গোসলের সময় শিশুটির দেহে প্রাণ থাকার বিষয়টি টের পান

0
1820

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এক জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে। কতৃপক্ষ কতৃক মৃত ঘোষণার পর আজিমপুর কবরস্থানে গোসল করানোর সময় ‘নড়ে ওঠায়’ তাকে নিয়ে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেছে তার পরিবার। শিশু হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. আবু তৈয়ব বলেন, শিশুটিকে আইসিইউতে রেখে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার অবস্থা ভালো না। চিকিৎসকরা তাকে সুস্থ করে তুলতে চেষ্টা করবেন।

শিশুটির বাবা মিনহাজ উদ্দিন সাভারের নয়াডিঙ্গির একটি পোশাক কারখানায় আয়রনম্যান পদে কাজ করেন। আর মা শারমিন আক্তার এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। জীবিত শিশুকে মৃত ঘোষণার অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ কান্তি পালকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বাচ্চু মিয়া জানান, শনিবার সাভার থেকে এসে গাইনি বিভাগের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন শারমিন আক্তার। সোমবার সকালে তিনি কন্যা সন্তান প্রসব করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর শিশুটিকে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আজিমপুর কবরস্থানে। সেখানে গোসলের সময় শিশুটির দেহে প্রাণ থাকার বিষয়টি টের পান ঢাকা সিটি করপোরেশনের ড্রেসার জেসমিন বেগম। তিনি জানান, দাফনের আগে গোসল দেওয়ার সময় বাচ্চাটা নড়াচড়া শুরু করে। তখনই বিষয়টা আমি ওর অভিভাবকদের জানাই। তারা ওই বাচ্চাকে নিয়ে শিশু হাসপাতালে চলে যায়। শিশু হাসপাতালের উপ পরিচালক আবু তৈয়ব বলেন, শিশুটির মায়ের রক্তশূন্যতা ছিল। সাত মাসে তিনি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয়। আমরা মনে করছি, সকালে শিশুটির হার্ট কাজ করছিল না। তাকে কবরস্থানে নেওয়ার পর হার্ট সামান্য কাজ করা শুরু করে। এরপর তার পরিবারের সদস্যরা তাকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, খবর শুনে আমরা হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। শারমিন নামে একজন এখানে ২৭ সপ্তাহের প্রেগনেন্সি নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার স্টিলবর্ন বেবি (মৃত শিশু) হয়েছে। তার শরীর এখনো ভালো না। এখনো সে ঢাকা মেডিকেলে আছে। বাচ্চাটি এই মহিলারই কিনা সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। তিনি বলেন, শিশুটিকে মৃত বলার পর জীবিত হওয়ার ঘটনা সত্যিই ঘটে থাকলে তা তদন্ত করে দেখা হবে। সেজন্য ডিএনএ টেস্টসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে। তারপরও অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাটি যদি ঘটেও থাকে, সেটার বিষয়ে তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটি তদন্ত কমিটিও করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

12 − 4 =