এক বছর সময় পেল বিজিএমইএ মুচলেকা দিয়ে ভবন ভাঙ্গতে

0
3849

বিজিএমইএ’র দেওয়া মুচলেকা গ্রহণ করে সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃাত্বাধীন অাপিল বেঞ্চ এ সময় মঞ্জুর করেন। আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মঞ্জিল মোরসেদ। এর অাগে ভবন ভাঙ্গতে একবছর সময় চেয়ে অাবেদন করেছিল বিজিএমইএ। কিন্তু অার সময় চাওয়া হবেনা এ মর্মে অাদালত কর্তৃপক্ষকে মুচলেকা দিতে বলেন। তবে এই মুচলেকা অস্পষ্ট হওয়ায় বিজিএমইএর আইনজীবী আবেদনটি (মুচলেকা) সংশোধন করে দিতে আদালতের কাছে সময় চান। আদালত বিষয়টি আজ সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেন।

এই সময়ের মধ্যে বিজিএমইএকে সংশোধিত মুচলেকা জমা দিতে হবে। অাজ অাবারও নির্দেশমতো সঠিকভাবে মুচলেকা দিলে অাদালত তা গ্রহণ করে সময় মঞ্জুর করেন। এর আগে  ভবন ভাঙ্গতে একাধিকবার সময় নিয়েছে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। ১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ০৮ অক্টোবর ভবনটির উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে এটি বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএর ভবন ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে বিজিএমইএকে নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি ভাঙ্গতে বলা হয়। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল, সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে আদালত বলেন, ভবনটির সৌন্দর্য ও মহিমান্বিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। এই ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট করা না হলে এটা শুধু হাতিরঝিল নয়, গোটা ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে। রায়ে আদালত বলেন, বিজিএমইএ যাদের কাছে ওই ভবনের ফ্ল্যাটের অংশ বিক্রি করেছে, তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। দাবি করার এক বছরের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয় রায়ে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, বিজিএমইএ ভবনের সঙ্গে তাদের চুক্তি ছিল বেআইনি। বিজিএমইএর ওই ভবন নির্মাণ বা ভবনের অংশ কারো কাছে বিক্রি করার কোনো অধিকার ছিল না। ওই জমির ওপর বিজিএমইএর মালিকানা নেই বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়। ভবনটি বেআইনিভাবে নির্মাণ করায় তারা কোনো সুদ পাওয়ার দাবিদার নয় বলে মত দেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন বিজিএমইএ সভাপতি। লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২ জুন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। এ আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে যা গত বছরের ৫ মার্চ খারিজ হয়। পাশাপাশি কার্যালয় সরাতে কতদিন সময় লাগবে তা জানিয়ে বিজিএমইএর আইনজীবীকে আবেদন দিতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় তিন বছর সময় চেয়ে আবেদন করে বিজিএমইএ, যার শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১২ মার্চ আপিল বিভাগ ছয় মাস সময় দেন। এরপর থেকেই আবেদন করে সময় বৃদ্ধি করছে বিজিএমইএ। গত বছরের ৭ অক্টোবর ভবন ভাঙ্গতে আরো সাত মাস সময় দিয়েছে আপিল বিভাগ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহহাব মিঞা বলেন, ভবন ভাঙ্গার এটাই শেষ সুযোগ। ভবন ভাঙাতে আরও এক বছর সময় চেয়ে বিজিএমই এর করা আবেদনের শুনানি শেষে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিসহ পাঁচ বিচারকের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

18 − 7 =