এবার সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত করা হলো। ব্যাংক বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদগন বলছেন এতে ব্যাংকিং খাতকে আরেক দফা গর্তের ভেতর ফেলে দেয়া হলো। তারা বলছেন সরকারি আমানতের ২৫ শতাংশ খাওয়া শেষ। এবার ৫০ শতাংশ। এরপর কত? সীমাহীন দুর্নীতি আর ঋন অনিয়মের কারনে বাড়ছে খোলাপিদের সংখ্যা। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে দেশের সরকারি বেসরকারি ব্যংকগুলো থেকে কোটি কোটি টাকা ঋন নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না এমন খেলাপির সংখ্যা কয়েকশত অতিক্রম করেছে। দলীয় পরিচয়ে রাতারাতি বিশালাকারের ঋন দেয়া, ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ঋন নেয়া, এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে তা পরিশোধ না করা ইত্যাদি কারনে খেলাপিদের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে।
অনেক অসৎ গ্রাহক ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গোপনে বিদেশে পালিয়ে গেছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির সময় জনতা ব্যাংক শেরাটন শাখা থেকে রাতের বেলায় বস্তাভর্তি কোটি কোটি টাকা বের করে নেয়া হয়েছে। বেসিক ব্যাংক থেকে কে কত টাকা চুরি করেছে তার হিসেব খোদ ব্যাংকটির কাছেই নেই। যে ফারমার্স ব্যাংক কেলঙ্কারির জন্য সরকারি আমানত তুলে নেয়া হয়েছে সেই কেলেঙ্কারির হোতাদের বিচারের আওতায় না এনে উল্টো দেয়া হবে ৫০ শতাংশ। সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার এমন সিদ্ধান্তের ব্যপারে অর্থিক খাতের বিশ্লেষকগণ বলছেন এতে রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে লুটপাটকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন এর মাধ্যমে জনগণের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার রাস্তা খোলা হয়েছে। বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর আজও বিচার হলো না। এবার দলীয় লোকদের মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা লুটের একটি নীল নকশা করা হলো। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলছেন হঠাৎ করে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সদ্ধিান্তে ব্যাংকের সংকট আরও বাড়ার অশঙ্কা রয়েছে। এদিকে সরকার ব্যাংকে পরিবারতন্ত্র চালু করে একই পরিবারের চারজন ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবে ও তিন বছর করে তিন টার্মে নয় বছর পরিচালক থাকতে পারবে এম ভায়বহ সিদ্ধান্তে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গেছে। এই ঝড়ে সরকারের ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নামক গাছটির একটি পাতাও ঝড়েনি। এভাবে দেখা যায় ব্যাংক ব্যবস্থাকে গলা টিপে মেরে দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তিকে স্তব্ধ করে দেয়া হচ্ছে যা আমাদের জন্য খুব শীঘ্রই দূর্যোগ বয়ে আনবে।