বাঁশখালীর বাহারচরা ইউপি চেয়ারম্যান তাজুলের বিরোদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

0
1529

তাসমিয়া জেসমিন:-

চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার ০৪নং বাহারচরা ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, বাঁশখালী এমপি মোস্তাফিজুর রহমান এর ব্যক্তিগত সচিব(পিএস), বাঁশখালী আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি জনাব তাজুল ইসলামের বিরোদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম আর দূর্নীতির খবর পাওয়া গেছে। বিগত ২৫-০৪-২০১৭ ইংরেজী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বেড়িবাঁধ নির্মাণে দূর্নীতি, ইউনিয়ন পরিষদস্থ মাঠের গাছ কর্তবে নিরব ভূমিকা পালন,

কর্মসৃজন কাজে মানুষের পরিবর্তে এস্কেলেটর ব্যবহার, শ্রমজীবী মানুষ সাজিয়ে টিপসই জালিয়াতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানাবিধ দূর্নীতি কাজের সত্যতা পাওয়া গেছে। #১ম_অভিযোগঃ মাননীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান (এমপি) নির্বাচিত হওয়ার পর পর বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণের আবেদন জানালে পর্যায়ক্রমে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে তার কাজ শুরু করা হয়। শুরু হয় নিম্নমানের বালি,পাথর,লবণাক্ত পানি দিয়ে। তার কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন বিভিন্ন নেতার চাঁদাবাজি’র ভাগ প্রদানে ধার্যকৃত বরাদ্দের মধ্যে পরিপূর্ণ উপকরণ সামগ্রী ব্যবহার করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দূর্নীতির কথা এলাকার লোকচুক্ষের নজর কাঠলে এবং এমপি মহোদয় পর্যন্ত পৌঁছালে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে তদারককারী একটি দল এসে দূর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেলে সাময়িক কাজ বন্ধ রাখেন। পরবর্তীতে ভালো উপধান সামগ্রী ব্যবহারের আশ্বাস দিয়ে কাজ শুরু করলেও আদৌ পর্যন্ত সঠিক কোন পরিপূর্ণ ব্লক তৈরি করা হচ্ছে না। ফলে বানানোর পর পরই ফাটল ধরছে ব্লক। তাই হতাশ এলাকাবাসী। এইবিষয় নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা করুন ভাষায় জানান এমপি মহোদয় বরাদ্দ নিয়ে আসলেও তাহার পিএস তাজুলের কথামত বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। এইখানে সাগরের করাল গ্রাস থেকে এলাকা রক্ষা করার কোন মানবতায় কতৃপক্ষের নেই বলেই ইচ্ছামাফিক কাজ ও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে যাচ্ছে। তাই এলাকাবাসীর দূঃখই যেন রয়ে যাবে আজীবন। #২য়_অভিযোগ সরকার ইউনিয়নভিত্তিক মাটিকাটার কাজে মানুষ ব্যবহার করে (কর্মসৃজন) নামের ৪লক্ষ টাকার একটি প্রজেক্ট দেন। যেখানে মাটিকাটার কাজে থাকবে স্থানীয় গরীব, হতদরিদ্র শ্রমজীবী ব্যক্তি। সেখানে ছিল এস্কেলেটর ও ট্রাক। যারা পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করার সুযোগ পাবে। প্রতিটি শ্রমজীবী ব্যক্তি নিজে টাকা উত্তেলন করার সুবিধার্থে বিনা পয়সায় ব্যাংক একাউন্ট খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এইদিকে প্রতিটি ইউনিয়নের ন্যায় ৪নং বাহারচরা ইউনিয়নে সে প্রজেক্ট আসলে অত্র ইউপি’র চেয়ারম্যান জনাব তাজুল ইসলাম মানুষের পরিবর্তে এস্কেলেটর ও ট্রাক ব্যবহার করে মাটিকাটিয়ে পি আই ও এর সহায়তা নিয়ে জাল সাক্ষর (টিপসই) বানিয়ে ব্যাংক থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তেলন করে নিজের পকেটে ডুকাচ্ছে। সে টাকা থেকে কমিশন হিসাবে টি পিও অফিসারকেও দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তা নিয়ে এলাকার কৃষক-শ্রমিক পেশাজীবীদের সাথে কথা বললে তারা অবদান’কে জানান সরকার আমাদের গরীবের জন্য কাজের বিনিময়ে টাকা বরাদ্দ দিলেও মাননীয় চেয়ারম্যান অল্প সময়ে রাতের অন্ধকারে এস্কেলেটর ও ট্রাকের মাধ্যমে মাটিকাটার কাজ সম্পূর্ণ করে কয়েকজন মানুষকে শ্রমিক বানিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তেলন করে। এবিষয় নিয়ে মতামত জানার জন্য চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে কয়েকবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। #৩য়_অভিযোগঃ সাম্প্রতি বাহারচরা ইউনিয়ন পরিষদ মাঠের চারপাশে থাকা সরকারী বড় বড় লেইন্ট্রি গাছ গুলি কর্তন করে স্থানীয় ব্যক্তিরা। কেটে পরেরদিন রাতের অন্ধকারে অন্যত্রে সরিয়ে নেয়। গাছ কর্তনকারীর মধ্যে রয়েছে জসিম উদ্দীন,লেদু মিয়া, নুর মোহাম্মদ, বাইশ্যা মিয়া। উভয়ই ইলশা গ্রামের বাসিন্দা। পরে এলাকাবাসীর মধ্যে কয়েকজন শিক্ষিত ব্যক্তি সরকারী গাছ কর্তন বন্ধ করে বিচার চেয়ে উপজেলার নির্বাহী অফিসার(টিএনও) বরাবর দরখাস্ত করলে উপজেলা অফিসার তা অত্র ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জনাব তাজুল ইসলাম’কে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। নির্দেশনামা পাবার সাপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আদৌ তা তদন্ত করার নিশানা পাওয়া যায়নি। এবিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য জানান, গাছ কর্তনকারী স্থানীয় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় চেয়ারম্যান তার থেকে টাকা নিয়ে এবিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদস্থ গাছ কর্তন’কে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর কাছে বয়ে চলছে তুমুল সমালোচনার ঝড়। তোপের মুখে পড়েছে ইউপি চেয়ারম্যান। এলাকাবাসী জাতীয় অবদান’কে জানান, গাছ গুলি ইউপি পরিষদের পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে সৌন্দর্য বর্ধনের ভূমিকা পালন করছিল। কোন সাবেক চেয়ারম্যান ক্ষমতায় থাকাকালীন কেউ গাছ কেটে ক্ষতিসাধন করার সাহস পাইনি। আজ ইউপি চেয়ারম্যানের অবহেলায় ও কালো হাত ব্যবহারে টাকা লেনদেন করে নিরব ভূমিকা পালন করছে ইউপি চেয়ারম্যান জনাব তাজুল ইসলাম। বিভিন্ন দূর্নীতি আর অনিয়মের প্রেক্ষিতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে জানান ইউপি চেয়ারম্যান একজন অভিভাবক হিসাবে সব দুঃখ দূদর্শা লাগবের চেস্টা না করে ভক্ষক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। ভক্ষকের হাতে যখন ইউনিয়ন, ঘুমিয়ে পড়তে যাচ্ছে উন্নয়ন। অনিয়ম আর অভিযোগের কথা জানতে চাওয়ার প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়া হলে সেখানে চেয়ারম্যান’কে পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × five =