মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে চলছে প্রসব কাজ

0
761

টানা ৫ দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে গাইনি বিভাগের প্রসবকালীন কক্ষ। এ অবস্থা থাকায় সন্তান প্রসব করতে ব্যবহার করা হচ্ছে মোবাইলের লাইট। এমনই কঠিন পরিস্থিতি রয়েছেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও রোগীরা । জানা যায়, বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা, শিশু ও গাইনি বিভাগের প্রসবকালীন কক্ষে গত ১৪ মার্চ থেকে বিদ্যুৎ নেই। এতে দুর্ভোগে পড়েছে ওই দুটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীসহ গাইনি বিভাগের রোগীরা। বিদ্যুতের অভাবে বাধ্য হয়েই সন্ধ্যা হতে সকাল পর্যন্ত অন্ধকারে থাকছে রোগীরা।

বিদ্যুত না থাকায় মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে চলছে প্রসব কাজ। বিরামপুর পৌর এলাকার বাবুল হোসেন জানান, তার স্ত্রী বিলকিস বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হন গত শনিবার বিকালে। বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে হাসপাতালের স্টাফরা তার স্ত্রীকে নিয়ে যান গাইনী বিভাগের প্রসবকালীন অন্ধকার কক্ষে। অবস্থা বেগতিক দেখে অন্যান্য স্টাফরা মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে কিছুটা হলেও অন্ধকার দূর করেন। অবশেষে মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। হাসপাতালের এই অবস্থার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। হাসপাতালের মহিলা রোগীরা জানান, রাতে ভূতুড়ে অন্ধকারের কারণে তারা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে থাকেন। শিশুরা অন্ধকারে ভয়ে কান্নাকাটি করে। এভাবেই অবর্ণনীয় দূর্ভোগে ৪ দিন ধরে চলছে বিরামপুর হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড। রোববার হাসপাতালে গেলে ২১ জন মহিলা ও শিশু রোগী এবং তাদের স্বজনরা ক্ষোভের সঙ্গে দুর্ভোগের অভিযোগ তুলে ধরেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাহাদত হোসেন জানান, হাসপাতালে বর্তমানে সংস্কার কাজ চলছে। পৃথক দুই ঠিকাদার কাজ পাওয়ায় দুপক্ষের সমন্বয়ের অভাবে অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, দিনাজপুরের তাজ ট্রেডার্সের শ্রমিকরা গ্রিলের দরজা ফিটিংয়ের সময় বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ লাইন ফল্ট হয়ে মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তিন বলেন, ইলেকট্রিক ও পানি লাইন ঠিকাদারের লোকজন ওই মেরামত কাজ না করেই পালিয়ে গেছে। এদিকে দিনাজপুরের তাজ ট্রেডার্সের সাইট ম্যানেজার প্রাণ জানান, বিদ্যুতের লাইন ইলেকট্রিক ও পানি লাইন ঠিকাদারের লোকজন নষ্ট করে গেছে। মোবাইলে ইলেকট্রিক ও পানি লাইন ঠিকাদারের ইলেকট্রিশিয়ান তপু রায় বলেন, ওই লাইন তাজ ট্রেডার্সের গ্রিল লাগাতে গিয়ে তারাই নষ্ট করে ফেলেছে। এ ব্যাপারে দিনাজপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী শামীম আহমেদ জানান, দুই ঠিকাদারের কাজে সমন্বয়হীনতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে তিনি লাইন মেরামতের জন্য রবিবার আলাদা বিদ্যুৎ মিস্ত্রি পাঠিয়েছেন বলে জানান। দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মওলা বক্স চৌধুরী জানান, বিষয়টি তিনি রবিবার জানতে পেরেছেন। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

15 + nine =