরত শ্রমিক রাধাকান্ত, পরিমলসহ অনেক শ্রমিক আফসোস করে বলে, মালিকের কথা না শুনলে প্রায়ই তাদের শারিরীক নির্যাতনের শিকার হতে হয় ও মজুরী হারানোর ভয়ে মুখ বুজে সকল অত্যাচার সহ্য করি।
এ বিষয়ে মামলার বাদী নিহত শ্রমিকের ভাই গোকুল বাইন জানান, মালিকদের অন্যায় আবদার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে কাজ করি। কিন্তু এভাবে ভাইকে হারিয়ে ফেলব তা ভাবিনি। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবী করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম সরোয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে, অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে।