নোংরা প্লাস্টিকের মধ্যে শুয়ে রয়েছেন এক মধ্যবয়সী মহিলা

0
962

আবর্জনায় ভরে গিয়েছে সবক’টি ঘর। দেয়াল বেয়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে আরশোলা। চার পাশে মল-মূত্র ছড়ানো। তারই মাঝে গন্ধময়, নোংরা প্লাস্টিকের মধ্যে শুয়ে রয়েছেন এক মধ্যবয়সী স্থূলকায়া মহিলা। নড়তে-চড়তে পারছেন না। পায়ে পচন ধরে গিয়েছে। পোকায় খেতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর জর্জিয়ার একটি বাড়ি থেকে গত সপ্তাহে এভাবেই উদ্ধার করা হল ট্রেসি সোরেলসকে। পঙ্গু এবং বয়স্কদের অবহেলার আইনে ট্রেসির স্বামী ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জর্জিয়ার গিনেট কাউন্টি পুলিশ জানায়, আটলান্টা থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে বুফোর্ডে পঞ্চাশোর্ধ ট্রেসির বাড়ি। দমকল বাহিনীর একটি ফোনের মাধ্যমে খবর পেয়ে গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার সেখানে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল। সেখান থেকেই ট্রেসিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ট্রেসির শারীরিক অবস্থা দেখে রীতিমতো শিউরে উঠেছে পুলিশ। প্রশাসনের মতে, ট্রেসির দেখাশোনায় কোনওভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না তার স্বামী টেরি সোরেলস এবং তাদের কিশোর ছেলে ক্রিশ্চিয়ান। ওই দু’জনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় আদালত। সেই সঙ্গে ২২ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার করে জরিমানাও দিতে হবে তাদের। যদিও নিজেদের ‘দোষ’ স্বীকার করতে রাজি নন তারা। ১৮ বছরের ক্রিশ্চিয়ান জানিয়েছেন, বছর দুয়েক ধরেই শয্যাশায়ী তার মা ট্রেসি। দিনকে দিন তার মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। ক্রিশ্চিয়ানের দাবি, বাবা এবং সে- দুজনেই যথাসম্ভব মায়ের দেখাশোনা করেন। তবে কারও কোনও চাকরি না থাকায় খুবই কষ্ট করে সংসার চালাতে হয়। কারণ যা-ই হোক না কেন, স্থানীয় প্রশাসনের মতে, অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থায় ছিলেন ট্রেসি। কতটা শোচনীয়? উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য তার রিপোর্টে লিখেছেন, ‘বাড়ির দরজা খুলে ঘরে ঢুকতেই প্রথমেই নাকে এল মানুষের মল আর আবর্জনার তীব্র গন্ধ। লিভিং রুমেই রাখা ছিল রোগীর বিছানা। প্লাস্টিকে মোড়া। তাতে মল আর কোনও অজানা তরলে ভরা। কিচেন পর্যন্ত গোটা মেঝেতে চড়ানো আবর্জনার স্তূপ। কিচেনের ভেতরটাও নোংরা আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। প্রায় ছাদ পর্যন্ত উঠে গিয়েছে আবর্জনা। বাথরুমেও ছড়ানো রয়েছে নোংরা। প্রতিটি ঘরের দেয়াল বেয়ে অসংখ্য আরশোলা ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাবার ঘরে ঢুকে দেখা গেল, প্রায় দুই ফুট লম্বা একটি এনার্জি ড্রিঙ্কসের ক্যান রয়েছে। সে ঘরের ভিতরটাও ডুবে রয়েছে আবর্জনায়। বিছানায় কোন চাদর নেই। ছেলে ক্রিশ্চিয়ানের ঘরেরও প্রায় একই অবস্থা। একটা টেবল আর কম্পিউটার রয়েছে বটে। কিন্তু টেবলের খানিকটা বাদ দিয়ে সেখানেও ভরে উঠেছে নোংরায়।’ উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, ট্রেসির পায়ের অংশে পচনের ফলে তা পুরোপুরি কালো হয়ে গিয়েছে। উদ্ধারের সময় দেখা গিয়েছে, তাতে আরশোলা আর পোকামাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমনকী, তার পায়ের মাংস খেতে শুরু করেছে পোকারা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও ট্রেসি কত দিন বাঁচবেন, তা নিয়ে সন্দিহান চিকিৎসকরা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 + 20 =