Site icon Aparadh Bichitra

ওসি শহিদুলের শেল্টারে চট্টগ্রামের রেল স্টেশনটি মাদক ও দেহব্যবসার অভয়ারন্য

বন্দর ও বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন নতুন রেল স্টেশনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত বিশ্রামাগারটি এখন মিনি পতিতালয়ে পরিণত হয়েছে। এটি এখন মাদক ব্যবসার স্বর্গরাজ্য। স্থানীয় মাদক সম্রাট বাদল এই অপকর্মের মুল হোতা। বাদল রেলওয়ে থেকে এ বিশ্রামাগারটি চুক্তিতে ইজারা নিয়ে হোটেল চিটাগাং ইন নাম দিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় মিনি পতিতালয় বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে নারী ব্যবসা ও ইয়াবার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। জিআরপি রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইনচার্জ আনোয়ারুল আলমকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে এই ব্যবসা চালাচ্ছে বলে জানান একাদিক সুত্র।

 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, জিআরপি রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম এই রেল স্টেশনটি সার্বক্ষনিক তদারকিতে নিয়োজিত থাকলেও বাদলের মাধ্যমে কৌশলে রেল স্টেশনের বিশ্রামাগারটি দখল নিয়ে অবৈধ ব্যবসা করে আসছে। নাম মাত্র বাদলের নিকট বিশ্রামাগার ইজারা দিয়ে শহিদুল ইসলাম এই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে যাচ্ছে। আর মাসে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিজিটে আসলে শহিদুল ইসলাম নিজেই তাদেরকে ম্যানেজ করেন।
মোস্তফা নামের এক কর্মচারী জানান, অনৈতিক এ ব্যবসার ফলে স্টেশন এলাকায় আগত দর্শনার্থী ও যাত্রী সাধারণ প্রতিদিন যেমনি বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছেন তেমনি আবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। এ হোটেলে নারী ব্যবসাকে ঘিরে স্টেশন এলাকায় প্রতিদিন কোন না কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে এবং পরিবেশ মারাত্মকভাবে কলুষিত হচ্ছে। অথচ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, আরএনবিসহ সরকারী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন প্রতিনিয়ত ওই এলাকায় আনাগোনা করলেও তারা এতে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
সুত্র জানায়, এই স্টেশনটি বাদলের মাধ্যমে বার্মিজ ইয়াবা সারা দেশে নিরাপদে পাচার করার একটি নিরাপদ পয়েন্ট। এখানে বসে বাদল খুব সহজেই ইয়াবা ব্যবসা করে। কারন ট্রেনের কর্মকর্তারা ইয়াবা বড় বড় চালান নিজেরা বহন করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। বাদল শুধু ভারত ও থেকে ইয়াবার চালান ঐ বিশ্রামাগার পর্যন্ত নিয়ে আসে। যারা ইয়াবার বিরুদ্ধে অবস্থান থাকার কথা তারা যদি সেই ইয়াবা পাচার করে তাহলে সরকার কিভাবে মাদক ব্যবসা দমন করবে? এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনা। প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা আছে যারা সরাসরি ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। তাদের জিআরপি রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইনচার্জ আনোয়ারুল আলম অন্যতম।
জানা যায়, শুধু মাদক ব্যবসাই আসল কথাই নয়, বাদল এ বিশ্রামাগারটি রেল কর্তৃপক্ষ থেকে চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে শহিদুল সিন্ডিকেটকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবতী ও মহিলাদের তার হোটেলে এনে প্রথমে জড়ো করে। পরে হোটেলের বর্ডারদের কাছে মোটা টাকায় সরবোরাহ করে থাকে। এক শ্রেণীর নারী লোভী খদ্দের তার যৌন লালসা চরিতার্থ করার জন্য ঐ হোটেলে উঠে রুম ভাড়া করে দিন রাত নারী নিয়ে ফূর্তিতে ব্যস্ত থাকে। বিশেষ করে স্থানীয় কিছু পরিবহন শ্রমিক, চালক, ব্যবসায়ী, দূরদুন্ত থেকে আসা লোকজন ও ট্রেন যাত্রী এ হোটেলের খদ্দের। নতুন রেল ষ্টেশনের দ্বিতীয় তলায় হোটেল চিটাগাং ইন এ গেলে মোঃ মোস্তফা নামে হোটেলের এক কর্মচারীর সাথে দেখা হয়। তার কাছ থেকে হোটেলের রুম ভাড়া কত জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, প্রতি রাত এক হাজার টাকা। একঘন্টা থাকলে ও একহাজার টাকা দিতে হবে। সাথে কি নারী মেহমান নিয়ে এসেছেন? আগে রুম দেখে পরে মেহমান নিয়ে আসব। এরপর কর্মচারী রুম দেখাতে নিয়ে গেলেন। রুম দেখা শেষে ঐ কর্মচারী বললেন যদি আপনি সাথে নারী নিয়ে না আসেন তাহলে আমাদের হোটেলে আছে। আপনার জন্য ব্যবস্থা করে দিব। এজন্য আলাদা টাকা দিতে দিতে হবে। এসময় দেখা গেল হোটেলের প্রতিটি রুমে রুমে একাধিক দেহ (নারী ব্যবসায়ী) ও খদ্দের অবস্থান করছে। দেখাগেল খদ্দেররা রুম নিচ্ছে ওয়ান টাইম। ২/১ ঘন্টার বেশি অবস্থান করেন না। অপরদিকে বটতলী পুরাতন রেলষ্টেশন সংলগ্ন ষ্টেশন রোডের হোটেল মিডওয়েইনে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে দিন রাত হরদম ভাবে চলছে দেহ (নারী ব্যবসা)। মূলত এ হোটেল গুলোতে ভাল কোন বর্ডার যায় না বললেই চলে। এক শ্রেণীর মানুষ রুপী খদ্দের নরম মাংসের স্বাধ নিতে তাদের যৌন লালসা চরিতার্থ করার জন্য এ হোটেলে রুম ভাড়া নেয়। নাইট এবং ওয়ান টাইম নারীদের সাথে ফূর্তি করার বিনিময়ে হোটেল মালিকরা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এতে ঘটছে মালিক ও খদ্দেরদের সাথে নানা অপ্রিতিকর ঘটনা।
এসমস্ত এলাকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরে এসব অপকর্ম চলে আসলে ও প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।