ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভারতের স্থানীয় বস্ত্রখাত

0
728

শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের সুবিধা থাকায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে পোশাক রপ্তানি বাড়ছে দ্রুতগতিতে। আর তাতে লাভবান হচ্ছে চীনের বস্ত্র খাত। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভারতের স্থানীয় বস্ত্রখাত। ভারতের বস্ত্র উদ্যোক্তাদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টেক্সপ্রনাস ফেডারেশন (আইটিএফ) দেশটির কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে লেখা এক চিঠিতে এই মন্তব্য করেছে। চিঠিতে সংগঠনটি পরামর্শ দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের পোশাক খাতকে শুধু শুধু শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া উচিত নয়।

শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার শর্ত হিসেবে পোশাকে ব্যবহৃত সুতা ও কাপড় ভারত থেকে আমদানি করার বাধ্যবাধকতা যুক্ত করার কথা বলেছে সংগঠনটি।

এ খবর দিয়েছে পোশাকশিল্প বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ফাইবার টু ফ্যাশন। চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘২০১৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতের পোশাক আমদানি ২৭.৮ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ অর্থবছরে বেড়েছে ১৭ শতাংশ। ২০১৭ অর্থবছরে ২.৭ শতাংশ কমেছে, কেননা ওই বছর ভারতের সামগ্রিক আমদানিই ছিল কম। কিন্তু চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশি পোশাক আমদানির গতি ফের বেড়েছে।’

সংগঠনটির যুক্তি, বাংলাদেশ ঘরোয়াভাবে যথেষ্ট কাপড় তৈরি করে না। ফলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পোশাক আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলে তাতে চীনকে পরোক্ষভাবে লাভবান করে। কারণ, চীন থেকে প্রচুর সুতা ও কাপড় আমদানি করে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি বেড়ে যাওয়ায়, ধীরে ধীরে ভারতের নিজস্ব বস্ত্র খাত ধ্বংস হচ্ছে। কারণ, ভারতের বস্ত্রখাত ঘরোয়া সুতা, কাপড় ও তন্তু ব্যবহার করে। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে ঠিক এই কথাই সম্প্রতি বলে এসেছে আইটিএফ্থর একটি প্রতিনিধিদল। এই দলে ছিলেন আইটিএফ্থর আহ্বায়ক প্রভু ধামধারন, বোর্ড সদস্য মনোজ কুমার ও ধনপাল এবং বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ও উপদেষ্টা সুধাকর কাস্তুরে। প্রতিনিধিদল পরামর্শ দিয়েছে, বাংলাদেশসহ অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পোশাক খাতকে ভারতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে ভারত থেকে সুতা ও কাপড় আমদানি করার নিয়ম সংযুক্ত করতে হবে।

তবে ভারতের আগে অন্যান্য দেশও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের বিধিনিষেধ যুক্ত করেছিল। যেমন, নাফটা চুক্তির আওতায় মেক্সিকো ও অন্যান্য নাফটা-ভুক্ত দেশের পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে এমন শর্তের কথা উল্লেখ ছিল। এছাড়া আসিয়ান-জাপান বাণিজ্য চুক্তিতেও বলা হয়, আসিয়ান দেশগুলোর পোশাক জাপানের বাজারে বিশেষ অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা পাবে যদি জাপানে বা অন্য আসিয়ান দেশে উৎপাদিত কাঁচামাল ও কাপড় ওই পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। নিজেদের চিঠিতে এই দুটি নজিরের কথা উল্লেখ করেছে আইটিএফ। সংগঠনটি একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে বস্ত্রখাত নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরির কাজে নিয়োগ দিয়েছে। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ওই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে। তারপর ওই প্রতিবেদন বাণিজ্য ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 + six =