বাজারে পরিশোধিত পাম, সুপার ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে চলছে কারসাজি। পাইকারে সয়াবিনের মূল্য স্বাভাবিক থাকলেও খুচরাতে বেশি দামে বিক্রি করছে ব্যবসায়িরা। রোববার প্রতি কেজি পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। কয়েকদিন আগেও এই তেলের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের সয়াবিন বোতল ৫ লিটার বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়। এছাড়া পুষ্টি, তীর, মিজান ও ফ্রেশ ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে।
রোববার প্রতি লিটার সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১০৯ টাকা পর্যন্ত। আর টিনের ৫ লিটার বিক্রি হয়েছে ৫৩০টাকায়। যা গত সপ্তাহে বোতলজাত প্রতি লিটার ১০৫ টাকা এবং প্রতি ৫ লিটারের বোতল ৫৩০ থেকে ৪০ টাকা পাওয়া যেত। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে কেন এই বাড়তি দাম, তার উত্তর অনেকটাই জানেন না সংশ্লিষ্টরা। ভোক্তা ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন বাজারে তেলের সরবরাহ সঙ্কটের কারণ দেখিয়ে অত্যাবশ্যক এই নিত্যপণ্যেটি বাড়তিতে বিক্রি করছে। রমজানে সয়াবিন ও পাম তেলের চাহিদা অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা তেলের মজুদ করছেন বলেও অভিযোগ ভোক্তাদের। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। অন্যদিকে পাইকারি ও সরবরাহকারীরা বলছেন, ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও মিলমালিকরা বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় বাড়তিতে বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়িরা। তেলের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিলমালিকরা চাহিদার মাত্র ১০ থেকে ১২ শতাংশ তেল সরবরাহ করছেন। যা সরবরাহ হচ্ছে তাতে ২-৩ সপ্তাহ আগে টাকা পরিশোধ করেও তা মিলছে না। মৌলভিবাজারের পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স জব্বার স্টোরের ব্যবস্থাপক ইয়াসিন মিয়া বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে এক ড্রাম (১৮৬ কেজি) পাম তেলের দাম বেড়েছিল ৮৫০ টাকা পর্যন্তু। তবে রোববার তা একটু কমেছে। খোলা ও বোতলজাত সয়াবিনের দাম বাড়েনি জানিয়ে তিনি খুচরা বাজারের বিষয়ে বলেন, বিভিন্ন ব্রান্ডের কোম্পানিগুলো এতোদিন খুচরা ব্যবসায়িদের যেসব অফার দিয়ে আসছিল সম্প্রতি তা বন্ধ করে দেয়ার সুযোগ নিয়ে সয়াবিনের দাম বাড়িয়েছে খুচরা ব্যবসায়িরা। ইয়াসিন মিয়া বলেন, নগদ টাকা দিয়েও আমদানিকারক ও মিল মালিকদের কাছ থেকে তারা চাহিদা মতো তেল পাচ্ছেন না। তারা বলছেন, আমদানিতে সমস্যা থাকায় মিলে তেল নেই। এ কারণে সরবরাহের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। তবে সরবরাহ দু-একদিনের মধ্যে বাড়বে এবং দামও কমবে বলে জানান তিনি। সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপক (বিপণন) অমল বাবু জানান, কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়নি। মিলগেটে আগের দামেই ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে পাইকারি পর্যায়ে হঠাৎ করে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়া পুরোপুরি অযৌক্তিক।